সিরাজগঞ্জ: পিঠ আর সম্পদ বাঁচাতে আসা নেতাদের আওয়ামী লীগে দরকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের দলের কতিপয় নেতাকর্মী, যারা ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করবেন, যারা জায়গা দখল করবেন, তাদের কারণে উন্নয়ন ম্লান হবে, সেটি হতে পারে না।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া সুস্থ হওয়ায় বিএনপি নেতারা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তারা তাদের নেত্রীকে বিদেশে পাঠানোর দাবিতে সারাদেশে সমাবেশ করেছেন। কিন্তু তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এখন তারা কী বলবেন? এ কারণে তারা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ’
রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সিরাজগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘সারাবিশ্ব শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। অথচ বিএনপি নেতাদের উন্নয়ন চোখে পড়ে না। ফখরুল ইসলাম আলমগীর অবলীলায় মিথ্যা বলে যাচ্ছেন। গয়েশ্বর বাবু আর রিজভীও বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা বলছেন। ’
বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, ‘স্বাধীনতা অর্জনের পর অনেকে বলেছিল, বাংলাদেশে মাথাপিছু এক হাজার ডলার আয় করতে একশ’ বছর সময় লাগবে। আজকে ৫০ বছরে মাথাপিছু আয় গিয়ে পৌঁছেছে আড়াই হাজার ডলারে। মাথাপিছু আয়ে আমরা ভারতকে ছাড়িয়েছি, ২০১৫ সালে পাকিস্তানকেও ছাড়িয়েছি। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা প্রথম ক্ষমতায় এসে ঘোষণা দিয়েছিলেন, দেশে কোনো কুঁড়েঘর থাকবে না। এখন আর কুঁড়েঘর খুঁজে পাওয়া যায় না। শতভাগ বিদ্যুতায়নের ফলে চেরাগ, ল্যাম্প আর হ্যাজাক যাদুঘরে চলে গেছে। সব কিছু শেখ হাসিনার যাদুকরী নেতৃত্বের ফলে সম্ভব হয়েছে। ’
তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলেছিলাম। তখন অনেকের কাছেই বিষয়টি হাস্যকর মনে হয়েছিল। এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবে পরিণত হয়েছে। ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে ১৫ কোটি মোবাইল ফোন, ১২ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে, সাড়ে আট কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে। ঘরে বসে মোবাইলেই স্কুল-কলেজে ভর্তি হয় শিক্ষার্থীরা। ’
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শ্রমিকের মজুরি বেড়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এক সময় বাম দলের নেতাকর্মীরা আন্দোলন করতেন, শ্রমিকের মজুরি হতে হবে সাড়ে তিন কেজি চালের সমান। এখন শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে শ্রমিকের মজুরি দাঁড়িয়েছে ১২ কেজি চালের সমান। শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছিলেন, “আমার শহর আমার গ্রাম” করার। আজ শহরের সুযোগ সুবিধা গ্রামে চলে গেছে। দেশের পরিবর্তন হয়েছে। প্রতিটি মানুষের পরিবর্তন হয়েছে। ’
শহরের শহীদ এম মনসুর আলী অডিটোরিয়ামে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট কে এম হোসেন আলী হাসান।
পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক দানিউল হক মোল্লার পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- আওয়ামী লীগের রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, নির্বাহী সদস্য, এমপি মেরিনা জাহান কবিতা, সদস্য আব্দুল আওয়াল শামীম, এমপি অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না, এমপি তানভীর শাকিল জয় ও অধ্যাপক এমপি ডা. আব্দুল আজিজ।
প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ তালুকদার। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু ইউসুফ সূর্য, বিমল কুমার দাস, পৌর মেয়র আব্দুর রউফ মুক্তা ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক আসাদ উদ্দিন পবলু।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২২
এসআই