ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

রাজপথেই থাকবে বিএনপি

মহসিন হোসেন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২
রাজপথেই থাকবে বিএনপি

ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে চায় বিএনপি। আর এ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত মাঠেই থাকতে চায় দলটি।

একই সঙ্গে যারা এ দাবির সঙ্গে একমত সেইসব দলকেও আন্দোলনে পাশে চায়।

দলীয় নেতাকর্মীরা বলছেন হামলা-মামলা-নির্যাতন, গুলি-হত্যা, গুম এসব করে আর বিএনপিকে দমিয়ে রাখা যাবে না। এবার রাজপথের আন্দোলনেই দাবি আদায় করতে চায় তারা।

দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বাংলানিউজকে বলেন, আন্দোলনের প্রস্তুতি কেমন সেটা কেউ আগে থেকে বলে না। সবকিছু মোকাবেলা করেই আমাদের আন্দোলন চলছে। আমরা মাঠে নেমেছি। পেছনে যাওয়ার সুযোগ নেই। এ আন্দোলন চলমান থাকবে। গতি আরও বাড়বে। আন্দোলনের প্রকারভেদ পরিবর্তন হবে।

সারা দেশে সরকার ও পুলিশি হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, হামলা করে কোনো সময়ে আন্দোলন দমন করা যায়নি। এবারও পারবে না। হামলায় আন্দোলন বন্ধ হবে না। আরও বেগবান হবে। সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।  

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সরকারবিরোধী আন্দোলনকে চূড়ান্তরূপ দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েই এগোচ্ছে বিএনপি। নির্বাচনকালীন সরকার, জ্বালানির দাম বৃদ্ধি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ জনসম্পৃক্ত ইস্যুতে ২২ আগস্ট থেকে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশব্যাপী কর্মসূচি পালন করেছে দলটি। জেলা-উপজেলা-ইউনিয়ন পর্যায়ে এসব কর্মসূচিতে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের ব্যাপক সারা পেয়ে দলটির মনোবল আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। এ কর্মসূচির পরই ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি ঢাকা মহানগরীকে ১৬টি জোনে ভাগ করে ১৬টি সমাবেশের ডাক দেয়। প্রেসক্লাব আর নয়াপল্টন থেকে বেড়িয়ে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে আন্দোলন ছড়িয়ে দিতেই এ সমাবেশের কর্মসূচি নেয় বিএনপি। ইতোমধ্যে সেই কর্মসূচিও শেষের দিকে। এসব কর্মসূচিতে ব্যাপক লোক সমাগম হয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীদের মনোবলও বেড়েছে বলে মনে করছেন মহানগর নেতারা।   

সূত্র জানায়, আগামী কয়েক মাস এভাবেই মাঠ গরম রাখতে চায় বিএনপি। এরপর সুবিধামতো সময়ে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন ঘোষণারও চিন্তাভাবনা রয়েছে।

এদিকে এক দফার চূড়ান্ত আন্দোলন ঘোষণার আগেই সরকারবিরোধী বৃহত্তর ঐক্য প্রক্রিয়ার কাজ শেষ করারে চেষ্টা চালাচ্ছে বিএনপি। ইতোমধ্যে ২০দলীয় জোটের শরীক ও ২০ দলের বাইরে মিলিয়ে ২২টি দলের সঙ্গে আন্দোলন, নির্বাচন ও সরকার গঠন নিয়ে বৈঠক করেছে বিএনপি। এসব বৈঠকে সবাই সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলনে একমত হয়েছে বলে জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা বলেন, সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছে। তৃণমূল থেকে শুরু করে রাজধানীতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে। হামলা-মামলা কিংবা গ্রেফতার কোনো কিছুতেই রাজপথ না ছাড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাধা আসলে আপাতত পালটা হামলা এড়িয়ে কৌশলে কর্মসূচি পালনে কেন্দ্র থেকে বার্তা পাঠানো হয়েছে। কখন প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে তা সময়মতো হাইকমান্ড থেকে জানিয়ে দেওয়া হবে।

জানা গেছে, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি ঘোষিত রাজধানীর ১৬টি জোনের ১৬টি সমাবেশ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এ কর্মসূচি শেষ হওয়ার পরপরই নতুন করে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।

একটি সূত্র জানায়, সোমবার(২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে ঢাকা মহানগরের কর্মসূচি শেষ হওয়ার পরপরই ১০টি বিভাগে দলটি সমাবেশের ডাক দেবে বিএনপি। এরপর ঢাকায় একটি মহাসমাবেশের ঘোষণা আসতে পারে।  

এ প্রসঙ্গে ২০দলীয় জোটের শরীক ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বাংলানিউজকে বলেন, জনবিচ্ছিন্ন এ সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে এখন হামলা-মামলা-নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে। কিন্তু ইতিহাস বলে, হামলা-মামলা করে কখনও জনগণের আন্দোলন দমানো যায় না। চলমান আন্দোলনও দমানো যাবে না। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও সরকারের দুঃশাসনে অতিষ্ঠ হয়ে মানুষ এখন রাস্তায় নেমে এসেছে। সুতরাং সরকারের পতন আসন্ন। আমরা মাঠে নেমেছি, পিছু হঠার সুযোগ নেই। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা মাঠেই থাকবো।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২
এমএইচ/এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।