ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

চিনিকল খুলে দেওয়ার দাবি বিএনপি মহাসচিবের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০২০
চিনিকল খুলে দেওয়ার দাবি বিএনপি মহাসচিবের বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

ঢাকা: দেশের ছয়টি চিনিকল বন্ধ ও তিনটি বন্ধের নোটিশ দেওয়ায় তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (৭ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, চিনিকল বন্ধে সরকারের আকস্মিক সিদ্ধান্তে লাখ লাখ আখচাষি এবং হাজারো শ্রমিক-কর্মচারী চরম বিপাকে পড়েছেন।

এতে সৃষ্টি হয়েছে হতাশা এবং অনিশ্চয়তা। বেকার হবে শ্রমিক কর্মচারীরা। সরকারের এ অমানবিক ও অদূরদর্শী সিদ্ধান্তে একদিকে আখচাষিসহ চিনি কলে খেটে খাওয়া মানুষের মধ্যে হাহাকার সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে বাজারে চিনির সংকটও সৃষ্টি হবে।

বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ষড়যন্ত্রমূলকভাবে চিনিকলগুলোকে অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে সরকার সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলে মনে হচ্ছে। চিনিকলসমূহে পরিচালনা পরিষদে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য (এমপি) ও নেতাকর্মীদের সংযুক্ত করে তাদের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে লুটপাট ও দুর্নীতি করা হচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা এসব চিনিকলগুলোতে চিনি, চিটা গুড় এবং যন্ত্রপাতি বিক্রয়ের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করে কম মূল্যে তারা নিজেরাই ক্রয় করে নিচ্ছে। চিনিকলগুলোতে ইচ্ছে মতো দলীয় লোকদের মাস্টাররোলে চাকরির নামে কোনো কাজ না করিয়ে বেতন-ভাতা দিচ্ছে। এর ফলে ব্যয় বেড়েছে। অন্যদিকে চিনির কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ভারত থেকে নিন্মমানের চিনি আমদানি করে বাজারে উচ্চ মূল্যে বিক্রির সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জনগণ।

তিনি বলেন, আখ চাষিরা আখ উৎপাদনে নিরুৎসাহিত হবে। এ চিনিকল কেন্দ্রিক অঞ্চলগুলোতে সাধারণ মানুষসহ কৃষকের প্রধান শষ্য আখ। আখ চাষের এলাকাগুলোতে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড এ চিনিকলগুলোকে কেন্দ্র করেই পরিচালিত হয়ে থাকে। সরকারের এ ভ্রান্ত সিদ্ধান্ত তৃণমূলের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে। আখ চাষের এলাকাগুলোতে বর্তমানে লাখ লাখ একর জমিতে আখ দন্ডায়মান। ঠিক যেই মুহূর্তে কৃষকরা আখ কাটবে, সেই মুহূর্তে সরকারের এ হটকারী সিদ্ধান্তে কৃষকরা দিশেহারা। উৎপাদিত আখ নিয়ে কৃষকরা কি করবে, তা নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায় নির্ঘুম রাত পার করছেন। যদিও সরকার বলছে, এ আখগুলো পার্শবর্তী চিনিকলে ক্রয় করা হবে, কিন্তু সেই চিনিকলগুলো অনেক দূরে হওয়ায় পরিবহনে যে খরচ লাগবে তা আখের মূল্য থেকে অনেক বেশি। এ চিনিকলগুলো সুনামের সঙ্গে যুগ যুগ ধরে চিনি উৎপাদন করে এলেও বর্তমানে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়ার কারণ- চিনিকলগুলোর সব স্তরে বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর একক নিয়ন্ত্রণ, লুটপাট, দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনা। এসব কারণে অন্যান্য কলকারখানার মতো চিনিকলগুলোরও বেহাল অবস্থা।

বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, সরকার বিরোধী দল ও মতের মানুষদের নিশ্চিহ্ন করে দীর্ঘকাল ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখার চিন্তায় বিভোর থাকার কারণেই জনগণের ভালো-মন্দ দেখার সময় তাদের নেই। কিছুদিন আগেও সরকার ২৫টি পাটকল আকস্মিকভাবে বন্ধ করে দিয়ে হাজারো শ্রমিক-কর্মচারীদের বেকার করে দিয়েছে। এ সরকার ক্ষমতায় আসার আগে ঘরে ঘরে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তারা ঘরে ঘরে চাকরির পরিবর্তে ঘরে ঘরে বেকার সৃষ্টি করছে।

বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে চিনিকলগুলো খুলে দিয়ে আখমাড়াই শুরু করার জোর দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০২০
এমএইচ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।