ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

খালেদার বিদেশে চিকিৎসায় বাধা আইন নয়, প্রধানমন্ত্রী: রিজভী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০২১
খালেদার বিদেশে চিকিৎসায় বাধা আইন নয়, প্রধানমন্ত্রী: রিজভী

ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে কোনো আইনি বাধা নেই। বাধা একজনই, তিনি হলেন প্রধানমন্ত্রী।

শনিবার (৪ডিসেম্বর) দুপুরে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার দাবিতে  জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স-বাংলাদেশের (এ্যাব) উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, কি আর বলব? প্রধানমন্ত্রী সম্রাটের মতো দেশ চালাচ্ছেন। রাজা, সুলতানা। ওনার আবার মন্ত্রীরা আমির-ওমরার মতো দায়িত্ব পালন করছেন, কথাবার্তা বলছেন। সুলতানা যা বলেন, ওটাকে আরও বাড়িয়ে বলতে হয় মন্ত্রীদের। তা না হলে ওনাদের আমিরগিরি, ওমরাহগিরি থাকে না।

যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে কেন ডাকা হয়নি প্রশ্ন করে রিজভী বলেন,  পাকিস্তান আছে, মালদ্বীপ আছে, বাংলাদেশকে ডাকা হয়নি কেন? শেখ হাসিনা প্রায়ই বলেন, আমি গণতন্ত্র দিয়েছি, মানুষের ভাতের ব্যবস্থা করেছি। তাহলে আপনাকে ডাকেনি কেন? এই প্রশ্নতো মানুষের মুখে মুখে। কারণ তারা জানে আপনার গণতন্ত্র এটা প্লাস্টিকের গণতন্ত্র, কচুপাতার পানির গণতন্ত্র। সামনে গেলেই টপ করে পানি পড়ে যায়। সেজন্য আপনাকে ডাকেনি। এটা আপনি না বুঝলেও সারাবিশ্ববাসী জানে।

তিনি বলেন, দেশের বিশিষ্ট চিকিৎসক যারা রয়েছেন তাদের কথাবার্তা তারা কিছুই মনে করেন না। তারা প্রধানমন্ত্রীকে মনে করেন, তিনি সবচেয়ে বড় মেডিসিনের ডাক্তার। ওবায়দুল কাদের মনে করেন তিনি বাংলাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ সার্জন। আর হাছান মাহমুদ সাহেব মনে করেন তিনি হলেন গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোলজির একজন বিখ্যাত অধ্যাপক।

রিজভী বলেন, একজন অসুস্থ রোগী, চিকিৎসকরা প্রেস কনফারেন্স করে তার সামগ্রীক শারিরীক অবস্থা বলছেন। কিন্তু হাছান মাহমুদ সাহেব উল্টা বলছেন। তাকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার যে সূচক নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। উনি উত্তর দিচ্ছেন, কত তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে দেশের সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে। তিনি বললেন, খালেদা জিয়ার হাঁটুর ব্যাথা আর পেটের ব্যাথার ওপর ভিত্তি করে কী স্বাস্থ্যের সূচক তৈরি হবে।

বিএনপির এ নেতা বলেন, শুনিবারও (৪ ডিসেম্বর) অধিকাংশ গণমাধ্যমে রিপোর্ট করেছে খালেদা জিয়ার শরীর থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এখনও হচ্ছে, এটা আপনার কানে যায় না? বাংলাদেশে যদি এতই ভাল ডাক্তার থাকে তাহলে ওবায়দুল কাদের সাহেবকে কেন সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়েছিল? বিশেষ বিমান চার্টার করে কেন তাকে পাঠিয়েছিলেন। সেদিন কেন বাংলাদেশের ডাক্তাররা বলেননি যে ওবাদুল কাদেরর চিকিৎসা বাংলাদেশেই হবে। আপনার এই স্ববিরোধীতা ও এক নায়কোচিত কতৃত্ববাদী আচরণের জবাব একদিন আপনাকে পেতেই হবে।

রিজভী আরও বলেন, আইনমন্ত্রী কথায় কথায় বলেন, আইনি প্রক্রিয়া। কীসের আইনি প্রক্রিয়া। মোতাহার সাহেব তারেক রহমানের একটা মামলায় নিরপেক্ষভাবে রায় দিয়েছিলেন। চুলচেরা বিশ্লেষণ করে তারেক রহমানকে খালাস দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী সহ্য করতে পারেননি। তাই ওই বিচারককে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে।

তিনি বলেন, যখন প্রধান বিচারপতি সিনহা সাহেব আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী রায় দিচ্ছিলেন তখন কোনো সমস্যা হয়নি। যেই সংবিধান, আইন নিয়ে আপনার সঙ্গে মতভেদ তৈরি হলো, আইনের শাসনের বিরুদ্ধে আপনার যে অবস্থান, তার বিরুদ্ধে যখন প্রধান বিচারপতি কথা বললেন, তখন কীভাবে তাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছেন, বাংলাদেশের মানুষ কি ভুলে গেছে? গান পয়েন্টে পিস্তল ঠেকিয়ে তাকে দেশ থেকে বের করে দিলেন- এটা কোন আইনের শাসন? আইনমন্ত্রী আপনি আইনি প্রক্রিয়া দেখান, এটা কোন আইনি প্রক্রিয়া?

এ্যাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, এ্যাবের সাধারণ সম্পাদক  প্রকৌশলী আলমগীর হাসিন আহমেদ, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, এ্যাব নেতা প্রকৌশলী আব্দুল হালিম পাটোয়ারী, প্রকৌশলী নিয়াজ উদ্দিন ভূঁইয়া, প্রকৌশলী মাহবুব আলম, প্রকৌশলী শাহাদাত হোসেন বিপ্লব প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০২১
এমএইচ/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।