ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

মানুষকে কেন বোকা বানাচ্ছেন: ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০২১
মানুষকে কেন বোকা বানাচ্ছেন: ফখরুল ছবি: শাকিল আহমেদ 

ঢাকা: সরকার যে ধারায় খালেদা জিয়াকে আটকে রেখেছে, সেই ৪০১ ধারায় বিদেশে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞার যে শর্ত দেওয়া হয়েছে—সেটা তুলে নিলেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি বিদেশে যেতে পারবেন বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আইনের কথা বলে কেন মানুষকে বোকা বানাচ্ছেন।

বুধবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসার দাবিতে শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোট আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

খালেদা জিয়ার পাসপোর্টের আবেদন বাতিল করা তাদের বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আইনের কথা বলেন, কেন মানুষকে বোকা বানাতে চান। ৪০১ ধারার যে আইনে আপনারা তাকে আটকে রেখেছেন, সেই ধারায় আপনারা শর্ত দিয়েছেন যে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। সেই শর্তগুলো তুলে নেন, তাহলেই তো তিনি যেতে পারেন। পাসপোর্টের আবেদনটাও বাতিল করে দিয়েছেন। এটা আপনারা যে মাঝে মাঝে বলছেন আমরা চিন্তা করছি, তার সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। অবিলম্বে তার পাসপোর্ট দিয়ে তাকে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের কোনো অবণতি হলে, কোনো অঘটন ঘটলে—তার সমস্ত দায়-দায়িত্ব আপনাদের নিতে হবে।  

তিনি বলেন, ৭২-৭৫ সালে আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের ফলে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। লাখ লাখ মানুষ না খেয়ে সেদিন মারা গিয়েছিল। তারাই প্রথম সংবিধান ভঙ্গ করে জরুরি অবস্থা আইন করেছে। তারাই প্রথম সব রাজনৈতিক দল বাতিল করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছিল। আজকে ৫০ বছর পরে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছে তারা। এই সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা আবার দেখছি একটা কর্তৃত্ববাদ, স্বৈরাচার ফ্যাসিবাদের কবলে পড়ে বাংলাদেশের মানুষ সমস্ত অধিকারগুলোকে হারিয়ে ফেলেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা গণতন্ত্রের কথা বলেন। এই গণতন্ত্র হচ্ছে তাদের মুখোশ। প্রকৃতপক্ষে আজকে গণতন্ত্রের নাম রেখে তারা একটা একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে। প্রকৃতপক্ষে আজকে তারা এখানে একটা পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। প্রকৃতপক্ষে তারা একটা অলিখিত রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, কয়েকদিন খুলনা প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সেলিমকে ছাত্রলীগের নেতারা মানসিকভাবে এমন নির্যাতন করেছে যে, সে বাসায় গিয়ে হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেছে। আজকে পুরোপুরিভাবে প্রমাণিত হয়েছে, তাদের নির্যাতনের কারণেই তিনি মারা গেছেন। সেকারণে আজকে ছাত্রলীগের সেই ছেলেদের বহিষ্কার করা হয়েছে। শুধুমাত্র খুলনা নয়, প্রায় সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে একই ঘটনা। আওয়ামী লীগের সমর্থন ছাড়া আজকে কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পায় না। আজকে বিশ্বদ্যিালয়ে ভিন্ন মতের পরিবার থেকে এলে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হলেও চাকরি হয় না। শিক্ষাব্যবস্থায় দুর্নীতি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।

শিক্ষাক-কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব জাকির হোসেনের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এ্যাব) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, বিএনপির সহপ্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোট নেত্রী রোকেয়া চৌধুরী বেবী, কামরুন্নাহার লিপি, শেখ আমজাদ আলী, মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির নেতা এসএম বায়েজিদ আহমেদ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০২১
এমএইচ/জেএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।