লক্ষ্মীপুর: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, বিএনপি সন্ত্রাসীর দল।
মঙ্গলবার (১ জুন) দুপুরে লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
হানিফ বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাবস্থায় ২৬ হাজার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। এ লক্ষ্মীপুরেও অনেক নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। হত্যার বিচার চাইতে গিয়ে উল্টো হামলার শিকার হয়েছে। এ সন্ত্রাসী দল জনগণের কল্যাণে কাজ করতে পারে না। এ দলের শীর্ষ নেত্রী খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে কারাগারে বন্দি ছিলেন। শেখ হাসিনার দয়ায় এখন কারাগার থেকে বাসায় আছেন। তাদের আরেক শীর্ষ নেতা তারেক রহমান। তিনি ক্ষমতায় থাকতে হাওয়া ভবন করে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করেছেন। তিনি ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যার নেপথ্যে ছিলেন। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে তার বিচার হয়েছিল। তিনি ফেরারি হয়ে দেশের বাহিরে পলাতক আছেন।
জামায়াতের শীর্ষ নেতারা এখনো পাকিস্তানের সৈনিক হিসেবে কাজ করছে জানিয়ে মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, জামায়াত ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। জামায়াত সৃষ্টি হয়েছিল পাকিস্তানের মাওলানা মওদুদীর হাত ধরে। তারা পাকিস্তানের আদর্শে আদর্শিত। তাদের চিন্তা, চেতনা, আদর্শ পাকিস্তান ছাড়া কিছুই নেই। এখনো সে আদর্শ থেকে সরে আসেনি। ৭১ সালে তারা রাজাকার ছিল, এখনো রাজাকার আছে।
হানিফ বলেন, বিএনপি জামায়াত এ দেশের উন্নয়ন চায় না। কারণ তারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। কিন্তু বিএনপি বলে- তারা নাকি মুক্তিযুদ্ধের দল। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্যে দিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছেন। একে একে বঙ্গবন্ধুর অর্জিত সমস্ত চেতনাকে ধ্বংস করেছে তারা। ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ নিষিদ্ধ করেছিল। উনি (জিয়াউর রহমান) মন্ত্রী পরিষদ গঠন করলেন স্বাধীনতা বিরোধীদের নিয়ে। যুদ্ধাপরাদের দায় থেকে তাদের মুক্তি দিয়েছেন। ৩০ লাখ শহীদদের আত্মাকে কলঙ্কিত করেছেন। এতে উনি (জিয়া) প্রমাণ করেছেন আদর্শিক দিক দিয়ে তিনি একজন পাকিস্তান প্রেমী। ওনার মধ্যে দেশপ্রেম বলে কিছু নেই।
বঙ্গবন্ধুর হত্যার সঙ্গে জিয়াউর রহমান জড়িত উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর খুনিদের পুরস্কৃত করেছেন জিয়া। তারা এখন রাজপথে নেমে স্লোগান দিচ্ছে ৭৫ এর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার। এটার মানে কী? আমরা বার বার বলেছি এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে খুনি জিয়াউর রহমান। আমরা তার মরণোত্তর বিচার দাবি করেছি। কিন্তু বিচার পাইনি।
আওয়ামী লীগের শীর্ষ এ নেতা বলেন, দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসীদের শীর্ষে থাকা দল দিয়ে জনগণের কল্যাণে আসতে পারে না। সরকারের উন্নয়নে বাধাগ্রস্ত করার জন্য ষড়যন্ত্র করেছে। তাই আমি নেতাকর্মীদের অনুরোধ করবো সংগঠনকে শক্তিশালী করুন। আমরা বিএনপি জামায়াতের কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দেখতে চাই না।
আওয়ামী লীগ এদেশের গণমানুষের দল। মানুষের ভরসার জায়গা শেখ হাসিনা। আপনারা মানুষের কাছে যান, উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরুন। যদি সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারেন এদেশের মানুষের আস্থা শেখ হাসিনার ছাড়া অন্য কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই।
অর্থনৈতিক উন্নয়নে গ্রাম বাংলার মানুষের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে জানিয়ে মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, সরকারের শুরুতে মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৬০০ ডলার। এখন মাথাপিছু আয় হয়েছে ২৮৬০ ডলার।
সব কিছু শেখ হাসিনার কারণে হয়েছে। তাঁর নেতৃত্ব, দক্ষতা এবং বিচক্ষণতায় ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে। বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।
চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন হাজিরপাড়া হামিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন নাহার লাইলী এমপি, লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শাহজাহান কামাল, লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু।
সভাপতিত্ব করেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক আবুল কাশেম চৌধুরী।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪২ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০২২
এসআইএস