ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বরিশালে সদর উপজেলা বিএনপির কমিটি প্রত্যাহারের দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২
বরিশালে সদর উপজেলা বিএনপির কমিটি প্রত্যাহারের দাবি

বরিশাল: বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির সদ্য ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটি প্রত্যাহার ঘোষণা ও জেলার (দক্ষিণ) বিএনপির মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি পুনর্গঠনের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিএনপির একাংশের নেতারা।

শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির শহীদ জননী সাহান আরা বেগম স্মৃতি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সদ্য ঘোষিত বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির এক নম্বর সদস্য মো. জিয়াউল ইসলাম সাবু তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের অনুরোধ এবং পরামর্শ উপেক্ষা করে গত ১৯ জুলাই বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন জেলা কমিটির (দক্ষিণ) বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান নান্টু ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আকতার হোসেন তালুকদার মেবুল।

এরপর বিষয়টি নিয়ে গত ২০ জুলাই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মহাসচিব ও বরিশাল বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে লিখিত অভিযাগ দেন অ্যাডভোকেট কাজী এনায়েত হোসেন বাচ্চু। পরে সাংগঠনিক টিমের পরামর্শক্রমে বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির কমিটি করার লিখিত নির্দেশ পেলেও তা অমান্য করে গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন জেলার বিএনপির সভাপতি।

ঘোষিত কমিটিকে নিশিরাতের কমিটি উল্লেখ করে জিয়াউল ইসলাম সাবু বলেন, মুজিবুর রহমান নান্টু ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে অগণতান্ত্রিকভাবে সদর উপজেলার সাবেক কমিটির কারো সঙ্গে পরামর্শ বা মতামত না নিয়ে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় একটি হাস্যকর কমিটি ঘোষণা করেন। যে কমিটিতে পদাধিকার বলে বিভিন্ন ইউনিয়ন বিএনপির নেতাদের থাকার কথা থাকলেও অনেককেই রাখা হয়নি।

জিয়াউল ইসলাম সাবু আরও বলেন, সদ্য ঘোষিত সদর উপজেলা বিএনপির কমিটির আহ্বায়ক মো. নুরুল আমিন জামায়াত থেকে বহিষ্কৃত এবং বিতর্কিত। তিনি সদ্য বিলুপ্ত উপজেলা কমিটির সদস্যও ছিলেন না। তার বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতা করে দলীয় নেতাদের পুলিশি হয়রানি করার অভিযোগ রয়েছে। এর আগে তিনি কড়াপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়কের দায়িত্ব নিলে সাবেক সভাপতি ও সম্পাদকসহ ১৯২ জন নেতা পদত্যাগ করেন। এছাড়া ওই ইউনিয়নে চলমান কমিটিকে স্থগিত দেখিয়ে তার আপন ছোট ভাই যুবলীগ নেতা মনির হোসেনকে সিনিয়র সহ-সভাপতি ঘোষণা দিয়ে কমিটি দেন। যে কমিটির বিরুদ্ধে একটি মামলাও বর্তমানে চলমান রয়েছে। অপরদিকে গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চরমোনাই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী নুরুল ইসলাম মাস্টারের নির্বাচনী প্রধান সমন্বয়কারী বিতর্কিত নেতা আ. ছালাম রাঢ়ীকে বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে। এছাড়া উক্ত বিতর্কিত আহ্বায়ক কমিটিতে অনেক সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সদস্য
করা হয়েছে যাদের অনেককে আমরা চিনি না। কমিটিতে অনেককে যথাযথ স্থানে না রেখে জুনিয়র সদস্যদের নিচে নাম লেখা হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়।

জিয়াউল ইসলাম সাবু বলেন, কমিটিতে সদর উপজেলা বিএনপির পরীক্ষিত ত্যাগী জেল-জুলুম ও
অত্যাচার সহ্যকারী নেতাকর্মীরা হতাশ। এ নিয়ে নেতাকর্মীদের অসন্তোষ চরম আকার ধারণ করেছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে নেতাকর্মীদের এ দাবি না মানলে লাগাতার কর্মসূচি দিয়ে অবাঞ্চিত কমিটিকে হঠাতে বাধ্য হবো। এছাড়া বরিশাল জেলা বিএনপির বিতর্কিত ও মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির পুনর্গঠনের দাবি জানাই। কারণ কমিটির আহ্বায়ক মজিবুর রহমান নান্টু পিরোজপুর জেলার বাসিন্দা এবং সদস্য সচিব পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালির বাসিন্দা। আমরা চাই বরিশাল জেলার বাসিন্দাদের দিয়ে জেলা কমিটি গঠন করা হোক।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট কাজী এনায়েত হোসেন বাচ্চু, সদ্য ঘোষিত কমিটির দুই নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক মন্টু খানসহ একাধিক নেতারা।

সংবাদ সম্মেলন শেষে কমিটি বাতিলের দাবিতে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন বিএনপি নেতারা।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে বরিশাল জেলা (দক্ষিণ) বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান নান্টু বাংলানিউজকে বলেন, কমিটি নিয়ে যে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেন ও প্রতিবাদ করতে পারেন। এটা তাদের অধিকার। তবে স্বচ্ছতার ভিত্তিতেই যোগ্য নেতাদের দিয়েই কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২
এমএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।