ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ুন: ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২১
সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ুন: ফখরুল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম

ঢাকা: গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সব দলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার (১৯নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ১৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে’ আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিভিন্ন দলের নেতাদের বক্তব্যের সঙ্গে একমত উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া এই দানবীয় সরকারকে কোনো মতেই সরানো সম্ভব নয়। এখানে যে প্রস্তাবগুলো এসেছে যে যুগপদ, অথবা একমঞ্চ, সেটা পরে সিদ্ধান্ত হবে। আমরা আমাদের যার যার জায়গা থেকে শুরু করি। আমাদের দল থেকে পরিষ্কার আহ্বান আছে, আসুন সবাই একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে ন্যূনতম দাবির ভিত্তিতে। আমাদের মূল দাবি একটাই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা একসঙ্গে আন্দোলন করি, এদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করি। একথা সত্য এতে যদি আমরা ব্যর্থ হই, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কখনোই আমাদের ক্ষমা করবে না। সে জন্য আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ি।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে তার পরিবার আবেদন করেছিল। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে গতবারও আইনমন্ত্রী বলেছেন এখানে আইনি কোনো সুযোগ নেই তাকে বিদেশে পাঠানোর। এটা ডাহা মিথ্যা কথা। আইনে এটা রয়েছে। যে ৪০১ এর কথা তারা বলছেন, সেই ৪০১ বলা আছে, সম্পূর্ণ এখতিয়ার সরকারের। সরকার চাইলে তাকে মুক্তি দিতে পারেন, বিদেশে পাঠাতে পারেন, আবার সরকার চাইলে পুরোপুরি মওকুফও করে দিতে পারেন। কিন্তু তাদের লক্ষ্য একটাই তারা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে এখন জীবন থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। সে কারণে তারা তাকে চিকিৎসার সুযোগ দিতে চাচ্ছে না।

মির্জা ফখরুল বলেন,  যে নেতার নেতৃত্বে ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারকে পরাজিত করতে সক্ষম হয়েছিলাম। সেই দেশনেত্রী খালেদা জিয়া এখন গুরুতর অসুস্থ।

তিনি বলেন, আমরা জানি না পার্লামেন্টে যখন প্রধানমন্ত্রী কথা বলেন, কোন রাজনৈতিক ভাষায় কথা বলেন। কোন শিষ্টাচারের ভাষায় কথা বলেন। একজন নেত্রী যিনি ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর কারাগারে ছিলেন। একজন নেত্রী যিনি উড়ে এসে জুড়ে বসেননি, দীর্ঘ নয় বছর স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জনগণের একটা সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি এখনও এই মুহূর্ত পর্যন্ত কারাগারেই রয়েছেন। এই গণতন্ত্রের জন্য। মামলা দিয়েছে, তারা বলে সাজাপ্রাপ্ত। আরে কোন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত যে মামলার কোনো ভিত্তি নেই, যে টাকার কথা তারা বলেছে, সে টাকা এখন তিন/চারগুণ হয়েছে। শুধুমাত্র প্রতিহিংসা আর অহংকার দাম্ভিকতার কারণে আজকে দেশনেত্রীকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে।

খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর দাবিতে শনিবার (২০ নভেম্বর) গণঅনশনে সবাইকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে এটা  অনুষ্ঠিত হবে। আশা করবো সবাই আমাদের এই গণঅনশনে একাত্মতা ঘোষণা করবেন। আশা করবো দেশনেত্রী যেন বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ পান সেই জন্য আন্দোলনটা জোরদার করবেন। সেখান থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

এনপিপির সভাপতি ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর)  চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যর আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক,  এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাড. সৈয়দ এহসানুল হুদা, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিসি নুরুল হক নূর, ইসলামী ঐক্যজোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাওলানা আব্দুর রাকীব প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৭ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২১
এমএইচ/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।