ঢাকা, সোমবার, ১৮ ভাদ্র ১৪৩১, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৭ সফর ১৪৪৬

রাজনীতি

‘আমি জেলা সভাপতি, আমার কথা না শুনে শোনেন খুনিদের কথা’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০২১
‘আমি জেলা সভাপতি, আমার কথা না শুনে শোনেন খুনিদের কথা’

পিরোজপুর: পিরোজপুরের নাজিরপুরে আওয়ামী লীগের একটি সমাবেশে প্রশাসনকে দেখিয়ে দেওয়ার হুমকি দিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএমএ আউয়াল।

রোববার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার স্বাধীনতা মঞ্চে অনুষ্ঠিত ওই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য কালে তিনি (আউয়াল) নাজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) উদ্দেশে হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দলীয় সরকার, সেই দলের আমি জেলা সভাপতি।

আমার কথা শুনবেন না, শুনবেন খুনিদের কথা। সেটা শোনা যাবে না। কার বাসায় যান, কখন যান, কিসের জন্য যান, কি নির্দেশনা চান? কেউ ঠেকাতে পারবে না। আর যদি ঠেকাতে চান, থাকেন সময় কালে কথা বলবে’।

তিনি আরও বলেন, আপনাদের যারা গুরু তারা কিন্তু আমাকে স্যার বলে। আমি ডকুমেন্ট তৈরি করে ফেলেছি। আপনারা কে কোথায় কি বলেন, কার নামে কাজ নিয়েছেন। কে কাজ তৈরি করে, আমি জানি। সব রেকর্ড কাগজ-কলমে কথা বলবে। যদি কাগজ শুরু হয় আপনি এগোতে পারবেন না।  

তার ওই বক্তব্যে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার (০১ নভেম্বর) উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরে তার ওই বক্তব্য নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে।  

এ সময় তিনি নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্গন করে উপস্থিত জনতাকে ধর্মীয় প্রতিজ্ঞা করিয়ে বলেন, আপনারা নৌকার পক্ষে কাজ করবেন ও ভোট দিবেন।  

সমাবেশে উপস্থিত বক্তাদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. শেখ ফিরোজ আহম্মেদ ছাড়া সকলেই নৌকার পক্ষে ভোট চান। ওই সমাবেশে উপজেলার দীর্ঘা, শাঁখারীকাঠী ও শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীরাও ভোট চেয়ে বক্তব্য দেন।

উপজেলার শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ছিদ্দিকুর রহমান তুহিন (চশমা প্রতীক) অভিযোগ করে বলেন, রোববার বিকেলে সম্প্রীতি সমাবেশের নামে শ্রীরামকাঠীসহ উপজেলার ৩ ইউনিয়নের আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্ধারিত প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাওয়া ও বিরোধী মতাদর্শের ভোটারদের হুমকি-ধামকি দেওয়া হয়েছে। ভোটারদের প্রতিজ্ঞা করিয়ে ভোট চাওয়ায় তাদের ভোটাধিকার ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। একই অভিযোগ উপজেলা ৩ ইউনিয়নের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের।  

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ছিদ্দিকুর রহমান জানান, নির্বাচনের আগে প্রার্থীর পক্ষে কোন বড়  জনসমাবেশে নির্বাচনী আচরন বিধিলঙ্গন হয়। তবে ওই সমাবেশের অনুমতি দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগের পক্ষ সম্প্রীতি সমাবেশের কথা বলে থেকে সেখানে সমাবেশের অনুমতি নেয়া হয়েছে। নির্বাচনী সমাবেশের কথা বলা হয়নি।  
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মনিন্দ্র নাথ মজুমদারের সভাপতিত্বে ওই দিন বিকেল থেকে রাত পৌনে ৮টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ওই সমাবেশে বক্তব্য দেন নাজিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মাস্টার অমূল্য রঞ্জন হালদার, মঠবাড়িয়া পৌর মেয়র রফিউদ্দিন আহম্মেদ ফেরদাউস, জেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক অ্যাড কানাই লাল বিশ্বাস প্রমুখ।
  
উল্লেখ্য, আগামী ১১ নভেম্বর উপজেলার দীর্ঘা, শাঁখারীকাঠী ও শ্রীরামকাঠী এ ৩ নম্বর ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ২০১৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।