ঢাকা: দলীয় কর্মসূচিতে লাঠি নিয়ে এলে ‘খবর আছে’ বলে বিএনপিকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। জাতীয় পতাকার অবমাননা আওয়ামী লীগ মেনে নেবে না বলেও তিনি জানান।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটরিয়ামে স্বেচ্ছাসেবক লীগ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
বিএনপির উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা বিভাগীয় সমাবেশ করবে, আবার ডিসেম্বরে অবরোধ। এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেছে আগের অবরোধই তোলে নাই এখন আবার অবরোধ! আমি বললাম, এটা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে প্রশ্ন করুন- তিনি কেন এটা করবেন। কেন এটা করতে যাচ্ছেন।
বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল সাহেব, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূত মাথা থেকে নামান। সোজা কথা সোজা পথে আসুন, নির্বাচনে আসুন। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো বাংলাদেশেও নির্বাচন হবে। সরকার রুটিন নির্বাচন পালন করবে। মূল দায়িত্ব পালন করবে নির্বাচন কমিশন। সরকারের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাও নির্বাচন কমিশনের অধীনে। সরকার তখন শুধু পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক সরকারের মতো রুটিন সরকার থাকেবে। সরকার না থাকলে কারা চালাবে দেশ? আপনাদের হাতে দেব?
ওবায়দুল কাদের বলেন, কতো গণ-আন্দোলন করলেন। এখনও বলছেন গণ-আন্দোলণ করবেন। ১৩ বছর চলে গেল রোজার ঈদ, কোরবানির ঈদ, পরীক্ষার পর, বর্ষার পর- এসব শুনতে শুনতে। এতো বছরে কতবার যে আন্দলনের ডাক…। আন্দোলন হবে কোন বছর। দেখতে দেখতে ১৩ বছর, মানুষ বাঁচে কয় বছর। বিএনপির আন্দোলনের হাঁক-ডাকে আওয়ামী লীগ ভীত- সেই রকম উদ্ভট চিন্তা কেউ করে না।
বিএনপিকে মোকাবিলার কথা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আসেন মাঠে আসেন। লাঠি নিয়ে এলে খবর আছে। জাতীয় পতাকার সঙ্গে লাঠি- এটা আমরা মেনে নিতে পারবো না। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা আমরা মেনে নেবো না। আওয়ামী লীগ সতর্ক অবস্থায় ও সক্রিয় আছে। সতর্ক অবস্থায় সংযমী হয়ে আমরা থাকবো। রাজপথে ছিলাম। আন্দোলনের ভয় আওয়াম লীগকে দেখাবেন না।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনাদের কাছে অনুরোধ রইলো, এতো অর্জন উন্নয়ন শেখ হাসিনার- দু’চারজনের অপকর্মের জন্য যেন ম্লান না হয়। পরিষ্কার বলে দিতে চাই, আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের পরিচয়ে যারাই অপকর্ম করবে, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। কোনো অপরাধীকে আওয়াম লীগ ছাড় দেবে না। অপকর্মকারীদের জন্য সাফল্য ম্লান হতে পারে না। দোষ করে গুটি কয়েক দোষ হয় পুরো সরকারের, এটা আমরা হতে দেবো না। যারা যেখানে অপকর্ম করছেন সব তথ্য কিন্তু নেত্রীর কাছে আছে। সবার এসিআর আছে। সময় মতো টের পাবেন। কেউ কেউ টের পাচ্ছেন বাকিরা সামনে পাবেন। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়ে জমিদারি করবেন শেখ হাসিনা সেটা কোনোদিনই ক্ষমা করবেন না। জনপ্রতিনিধি জমিদারি মানসিকতা নিয়ে শেখ হাসিনার দলে থাকতে পারে না, বঙ্গবন্ধুর দলে থাকতে পারে না।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মেজবাহুল হক সাচ্চুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বহাউদ্দিন নাছিম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব লাকী ইনাম, বিশিষ্ট শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. অধ্যাপক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ডা. সাইফুদ্দিন আহমেদ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু।
অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে যেসব নবজাতকের জন্ম হয়েছে তাদের শুভেচ্ছা স্মারক উপহার দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২
এসকে/এসএ