ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

সালথায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা, ফখরুলের প্রতিবাদ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০২১
সালথায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা, ফখরুলের প্রতিবাদ

ঢাকা: ফরিদপুরের সালথায় বিএনপির নেতাকর্মীসহ নামে-বেনামে চার হাজার জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের, ২১ জন গ্রেফতার এবং হয়রানি-নির্যাতনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানান তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ফরিদপুরের সালথায় গত ৫ এপ্রিল করোনা মোকাবিলায় সরকারের অপরিকল্পিত লকডাউনের প্রেক্ষিতে স্থানীয় একজন পদস্থ সরকারি কর্মকর্তার উপস্থিতিতে তার কর্মচারী কর্তৃক একজন দোকান কর্মচারীকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়। তার প্রতিবাদে স্থানীয় জনসাধারণ ব্যাপক বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। বিক্ষোভ দমন করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বেপরোয়া গুলিবর্ষণ করে একজনকে হত্যা করে। এ ঘটনায় উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপাতে উল্টো বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মীসহ নামে-বেনামে চার হাজার সাধারণ মানুষকে আসামি করে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এটা প্রমাণ করে সরকার মহামারি করোনা মোকাবিলা নয়, বরং মিথ্যা মামলা দিয়ে রাজনৈতিকভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের দমন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

তিনি বলেন, সালথায় চার হাজার জনকে অজ্ঞাত রেখে ৮৮ জনের নাম উল্লেখ করে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ৮৮ জনের মধ্যে অধিকাংশই বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী। বর্তমানে সালথায় পুলিশি গ্রেফতারি অভিযানের কারণে সারা এলাকা মানুষশূন্য হয়ে গেছে। সেখানে ভয়, আতঙ্ক ও বিভিষিকাময় পরিবেশ বিরাজ করছে। গ্রেফতারের নামে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে নিরীহ মানুষকে হয়রানি ও নির্যাতন করা হচ্ছে। সালথার ঘটনার সাথে বিএনপি কোনোভাবে জড়িত না থাকলেও কেবলমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে, অথচ গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে, সালথার ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের উস্কানি ছিল।

বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকারের উদাসিনতা, ব্যর্থতায় বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। গত বছরের তুলনায় করোনা ভাইরাস মহামারি এখন আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা প্রতিদিন জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু সংকটময় পরিস্থিতি সামাল দিতে পূর্বের বছরের মতোই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে সরকার। পরিস্থিতির ভয়াবহতা রোধে সরকার কোনো চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই তড়িঘড়ি করে গত ৫ এপ্রিল থেকে ৭ দিনের জন্য দেশে লকডাউন/নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সরকার ঘোষিত লকডাউনের বিরুদ্ধে দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। প্রকৃতঅর্থে লকডাউন বলতে যা বোঝায় রাস্তাঘাটে তার কোনো সামান্যতম চিত্রও পরিলক্ষিত হচ্ছে না। কেবলমাত্র দেশের বড় বড় মার্কেট, শপিংমল ছাড়া সবকিছু খোলা রাখা হয়েছে। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বড় বড় ব্যবসায়ীসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দোকান কর্মচারী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ হতাশাগ্রস্ত হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে।

তিনি বলেন, এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের বাস্তবভিত্তিক ও পরিকল্পিত কোনো পদক্ষেপ নেই। ফলে সরকার লকডাউন সঠিকভাবে কার্যকর করতে ব্যর্থ হচ্ছে। জোরপূর্বক নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে লকডাউন কার্যকর করতে গিয়ে এখন জনগণের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে সরকার। জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতাও নেই তাদের। ১২ বছরের অধিক কাল ভয়াবহ দুঃশাসনের জন্য জনগণের কাছে সরকারকে জবাবদিহি করতেই হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০২১
এমএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।