সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিদেশিদের কাছে বিএনপি যতই ধর্না দিচ্ছে বিষয়টা ততই স্পষ্ট হয়ে উঠছে যে, দেশের মানুষের প্রতি তাদের আস্থা কম।
‘যদি দেশের জনগণের প্রতি তাদের আস্থা থাকতো তাহলে বিদেশিদের কাছে এত ঘন ঘন ধর্না দেওয়া এবং নালিশ করা থেকে বিএনপি বিরত থাকতো। ’
পড়ুন>> জুনিয়র টাইগারদের গণসংবর্ধনা দেওয়া হবে: কাদের
তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে সভা-সমাবেশ করে (বিএনপি) জনগণের কাছে নালিশ করতে পারে। বিচারক হতে পারে আমাদের দেশের জনগণ। তারাই ভোট দেবে, আন্দোলন করবে, তারা রেসপন্স না করলে আন্দোলন হবে না, তারা ভোট না দিলে আমরা জিততে পারবো না- এটাই বাস্তবতা।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনীতিতে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ থাকবেই। তবে রাজনীতির একটি ভাষা রয়েছে। আমাদের রাজনীতিটা যেন ‘ডিভাইসিভ অ্যান্ড পোলারাইজড’ না হয়। আমরা খুব বেশি পোলারাইজড হয়ে যাচ্ছি, খুব বেশি ডিভাইসিভ হয়ে যাচ্ছি। সেই মনোভাবটা যদি আমরা পরিহার করতে পারি। তাহলে এখানে গণতন্ত্রের বিউটি বজায় রাখতে পারবো।
তিনি বলেন, আমরা প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করি আক্রমণের ভাষার মধ্যেও একটা শালীনতা থাকতে হবে। যেমন ড. কামাল হোসেন সাহেব সম্প্রতি বক্তব্য দিতে গিয়ে খেই হারিয়ে তিনি হঠাৎ বলে ফেললেন- এই সরকারকে লাথি মেরে নামাবেন। আবার লাথি মেরে এই সরকারকে বিদেশে পাঠিয়ে দেবেন। দুটি শব্দ উনি ব্যবহার করেছেন। এদুটি গর্হিত ভাষা। এটা রাজনীতির জন্য শুভ লক্ষণ নয়।
‘সৌজন্যবোধ, সৌন্দর্যবোধ এবং রাজনীতিটাকে অশালীন পরিমার্যিত ভাষায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে। আমরা যারা রাজনীতি করি প্রতিপক্ষকে আক্রমণে যৌক্তিক ভাষা ব্যবহার করি। ব্যক্তিগত ও অশালীন বক্তব্য থেকে বিরত থাকলে আমার মনে হয় আমরাও বিভেদের মধ্যে মতান্তর থাকবে, তবে মতান্তরের যেন মনান্তরে পরিণত না হয়। ’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মনান্তর রাজনীতিতে থাকবেই, নানা মত, নানা পথ থাকবে। কিন্তু মতান্তর আর মনান্তর এক জিনিস নয়। মনান্তরটা যদি আমরা পরিহার করতে পারি তাহলে রাজনীতির পরিবেশটা আরো সুন্দর হবে। গণতন্ত্রের জন্য সেটা শুভ হবে।
গণসংবর্ধনায় সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ থাকবে কিনা-এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা তো মুজিববর্ষের ক্ষণগণনায় সব রাজনৈতিক দলকে দাওয়াত দিয়েছি। কিন্তু কেউ কেউ এসেছেন আবার অনেকেই আসেননি। তবে ড. কামাল হোসেন, কাদের সিদ্দিকীসহ অনেকেই এসেছেন। এতে কেউ উপস্থিত হয়ে বিএনপিও তার শুভবোধের পরিচয় দিতে পারতো।
‘এ ধরনের ঘটনাগুলো রাজনীতিতে ওয়ার্কিং আন্ডারস্ট্যান্ডিংটা বজায় রাখতে পারে। যেমন খালেদা জিয়ার সন্তান মারা যাবার পর প্রধানমন্ত্রী শোকাহত একজন মাকে সান্ত্বনা দিতে যান, কিন্তু গেট খোলা হলো না। এভাবে তো আমরা নিজেদের ও কর্মক্ষেত্রে অলম্বনীয় দেয়াল তুলে ফেলেছি। ’
সড়ক পরিবহন ও ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা এই দেয়াল তোলার ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো কাজ করেছে তা পরিহার করতে পারি। রাজনীতিতে সৌজন্যতা হারিয়ে যাচ্ছে সেটা দুঃখের বিষয়। রাজনীতিতে সৌজন্যবোধ থাকা উচিৎ।
‘আমরা এখন সবকিছুতেই মানি না, মানবো না। নির্বাচনের ফলাফল মানি না, আইন-কানুন মানি না, নিজেদের পক্ষে না গেলে বিচার মানি না। এই যে ‘মানি না, মানবো না’ সংস্কতি রয়েছে, সেখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা উচিৎ,’ যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২০
জিসিজি/এমএ