শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বাংলানিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে একথা বলেন আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
চট্টগ্রামের সন্তান ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বাংলানিউজকে বলেন, চট্টগ্রামের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর যে বিশেষ সফটকর্নার রয়েছে তার প্রতিদান হিসেবে যদি চট্টগ্রামের মানুষ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করে তাহলে আমি মনে করি চট্টগ্রামের মানুষ লাভবান হবে।
‘চট্টগ্রামের অর্থনীতি, উন্নয়ন সে বিষয়ে জাতীয়ভাবে একটা নীতি থাকে এর বাইরেও তিনি (প্রধানমন্ত্রী) ব্যক্তিগতভাবে বিষয়গুলো দেখভাল করেন। ’
তিনি বলেন, এখানে আওয়ামী লীগের একজন যদি মেয়র হয় তাহলে চট্টগ্রামের যে সব উন্নয়ন প্রকল্প রয়েছে, চলমান প্রকল্পগুলো আরও গতিশীল হবে। প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের সুপার ভিশন থাকবে।
চট্টগ্রামের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতা কথা তুলে ধরে ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী নিজে উদ্যোগ নিয়ে চট্টগ্রামে আরও বড় বড় মেগা প্রকল্প নিয়েছেন। যাতে আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে চট্টগ্রাম আরও বেশি কনট্রিবিউট করতে পারে, চট্টগ্রামের মানুষের যাতে কর্মসংস্থান আরও বাড়ে। এর বাইরেও প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য অনেক প্রকল্প নিয়েছেন।
চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন স্থানীয় সরকারের নির্বাচন হলেও এটি জাতীয় নির্বাচনের মতো মর্যাদা পাচ্ছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ দফতর সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগের কাছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নগরের জাতীয়, আন্তর্জাতিক ও দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।
চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী অবস্থানের কথা জানিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। ওনার ভাবমূর্তি ও জনপ্রিয়তার কারণে আমাদের দলেরও একটি সুসংহত অবস্থান রয়েছে।
‘চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ অত্যন্ত শক্তিশালী। শুধু আওয়ামী লীগ নয়, সহযোগী সংগঠনগুলোরও ওয়ার্ড লেভেল পর্যন্ত কমিটি রয়েছে। ’
চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও স্বতঃস্ফূর্ত হবে আশা প্রকাশ করে ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, আমি মনে করি সেখানে আমাদের নেতা-কর্মী, সাধারণ ভোটার সবাই ভোট দেবেন এবং ভোটের টার্ন আউট ঢাকার চেয়ে দ্বিগুণ হতে পারে।
‘আশা করি চট্টগ্রামে ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে এবং তাদের যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করবেন। ’
ঢাকায় ভোট কম পড়ার বিষয়টি আমলে নিয়ে চট্টগ্রামে কেন্দ্রে ভোটার আনতে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা আরও বেশি সক্রিয় থাকবে ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ঢাকায় টার্ন আউট একটু কম ছিল, তার কারণ, বিশ্লেষণ আমরা দেখেছি পত্রপত্রিকায়। আমাদের দল থেকেও এগুলো আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি চট্টগ্রামে এর ব্যত্যয় ঘটবে।
চট্টগ্রামে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন আশা করে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, আমি বিশ্বাস করি চট্টগ্রামের মানুষ রাজনৈতিক সচেতন, তাদের চেতনা অত্যন্ত সচেতন, তারা অবশ্যই ভোট সেন্টারে আসবেন। চট্টগ্রামে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে।
বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ঐতিহ্যগতভাবে চট্টগ্রামের মানুষের রাজনৈতিক চেতনা খুব শাণিত, খুব তীব্র। ঐতিহ্যগতভাবে চট্টগ্রামের মানুষ বিদ্রোহী, বিপ্লবী চেতনার মানুষ। রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত সচেতন। আমি মনে করি চট্টগ্রামের ভোটের টার্নআউট বেশি হবে।
ভোটের টার্ন আউটের সঙ্গে নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করার কোনো সুযোগ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, এখানে ভোট কত পারসেন্ট হয়েছে তারচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভোট কতটা গ্রহণযোগ্য হয়েছে, কতটা সুষ্ঠু হয়েছে।
ইভিএমে নির্বাচনের স্বচ্ছতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইভিএমে চট্টগ্রামে ভোট হবে। ঢাকার ভোটার হিসেবে আমি এবার শান্তিনগরের একটি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট দিয়েছি। ইভিএমে মেশিনই ভোটারকে চিনে নেয়, সিস্টেমটাই এরকম। এখানে ভোটে কারচুপি করা, একজনের ভোট অন্য জন দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় গণভবনে দলটির স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে কে মনোনয়ন পাবেন তা চূড়ান্ত করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২০
এমইউএম/এএ