ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ আষাঢ় ১৪৩১, ২৭ জুন ২০২৪, ১৯ জিলহজ ১৪৪৫

রাজনীতি

‘নৌকায় ভোট না দিলে কেন্দ্রে আসবেন না’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৫ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০২২
‘নৌকায় ভোট না দিলে কেন্দ্রে আসবেন না’ সাদিকুল ইসলাম।

টাঙ্গাইল: আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠিত হবে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার অরনখোলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন। এ নির্বাচনে যারা নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন না, তাদের ভোট কেন্দ্রে আসতে বারণ করেছেন এক আওয়ামী লীগ নেতা।


ওই আওয়ামী লীগ নেতার নাম সাদিকুল ইসলাম। তিনি মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মির্জাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান।

বুধবার (৮ জুন) বিকেলে অরনখোলা ইউনিয়নের আমলীতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুর রহিমের নির্বাচনী সভায় বক্তৃতাকালে তিনি এ হুমকি দেন। তার এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরদিন বৃহস্পতিবার (৯ জুন) রাত থেকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, সাদিকুল ইসলাম বলছেন ‘আমি আজকেও বলে দিতে চাই ১৫ তারিখ ভোট হবে সারাদিন এবং নৌকা মার্কায় ভোট হবে। আপনারা ভোট দেবেন। যারা নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন তারাই কেন্দ্রে আসবেন। আর যারা নৌকায় ভোট দিতে নারাজ, দয়া করে কেন্দ্রে আসবেন না। আমরা কিন্তু আশেপাশেই অবস্থান করব। এখানে ২৪শ ভোট রয়েছে, যদি দুই হাজার ভোট কাস্ট হয়, আমরা দুই হাজার ভোটই পেতে চাই। ’

ভিডিওর অপর অংশে দেখা যায় সাদিকুল ইসলাম বলছেন, ‘যে কোন মূল্যে নৌকাকে আমাদের বিজয়ী করতেই হবে। এজন্য আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা লীগের সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দ আমরা প্রত্যেক কেন্দ্রে দুর্গ গড়ে তুলব। যেখানে যা প্রয়োজন আমরা সেটাই ব্যবহার করব। ’

এদিকে সাদিকুল ইসলামের এই বক্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন ভোটার জানিয়েছেন, এরকম বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি সাধারণ ভোটারদে হুমকি দিচ্ছেন। এসব বক্তৃতা শুনে ভোটারদের মনে ভীতির সৃষ্টি হচ্ছে। এ ধরনের বক্তব্য দেওয়ায় ওই নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

এ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও বিএনপি সমর্থীত মো. লস্কর আলী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে আনারস প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন অরণখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসান ইমাম ওরফে মিন্টু। তবে দলীয় নেতাদের অনুরোধে তিনি নির্বাচন থেকে সরে যান। তিনি এখন প্রচার-প্রচারণায় নেই।

এ অবস্থায় স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী লস্কর আলী জানান, এ ধরনের বক্তব্য দেওয়ায় জনমত তার দিকে (লস্কর আলী) আসছে। ভোটারদের এই হুমকি দেওয়ার জন্য তিনি কোথাও অভিযোগ করেননি বলে জানান।

এ বিষয়ে মধুপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা খন্দকার মোহাম্মদ আলী জানান, এ ধরনের বক্তৃতার বিষয়টি তিনি জানতে পেরেছেন। তবে কেউ তার কাছে কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আর অভিযুক্ত চেয়ারম্যান সাদিকুর রহমান নৌকায় ভোট না দিলে কেন্দ্রে না যাওয়ার বিষয়ে বক্তৃতা করার কথা অস্বীকার করেছেন । তিনি জানান, কেউ হয়তো এডিট করে এই ভিডিও দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, আগামী ১৫ জুন মধুপুর উপজেলার আটটি ইউনিয়নসহ জেলার সাত উপজেলার ২১টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, ১০ জুন, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।