ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ছাত্রদল রাস্তায় আন্দোলনের সূচনা করেছে: ড. মোশাররফ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫০ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০২২
ছাত্রদল রাস্তায় আন্দোলনের সূচনা করেছে: ড. মোশাররফ ছবি: শাকিল

ঢাকা: ছাত্রদল রাস্তায় আন্দোলনের সূচনা করেছে জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন দেশের যে সংকট তার ফয়সালা হবে রাজপথে। ছাত্রদল রাজপথের সেই আন্দোলনের সূচনা করে ফেলেছে।

এ আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিএনপিসহ যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে সবাই উজ্জীবিত হয়েছে।  

শুক্রবার (২৭ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির যৌথ উদ্যোগে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সরকারের কোথাও পথ নেই তাই সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে অভিযোগ করে সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, কারও যদি প্রকৃতপক্ষে জনগণের সমর্থন থাকে, পায়ের নিচে মাটি থাকে তাহলে গুণ্ডামি-সন্ত্রাসীতে কেউ যায় না। এ সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই। তাই আজকে সন্ত্রাসী-গুণ্ডামি করছে। ছাত্রদল যে আন্দোলনের সূচনা করেছে এটা সারাদেশে হবে। কয় জায়গায় সন্ত্রাসীদের পাঠাতে পারবেন? আজকে বিএনপিসহ যতগুলো অঙ্গ সংগঠন আছে সবাই ছাত্রদলের ভাই অথবা অভিভাবক। তারা কেউ বসে থাকবে না। সবাই অভিভাবক হিসেবে ছাত্রদলের পাশে থাকবে।

ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, হাসপাতালের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে ছাত্রনেতাদের কুপিয়েছে। এ নির্যাতন শুধু বাংলাদেশে নয়, সারাবিশ্বে ভাইরাল হয়ে গেছে। খালেদা জিয়া-তারেক রহমানসহ বিএনপি পরিবারের পক্ষ থেকে এর তীব্র নিন্দা জানাই। অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলতে চাই, দায়ীদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির ব্যবস্থা করুন। আজকে গায়ের জোরে সরকারের ইন্ধনে এ কাজ হয়েছে। যারা এ কাজ করেছে তাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, পুরান ঢাকায় বিশ্বজিৎকে ছাত্রলীগের গুণ্ডারা হত্যা করেছিল, ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটিতে আবরারকে হত্যা করেছিল। আপনারা দেখেছেন এ বিশ্বজিৎ-আবরারকে যারা হত্যা করেছে তাদের কী পরিণতি হয়েছে। আজকে যারা গুণ্ডামি করছেন, সন্ত্রাসী করছেন আপনাদেরও সেই পরিণতি হবে।

এ সন্ত্রাসী হামলায় যারা প্ররোচনা দিচ্ছেন তারা কারা প্রশ্ন করে বিএনপির এ নেতা বলেন, তারা গায়ের জোরের সরকার। ২০১৪ সালের বিনা ভোটের সরকার, এ সরকার ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে ডাকাতি করার সরকার। এ দেশের মানুষের প্রতি তাদের কোনো কমিটমেন্ট নেই। এখন দেশের মানুষের ভোটের অধিকার নেই। সরকার জনগণের কোনো তোয়াক্কা করে না। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে খেটে খাওয়া মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত মানুষ বিপর্যয়ের সম্মুখীন। সরকার কোনো নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। কারণ আওয়ামী লীগের লোকেরা সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত।  

এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কেন করছে জানিয়ে ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকে তারা চতুর্দিক থেকে ঘেরাও হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিকভাবে তারা বিচ্ছিন্ন-সমর্থনশূন্য, এদেশের মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। তাই চর্তুদিক থেকে তাদের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। তাই আজকে যিনি প্রধানমন্ত্রী তার ঘুম হয় না। সেজন্য তিনি বলতে পারেন, তিন বারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে টুস করে পদ্মায় ফেলে দেবেন। একজন সুস্থ ব্যক্তি এ ধরনের কথা বলতে পারে না। এ প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসকে দুবার চুবিয়ে তুলে ফেলবেন। মেরে ফেলবেন বলেননি, দুবার চুবিয়ে বাঁচিয়ে দেবেন বলেছেন। আর দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে ফেলে দেবেন, অর্থাৎ এখানে আপনি হত্যার হুমকির অভিযোগে অভিযুক্ত।

সরকারকে হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কার মতো যদি রাজপথের আন্দোলন দেখতে না চান তাহলে অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করুন। সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করেন। সেই সরকার খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যবস্থা করবে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরে স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার পরিবেশ সৃষ্টি করে দেবে। সেই নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। সেই নির্বাচনে জনগণ তাদের নিজের হাতে ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে।  

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণ বিএনপির সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতা খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, আব্দুস সালাম আজাদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, নাজিম উদ্দিন আলম, কামরুজ্জামান রতন, শিরিন সুলতানা, আজিজুল বারী হেলাল, মীর সরাফত আলী সপু, আমিরুল ইসলাম খান আলীম, যুবদলের সাইফুল আলম নীরব, সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, শহীদুল ইসলাম বাবুল, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।  

এর আগে সকাল ৯টা থেকে ঢাকার বিভিন্ন থানা থেকে মিছিল নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হন। সমাবেশ ঘিরে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে ছিল। তবে কোনো রকম সহিংস ঘটনা ঘটেনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৯ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০২২
এমএইচ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।