ঢাকা: আওয়ামী লীগকে আর ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বরাবরই প্রতারক, তাদের একদিন থাকতে দিলেও আমাদের ক্ষতি।
রোববার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিশন মিলনায়তনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানের ৪১তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, তারা আবার শয়তানি শুরু করেছে। তারা বলছে, পাচার করা অর্থ নাকি ফিরিয়ে আনবে। নিজেরাই টাকা পাচার করেছে ওটাকে ফিরিয়ে এনে জায়েজ করবে। অর্থাৎ ওই টাকা ফিরিয়ে নিয়ে এসে আবারও পাচারের সুযোগ করে দেবে। এদের কখনোই বিশ্বাস করা যায় না। এরা বরাবরই প্রতারক। আওয়ামী লীগকে আপনারা দেখেননি। আমরা দেখেছি, বরাবরই তারা প্রতারণা করেছে। এ আওয়ামী লীগকে আর কোনো মতেই ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া যায় না। একদিন থাকলেও আমাদের ক্ষতি।
জিয়াউর রহমানের রেখে যাওয়া গণতন্ত্রের পতাকা খালেদা জিয়া দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে রেখেছেন উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজকে যখন আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ গণতন্ত্র ধ্বংস হয়ে গেছে, স্বপ্নগুলো ম্লান হয়ে যাচ্ছে তখন জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার মতো আবার আমাদের সামনে এসে হাজির হয়েছেন তারেক রহমান। যিনি আমাদের সুদূর থেকে পথের দিশা দেখাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শনিবার (২৮ মে) প্রশ্ন করেছেন উনি (তারেক রহমান) টেমস নদীর পাড় থেকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবেন এটা কী সম্ভব হবে? ওবায়দুল কাদের সাহেব, অবশ্যই সম্ভব হবে কারণ তারেক রহমান সেই রাজনীতি ধারণ করেছেন যে রাজনীতি এ দেশের সাধারণ মানুষের রাজনীতি। এখন মানুষ হত্যা, ধর্ষণ, খুন, জখমের মধ্য থেকে বেরিয়ে আসতে চায়। মানুষ মুক্তি চায়, স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে চায়। সেজন্য ওই জিয়াউর রহমান সাহেবের দর্শন যা তারেক রহমান সাহেব ধারণ করে আছেন সেটা অবশ্যই এখানে সফল হবে। তা না হলে এ যে আমাদের ৩০/৪০ জন ছাত্রদলের ছেলেরা হাসপাতালে পড়ে আছে, কেন হাসপাতালে? কী পেয়েছে তারা? কী পাচ্ছে? তাদের ওই একটা আদর্শ, তারা বিশ্বাস করে আমাদের এ দেশকে মুক্ত করতে হবে। সেজন্য তারেক রহমান সাহেবের ওইখান থেকে দেওয়া নির্দেশে তারা ঝাঁপিয়ে পড়েছে।
জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের জনগণের হৃদয়ে আছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, জিয়াউর রহমান সাহেবকে যে যত ইচ্ছা বলুক, তাকে খলনায়ক বলুক, পাকিস্তানের চর বলুক, সামরিক বাহিনী থেকে আসা বলুক, তাতে কিচ্ছু যায় আসে না। কারণ এ দেশের মানুষের হৃদয়ের মধ্যে তিনি প্রথিত হয়ে গেছেন। তিনি জাতির সবচেয়ে দুঃসময়ে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে জাতিকে স্বাধীনতাযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। দ্বিতীয়বার ১৯৭৫ সালে যখন জাতি প্রায় দিশেহারা কোন দিকে যাবে, কী করবে বুঝতে পারছে না, তখন আবার তিনি সিপাহী জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে জনগণের সামনে এসে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সেই জিয়াউর রহমানকে জনগণের হৃদয় থেকে উঠিয়ে দেওয়া যাবে না।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও শহীদ উদ্দিন চৌধুরীর পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাহিদা রফিক, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেইন, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মাহতাব।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৮ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২২
এমএইচ/আরবি