পুলিশ রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গুরুতর আহতরা ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) বেলা ১২টার থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত উপজেলা বিআরডিবি কার্যালয় সম্মুখে দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহবুব আলম সোহাগ বাংলানিউজকে বলেন, সকালে বিআরডিবি কার্যালয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা শুরু হয়। সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল খায়ের পাটওয়ারী, সাধারণ সম্পাদক আবু সাহেদ সরকার, সাবেক সংসদ সদস্য ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জাহিদুল ইসলাম রোমানসহ উপজেলা নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, সভার শেষ পর্যায়ে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জাহিদুর রহমান বক্তব্য দিচ্ছিল। এসময় চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য শফিকুর রহমানের সমর্থকরা একটি মিছিল নিয়ে বর্ধিতসভায় প্রবেশ করে সবাইকে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। একপর্যায়ে বর্ধিতসভা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এসময় সাবেক সংসদ সদস্য শামসুল হক ভূঁইয়ার গাড়িসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে বর্তমান সংসদ সদস্য শফিকুর রহমানের সমর্থকরা।
ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উভয় পক্ষের সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রথমে টিআর সেল নিক্ষেপ করা হয়। কিন্তু উভয় পক্ষ এসময় গাড়ি ভাঙচুর শরু এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় লিপ্ত হলে পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।
পুলিশের গুলিতে আহতরা হলেন- উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ, জেলা পরিষদের সদস্য সাইফুল ইসলাম রিপন, ছাত্রলীগ নেতা রিপন, অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম, শরিফসহ ১০ জন। গুলিবিদ্ধ আহতদের ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির সোহাগের দাবি পুলিশ কারও ইন্ধনে বর্ধিতসভায় গুলি চালিয়েছে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বর্তমান সংসদ সদস্য শফিকুর রহমানের সমর্থক জানান, ‘বর্ধিত সভায় বর্তমান সংসদ সদস্য শফিকুর রহমানকে দাওয়াত না দেওয়ায় তার সমর্থকরা বর্ধিতসভায় বাধা দেয়। এতে সাবেক সংসদ সদস্য ড. শামসুল হক ভূঁইয়ার কর্মী সমর্থকরা তাদের ওপর হামলা চালায়। ’
চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলালের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘সংঘর্ষের কারণ আমার জানা নেই। তবে আজকে (মঙ্গলবার) বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ’
সাবেক সংসদ সদস্য ড. মোহাম্মদ শামসুল হক ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘যে ঘটনাটি ঘটেছে তা আওয়ামী লীগের জন্য লজ্জাজনক ব্যাপার। এর চাইতে বেশি কিছু আমি বলতে পারবো না।
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) জিহাদুল কবির বাংলানিউজকে বলেন, ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা চলছিলো। সভায় সাংসদ শফিকুর রহমানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এ কারণে তার সমর্থকরা সভা স্থলে গিয়ে মারামারিতে লিপ্ত হয়।
পুলিশ উভয় পক্ষকে নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। বর্তমানে অবস্থা পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেও জানান পুলিশের এ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৯
জিপি
