ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

সরকারকে ফাঁকি দিলেও করোনাকে ফাঁকি দেওয়া যায় না: কাদের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০২১
সরকারকে ফাঁকি দিলেও করোনাকে ফাঁকি দেওয়া যায় না: কাদের

ঢাকা: সরকারকে ফাঁকি দিলেও করোনাকে ফাঁকি দেওয়া যায় না বলে সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, করোনা দিনে দিনে আরও হিংস্র হয়ে উঠছে।

সামান্য উদাসীনতায় অকাল মৃত্যু অনিবার্য হয়ে উঠতে পারে।

শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পাঁচ মিনিটের ভিডিওবার্তায় তিনি একথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের এ ভিডিওবার্তায় দেশ-বিদেশে করোনার সবশেষ চিত্র তুলে ধরেন। এতে তিনি মহামারি করোনায় বিশ্বের মানুষের অসহায়ত্বের কথা, বাংলাদেশের মানুষের লকডাউন না মানার প্রবণতা, উদাসীনতার কথা তুলে ধরেন।  

ওবায়দুল কাদের বলেন, সুনামির মতো বিধ্বংসী আলোড়ন তুলে করোনা এসেছে পৃথিবীজুড়ে। কোভিডে কাবু আজ সারা পৃথিবী। কাঁপছে আমেরিকা, কাঁপছে ল্যাটিন আমেরিকা, কাঁপছে আফ্রিকা, কাঁপছে এশিয়া। ভারত কাঁপছে। কাঁপছে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। জীবনের এক অচিন্তনীয় অবিশ্বাস্য কঠিন লড়াই। জরুরি শয্যার জন্য দুনিয়াজুড়ে হাহাকার। সম্মুখ সারির যোদ্ধারা সামাল দিতে হিমশিম।

‘দেশে দেশে সংক্রমণ কেবল বাড়ছেই। বাড়ছে মৃত্যুর হার। কত আপন মানুষ এরই মধ্যে করোনার করাল গ্রাসে চিরদিনের মতো বিদায় নিয়েছে এই আলোছায়ার সুন্দর পৃথিবী থেকে। নতুন নতুন ধরনের সে ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে করোনা। ’

করোনায় আওয়ায়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুল মতিন খসরুর মৃত্যুর কথা উল্লেখ করে কাদের বলেন, এইতো সেদিন আমাদের কাছের মানুষ মতিন খসরুর শেষ বিদায়ের বিষাদ সংবাদ পেলাম। এক দিনেই সর্বোচ্চ ৯৬ জন চলে গেলো মৃত্যুর মিছিলে। সকালে ঘুম ভাঙলেই নতুন নতুন মৃত্যু আর সংক্রমণের খবর। জীবনের যারা কাছের মানুষ প্রাণঘাতী প্যানডেমিক তাদের কত দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়। এ রোগীদের কাছে আসতে ভয়। ফুল জোটে না কফিনে। মৃতের সৎকারেও আপন মানুষেরা কাছে ভেড়ে না। দূর থেকে শুধু নিঃসীম শূন্যতা ভরা হৃদয়ে ভারাক্রান্ত হয়।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, করোনা প্রতিরোধে সারা দুনিয়ায় আজ লকডাউন চলছে। চলছে রাত্রিকালীন কারফিউ। পৃথিবীজুড়ে গরিব আরো গরিব হচ্ছে। বাড়ছে কর্মহীন বেকারদের দীর্ঘ মিছিল। বাংলাদেশে লকডাউন মানতে চায় না মানুষ। মাস্ক পরতেও নিদারুণ অনাগ্রহ। স্বাস্থ্যবিধির প্রতি সাংঘাতিক অবহেলা। ভ্যাকসিনেও হার মানছে না করোনা। ভয়ঙ্কর ভাইরাসকে হারাতেই হবে। স্বাস্থ্যবিধির শাণিত হাতিয়ারই কেবল হারাতে পারে প্রাণঘাতী করোনাকে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, করোনা দিনে দিনে হয়ে উঠছে আরও হিংস্র। আরো প্রতিশোধপরায়ণ। তবু মানুষ সর্বত্র বেপরোয়া। রাস্তায়, হাট-বাজারে, ফেরিঘাটে বেপরোয়া মানুষদের ছুটন্ত মিছিল চোখে পড়ে প্রতিদিন। সরকারি বিধিনিষেধ পুরোপুরি মানছে না মানুষ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক আহ্বানেরও উপেক্ষা। নানা ফাঁক-ফোকড়ে শহর থেকে গ্রামের দিকে অনিশ্চিত অভিযাত্রার যেন বিরাম নেই।  

সবাইকে সতর্ক করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ভুলে গেলে চলবে না সরকারকে ফাঁকি দিলেও করোনাকে ফাঁকি দেওয়া যায় না। সামান্য উদাসীনতায় অকাল মৃত্যু অনিবার্য হয়ে উঠতে পারে। করোনা এখন তরুণদেরও ছাড়ছে না। করোনার ভয়াল গ্রাস থেকে ধনী-দরিদ্র, বড় ছোট কারো রেহাই নেই। এখন আর কোনো রাজনীতি নয়। এখনকার রাজনীতি হচ্ছে সচেতনতার দুর্গ গড়ে তোলা। করোনাকে প্রতিরোধ করা। আসুন আমরা দল-মত শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে আমাদের সবারই সুরক্ষার স্বার্থে করোনার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে অবতীর্ণ হই। জয় আমাদের হবেই।

**দলের কেউ অপকর্মে লিপ্ত হলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা: কাদের
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০২১
এসকে/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।