ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

পদ্মা সেতু নির্মাণের কথা জানিয়েছিলেন খালেদা জিয়া: মির্জা আব্বাস

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৬ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২২
পদ্মা সেতু নির্মাণের কথা জানিয়েছিলেন খালেদা জিয়া: মির্জা আব্বাস

সিলেট : যমুনা সেতু উদ্বোধনের দিন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পদ্মা সেতু নির্মাণের কথা জানিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের বাহবা পাওয়ার কিছু নেই।

শুক্রবার (২৪ জুন) সন্ধ্যায় সিলেট নগরের অভিজাত রেস্টুরেন্টে কেন্দ্রীয় যুবদলের ত্রাণ বিতরণ শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

আব্বাস বলেন, বিনা ভোটে যারা ক্ষমতায় আসে, তারাই একমাত্র দুর্যোগের সময় উৎসব করতে পারে। সারা দেশ যখন বন্যায় বিপর্যস্ত, তখন আওয়ামী লীগ একটি সেতু উদ্বোধন করতে উৎসবে মেতেছে। নাচের জন্য তিন কোটি টাকা দিয়ে ভারত থেকে নর্তকি আনা হয়েছে। ৯ কোটি টাকা খরচ করে টয়লেট নির্মাণ করেছে। অথচও সিলেটের মানুষ আজ ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন। তাদের দুর্দিনে আওয়ামী লীগ উৎসব করছে।

বানভাসী মানুষের জন্য মাত্র ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সিলেটকে নিয়ে ঠাট্টা করেছেন। বন্যা দুর্গত লাখ লাখ মানুষের জন্য সিলেটে মাত্র ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যা জনপ্রতি দেড় টাকা করে পড়েছে। অথচ, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের জন্য ৯ কোটি টাকা দিয়ে টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। এর চেয়ে নিন্দনীয় আর কি হতে পারে।

সিলেটের জন্য প্রধানমন্ত্রী যা দিয়েছেন শুধুমাত্র যুবদলই তার অর্ধেক দিয়েছে। শুক্রবার ১৫ লাখ টাকার ত্রাণ বিতরণ করেছে। শনিবার (২৫ জুন) আসবে ছাত্রদলের একটি টিম। পরের দিন অন্য আরেকটি টিম আসবে। আর বিএনপি তো শুরু থেকেই মানুষকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে।

মির্জা আব্বাস বলেন, দুর্যোগের সময় খালেদা জিয়া দেশ ছেড়ে যাননি। ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে সিলেটের মন্ত্রী আব্দুল মোমেন দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। এই দুর্যোগের সময় তিনি সবার আগে মানুষের পাশে থাকার কথা। অথচ ২০০৪ সালে বিএনপির আমলে বন্যার সময় প্রয়াত অর্থমন্ত্রী সিলেটের তাৎক্ষণিক ১০ হাজার মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেন। আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীদের নিজ এলাকার প্রতি টান নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি হবে এটা স্বাভাবিক। এর জন্য সিলেটে বন্যা নয়। ব্যক্তির মনের খায়েশ পূরণ করতে ইটনা-মিঠামইন হাওরে অপরিকল্পিতভাবে ৩৩ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করায় এ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া আসামে বন্যা হবে এর পূর্বাভাস জেনেও সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সরকারের গাফিলতির কারণে সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। কৃত্রিমভাবে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি করায় এর দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে বলেও উল্লেখ করেন মির্জা আব্বাস।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ বলে ভারত আমাদের বন্ধু। এই বন্ধুই বর্ষা মৌসুমে পানি ছেড়ে দেয়, আর শুকনো মৌসুমে পানি বন্ধ করে দেয়। বন্যা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। কিন্তু এবারের বন্যা ব্যতিক্রম। প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র ভারত ফারাক্কা বাঁধের ১৯টি গেট খুলে দিয়ে আমাদের ডুবিয়েছে। বিএনপি ১০ বছর ধরে ক্ষমতায় নেই, বিরোধীদলও নয়। তারপরও মানুষের দুর্দিনে বিএনপি সবার আগে থাকে। এই দুর্যোগেও সিলেট-সুনামগঞ্জবাসীর পাশে রয়েছে বিএনপি। মানুষকে সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এ নেতা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাধারণ সম্পাদক মুনায়েম মুন্না, সিনিয়র সহ সভাপতি মামুন হাসান, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, যুগ্ম সম্পাদক গোলাম মাওলা শাহীন, দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ, জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মোমিনুল ইসলাম মুমিন, সদস্য সচিব মকসুদ আহমদ, মহানগর যুবদলের সভাপতি মুজিবুর রহমান মুজিব, সাধারণ সম্পাদক শাহ নেওয়াজ বক্ত চৌধুরী তারেক প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ০১০৮ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২২
এনইউ/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।