ঢাকা: রাজধানীর পল্লবীতে চাঁদা না দেওয়ায় এক কাপড় ব্যবসায়ীসহ তিনজনকে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের এক নেতা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (১৭ তারিখ) রাত সাড়ে ৯টায় পল্লবী থানা এলাকার মিরপুর ১১ নম্বরের এভিনিউ ফাইভের হাজী হোটেলের সামনে ঘটনাটি ঘটে।
লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, আমার ছোট ভাই সৈয়দ ফয়েজের মিরপুর ১০ নম্বরে সামিয়া সিল্ক হাউজ নামে একটি বেনারসী শাড়ির দোকান রয়েছে। চলতি মাসের ১৩ তারিখ ছাত্রলীগ নেতা জয় তার সহযোগীদের নিয়ে দোকানে গিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। ফয়েজ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এতে জয়ের সঙ্গে তার বিরোধ সৃষ্টি হয়। বৃহস্পতিবার রাতে মিরপুর-১১ নম্বর এভিনিউ ফাইভ হাজী হোটেলের সামনে ফয়েজ তার বন্ধুদের নিয়ে একটি দোকানে চা পান করছিলেন। এমন সময় জয় তার বাহিনী নিয়ে ওই দোকান ঘিরে ফেলেন। এরপর তার উপর ধারালো অস্ত্র ও চাপাতি দিয়ে হামলা চালানো হয়। জয়সহ অর্ধশতাধিক সন্ত্রাসী এ হামলায় অংশ নেন। এর মধ্যে ১০ জনকে চিহ্নিত করা গেছে। ফয়েজকে এলোপাতাড়ি কোপাতে দেখে তার বন্ধু ইমরান, জুয়েলসহ আরও কয়েকজন এগিয়ে এলে তাদেরও কোপানো হয়।
তিনি আরও বলেন, আমার ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে চাপাতি দিয়ে মাথার ডান পাশ, বুকের মাঝ বরাবরসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা জয়। চাপাতির কোপে তার বুড়ো আঙ্গুল আলগা হয়ে গেছে। বাঁচার জন্য ফয়েজ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এসে উদ্ধার করেন। বর্তমানে আমার ভাইসহ তার পরিচিত ইমরান ও জুয়েলের অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন।
জানা যায়, রাজনীতির পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি হাসপাতাল) চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে কাজ করছেন ছাত্রলীগ নেতা জয়। তার বাবাও এ হাসপাতালের কর্মচারী। বাবার বদৌলতে তিনি হাসপাতালে কর্মচারী পদটি বাগিয়ে নেন। পল্লবী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি না হয়েও তিনি নিজেকে সভাপতির পরিচয় দেন। এজন্য ভিজিটিং কার্ডও করেছেন। অবশ্য আসন্ন সম্মেলনে তিনি পল্লবী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী।
ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, কামরুল হাসান জয় বর্তমানে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে মিরপুর ১১ নম্বরে একটি মারামারি ও হামলার ঘটনা সম্পর্কে আমি জানি না। এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছি।
অভিযোগের তদন্তকারী ও পল্লবী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আসাদুজ্জামান বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে যাদের কোপানো হয়েছে, তারা অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে থানায় এসেছিলেন। কোপানোর ঘটনা সত্যি। তবে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদার জন্য এ হামলা হয়েছে কিনা, তা এখনই বলতে পারছি না। অভিযোগের তদন্ত চলছে।
পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াজেদ আলী বাংলানিউজকে বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে এভিনিউ ফাইভের মারামারির ঘটনায় কেউ আমার কাছে আসেননি। যারা ঘটনার শিকার, তারা যদি আসেন, তাহলে মাামলা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২০
এমএমআই/এসআই