চাঁদপুর: আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যাচারের প্রতিবাদে চাঁদপুরে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।
বুধবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে চাঁদপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জেলা আওয়ামী লীগের একাংশ।
এতে লিখিত প্রতিবাদ পড়েন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. ইউসুফ গাজী।
তিনি বলেন, বিগত ১৩ বছরে ডা. দীপু মনির নির্বাচনী এলাকায় বহু সরকারি স্থাপনা হয়েছে এবং এসব স্থাপনার জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। চাঁদপুরে কোনো অধিগ্রহণকৃত জমি কখনো ডা. দীপু মনি বা তার পরিবারের কারো নামে ছিল না। তার উদ্যোগে চাঁদপুর ও হাইমচরে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে জমির মূল্য শতাংশ প্রতি পাঁচ হাজার টাকা থেকে কয়েক লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে। সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ লাভের আশায় বা অন্য কোনো উদ্দেশে সেখানে ডা. দীপু মনি বা তার পরিবারের কোনো সদস্য জমি কেনেননি। গত ১৩ বছরে নিয়োগে, কোনো টিআর, কাবিখা বিতরণে কোনো প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়া বা অন্য কোনো কার্যক্রমে ডা. দীপু মনি বা তার পরিবারের কারো কোনো অস্বচ্ছতা বা অনিয়ম কোন দিন ছিল না। এ বিষয়ে জেলার সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাসহ জেলার রাজনৈতিক সামাজিক, সাংকৃতিক ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ জনগণ জানেন। কেন হঠাৎ করে ডা. দীপু মনিকে অসৎ প্রতিপন্ন ও হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। যে বা যারা কোনো কোনো গণমাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ডা. দীপু মনি বা তার পরিবারকে জড়িয়ে জঘন্য মিথ্যাচার করছেন, তাদের উদ্দেশ্য উদ্ঘাটন অতি জরুরি।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, এটি শুধু ডা. দীপু মনির সততাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা নয়, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশাসন ও রাজনীতিকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার কিংবা শেখ হাসিনা সরকারকে অপদস্ত করার ঘৃণ্য অপচেষ্টা বলেও অনেকেই আশঙ্কা করছেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত হননি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল। তারা দু’জন যাতে এ মিথ্যাচারের প্রতিবাদে উপস্থিত থাকেন, সেজন্য জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসডু পাটওয়ারী, মুজিব পাটওয়ারী ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বাসায় যান। কিন্তু এর তিনদিনেও সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কোনো সাড়া না দেওয়ায় আওয়ামী লীগের একাংশ এ সংবাদ সম্মেলন করল।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইউসুফ গাজী বলেন, দলের যুগ্ম সম্পাদকের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের বিষয়ে যার কাছে অভিযোগ করব, তিনি আমাদের জেলা সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ। তিনি নিজেই এ মিথ্যাচারে অংশ নিয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য দিয়েছেন। তাই আমরা প্রয়োজনে সময়মত কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করব এবং দলীয়ভাবে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে আবেদন করব।
চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নে ‘চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ এর ভূমি অধিগ্রহণ বিষয়ে দুর্নীতির যে প্রসঙ্গ এখন আলোচনার ঝড় তুলেছে, এটিতে ডা. দীপু মনি ও তার পরিবারের কেউ জড়িত নন। এ বিষয়টি আমরা লিখিতভাবে সাংবাদিকদের কাছে সরবরাহ করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নির্ধারিত জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে জমির মূল্য নির্ধারণ জমির মালিকের করার সুযোগ নেই। জেলা প্রশাসকই ১৯৩ কোটি ও ৫৫৩ কোটি টাকা প্রাক্কলন দাম ধরেছেন।
প্রেসক্লাবের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন মিলনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ ফেরদৌসের সঞ্চালনায় লিখিত বক্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করেন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কাজী শাহাদাত, শরীফ চৌধুরী, শহীদ পাটওয়ারী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা, এএইচএম আহসান উল্যাহ, সাংবাদিক শাহাদাত হোসেন শান্ত, আল-ইমরান শোভন, আলম পলাশ, কাদের পলাশ, মো. ইব্রাহীম রনি, ডালিম, মিজান লিটন ও কে এম মাসুদসহ অনেকে।
আওয়ামী লীগ ও এর অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী, অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান ভুঁইয়া, চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান, সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) আলী এরশাদ মিয়াজী, সাংগঠনিক সম্পাদক আইয়ুব আলী বেপারী, শহর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাধা গোবিন্দ গোপ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বাবুল, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান টুটুল, মোহাম্মদ আলী মাঝি, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট হেলাল হোসাইন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জহির উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন খানসহ অনেকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২২
এসআই