ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলন দুর্বার হয়ে উঠেছে: আব্বাস

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০২১
দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলন দুর্বার হয়ে উঠেছে: আব্বাস

ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, দেশনেত্রীর মুক্তি আন্দোলন দুর্বার হয়ে উঠেছে এটা আওয়ামী লীগ সহ্য করতে পারছে না। তাই তারা দেশনেত্রীর পরিবারের বিরুদ্ধে আজেবাজে কথা বলে আমাদের দৃষ্টিকে অন্য দিকে ফেরাতে চায়।

কিন্তু আমরা চাই দেশনেত্রীর মুক্তি ও সুচিকিৎসা।

সোমবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নীচতলায় খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে বিএনপি সমর্থিত সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, আমার মনে হয় দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলন ও চিকিৎসার আন্দোলন দুর্বার হয়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগ সরকার এটা সহ্য করতে পারছে না। যার ফলে তারা এখন আমাদের দৃষ্টিকে আমাদের মুখের কথাবার্তাকে অন্যদিকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য ওনার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কথা বলছে। আমাদের মাথায় রাখতে হবে, এরা আমাদের দৃষ্টি অন্যদিকে সরাতে চায়। আমাদের কথা একই দেশনেত্রীর মুক্তি ও সুচিকিৎসা। আমরা চাই দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলনের মাধ্যমে এই দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।

তিনি বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার দাবিতে আমরা সারাদেশে সমাবেশের ডাক দিয়েছিলাম। সারাদেশের জনগণের মাঝে একটিই কথা, কি আওয়ামী লীগ কি বিএনপি। সবাই একই কথা বলছে, এই অসুস্থ একজন মানুষকে কেন অত্যাচার করা হচ্ছে। অসুস্থ মানুষটার কী অপরাধ। তাকে কেন বিদেশে পাঠানো হচ্ছে না। আমরা জনমত সৃষ্টি করছি। জনমত আমাদের দিকে প্রচণ্ডভাবে এগিয়ে আসছে। তারপরও আমরা কেন কিছু করতে পারবো না। আমাদের অনেক কিছু করার আছে। আমাদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়া অনেক দিয়েছেন। আমরা তার পতাকা নিয়ে তার নাম নিয়ে, নির্বাচনে পাস করেছিল। এই নেত্রী আমাদের বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়েছেন, সংসদীয় গণতন্ত্র দিয়েছেন। এই নেত্রী মানুষের কথা বলার অধিকার দিয়েছেন। এই দেশের উন্নয়নে কাজ করেছেন। আমরা মন্ত্রী, এমপি হয়েছি।  এখন আমাদের দেওয়ার পালা। আমরা তাকে এখন দেওয়ার চেষ্টা করবো।

বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশনেত্রীর হাতে সময় কতদিন আছে আমি জানি না। ওইদিন ডা. জাফরুল্লাহর বক্তব্য হয়তো আপনারা শুনেছেন। আমি নিজেও ওনাকে দেখেছি, ইশারায় কথা হয়েছে। উনি আসলে খুব ভালো অবস্থায় নেই।

মির্জা আব্বাস বলেন, সেদিন আমি বলেছিলাম একজন প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সাবেক একজন প্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর মতো আচরণ আশা করে। কিন্তু সে আচরণ উনি পাননি। এই কথাটি বলার পর আমার এক ছোট ভাই বললো, ভাই আপনার বোধ হয় একটু কারেশন করতে হবে। আমি বললাম, সেটা কী। তখন ও বললো, উনিতো অবৈধ প্রধানমন্ত্রী। আর আগেরজনতো সাবেক প্রধানমন্ত্রী, নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। সুতরাং তার আচরণতো এক পাবেন না। কথাটা যৌক্তিক মনে হলো। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া তিন বারের প্রধানমন্ত্রী, স্বচ্ছ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। রাতের অন্ধকারে নির্বাচিত হননি। সেই নেত্রীকে আটকে রেখেছে। অপরাধ কী জানেন? সবাই বলে না, দুই কোটি টাকা আত্মসাত হয়ে গেছে। ওগুলো কোনো বিষয় না। বিষয় হলো বিএনপির ওপর অত্যাচার করতে হবে, বিএনপিকে ধ্বংস করতে হবে। সুতরাং একমাত্র খালেদা জিয়াকে ধ্বংস করলেই বিএনপি ধ্বংস হবে।

খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মন্ত্রীদের অশালীন বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আজকে খালেদা জিয়া অসুস্থ, তাকে নিয়ে তার পরিবারকে নিয়ে একটা শিশু বাচ্চাকে নিয়ে পর্যন্ত এই সরকারের মন্ত্রীরা কথা বলছে। এই অসভ্য, আমি কিছু দিন আগে এই লোকটার নাম ধরে একটু বকাবকি করেছিলাম। তারপর উনিও আমার নাম ধরে বকাবকি করেছে, করুক। কিন্তু কথা হলো রাস্তা থেকে ধরে এনে মন্ত্রী বানিয়ে দেবেন, সে লোকেরা পূজা করবে, মান্যগণ্য করবে এটা ভাবার কোনো কারণ নাই। এই লোকটার সম্পর্কে স্যোসাল মিডিয়ায় আসছে, ডিসকো বারে গিয়ে সে নাচতেছে। তাকে ধরে এনে মন্ত্রী বানিয়েছে। যেমন মা তেমন সন্তান। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে আমরা গণতন্ত্রের মা বলি। আমরা বিএনপির নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার সুসন্তান। আর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যারা একজন মুমূর্ষু লোককে নিয়ে তার পরিবারকে নিয়ে আজে বাজে কথা বলেন। তারা কখনোই সভ্য মায়ের সভ্য সন্তান নয়।  

দোহার উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাকের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায় চৌধুরী প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০২১
এমএইচ/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।