ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

‘আ’লীগ সরকার উন্নত বাংলাদেশের ভিত্তি স্থাপন করেছে’

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০২১
‘আ’লীগ সরকার উন্নত বাংলাদেশের ভিত্তি স্থাপন করেছে’

ঢাকা: ‘বাংলাদেশে উচ্চ প্রবৃদ্ধি, উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশে উন্নীত হওয়ার ভিত্তি আওয়ামী লীগ সরকার স্থাপন করেছে। আগামী ২-৩ বছর পরই দেশের মানুষ এর সুফল পাবে।

তবে লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে এখন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। ’

বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথাগুলো বলছিলেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। এসময় তিনি চলতি মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের দুই বছর এবং এক যুগ পূর্তিতে সরকারের বিভিন্ন সফলতার দিক তুলে ধরেন। এছাড়াও গত বছরে দেশে করোনার কারণে সৃষ্ট বিপর্যস্ত পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন। পাশাপাশি সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপে দেশের অর্থনেতিক ক্ষেত্রে সফলতার দিকগুলোও তুলে ধরেন তিনি।  

করোনার কারণে সৃষ্ট ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা সরকার চালিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে ড. রাজ্জাক বলেন, সারা মানবজাতির জন্য বিরাট অভিশাপ নিয়ে আসে করোনা ভাইরাস। সারাবিশ্বের মতো বংলাদেশকেও একটা বড় সংকট, বিপর্যয়কর পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে পার হতে হয়েছে প্রায় একটি বছর। আজও এই সংকট কাটছে না। উন্নত বিশ্বের অনেক দেশেই আবারও আক্রান্ত বাড়ছে, সমস্যা জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। বিশ্বের অন্য দেশের মতো আমাদের সরকারও চরম একটা প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে চলেছে। করোনায় আমরা অনেক মানুষকে হারিয়েছি। এদের মধ্যে অনেক প্রথিতজশা ব্যক্তিরাও মারা গেছেন। তারপরও আমি বলবো পাশ্চিমা বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ যখন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সেখানে আমাদের সরকার এই ধাক্কা মোকাবিলা করে ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

উন্নত বিশ্বের দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ মোটামুটি ভালো আছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই মেয়াদের সরকারের দ্বিতীয় বছরটি অধিকাংশ সময়ই মহামারি করোনা ভাইরাসের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পার করতে হয়েছে। এর একটি ভালো দিক আমি বলবো তা হলো প্রথম দিকে আমাদের চিকিৎসা ক্ষেত্রে কিছু সংকট, কিছু জটিলতা দেখা দিলেও এখন সেটা নেই। আমাদের ডাক্তাররা, স্বাস্থ্যকর্মীরা ম্যাজেমেন্টে ভালো করছে। আমরা আশঙ্কা করেছিলাম গরীব মানুষের ওপর করোনার কতটা আঘাত পড়বে। খেটে খাওয়া মানুষ, বস্তি এলাকার মানুষ এরা ব্যাপক হারে সংক্রমিত হলে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হতো। কিন্তু সেটা হয়নি, সে ধরনের আঘাত আসেনি। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যেখানে হিমশিম খাচ্ছে সেখানে প্রকৃতিগতভাবেই হয়তো আমাদের সেটা হয়নি। আমরা তুলনামূলকভাবে পশ্চিমা বিশ্বের ওই দেশগুলোর থেকে মোটামুটি ভালো আছি।

দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের অর্থনীতি রপ্তানিমুখী। যেসব দেশে রপ্তানি হয় তাদের চাহিদার উপর অর্থনীতি নির্ভরশীল। বিভিন্ন দেশে সেভাবে এখনও মানুষ করোনা আক্রান্ত হচ্ছে তাতে স্বাভাবিকভাবেই রপ্তানির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা থেকে যায়। তারপরও বলবো আমাদের অর্থনীতির সফলতা এখনও অনেক ভালো। সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে সার্বিকভাবে অর্থনীতি অনেক স্থিতিশীল আছে। সরকারের গত ১২ বছরের উন্নয়ন ও ধারাবাহিক সফলতার ফলে আমরা উন্নয়নশীল মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার দিকে যাচ্ছি। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য যে সূচকগুলো জরুরি সেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, আমাদের সরকার ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। মাথাপিছু আয় বাংলাদেশ ভারতকে ছাড়িয়ে গেছে। মুদ্রাস্ফীতি হয়নি। করোনার কারণে এ বছর উন্নয়ন হয়তো কম হয়েছে কিন্তু গ্রথ হয়েছে।

উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে ড. রাজ্জাক বলেন, আওয়ামী লীগের পুরো সময় কালে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ ও উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত থাকায় সামাজিক এবং ভৌত অবকাঠামোর ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সফলতা এসেছে। পদ্মাসেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মেট্রোরেল, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর, পায়রা বন্দর, মংলা বন্দরের আধুনিকায়ন প্রভৃতি নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে। সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে কৃষিতে উৎপাদন বেড়েছে। এখন সারাবছরই সবজি পাওয়া যায়, মাছের উৎপাদন বেড়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে। আগে মাংসের ঘাটতি পূরণের জন্য ভারত থেকে গরু আনা হতো, এখন গুরু আসে না। এখন দেশে গরু উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে যা দিয়ে মাংসের চাহিদা মোটানো হচ্ছে। ১০০টি ইকোনমিক জোন করা হয়েছে যেখানে শিল্পায়ন ও দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ হলে এর একটা বড় সফলতা পাওয়া যাবে। বড় বড় যেসব প্রকল্প নেওয়া হয়েছে এবং কাজ চলছে এগুলো শেষ হলে এর সুফল আসতে থাকবে। এর ফলে দ্রুত প্রবৃদ্ধি হবে, লাভ আসবে। উন্নত দেশের একটা ভিত্তি আমরা দিয়েছি। উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধশালী দেশে উন্নীত হওয়ার জন্য আমরা ভিত্তি স্থাপন করেছি। যেসব প্রকল্প নেওয়া হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে দেশি-বিদেশি শিল্পগুলো চালু হলে আগামী দুই থেকে তিন বছর পরই দেশের মানুষ এর সুফল পাবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৬১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০২১
এসকে/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।