ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

পুলিশ বেআইনিভাবে দলীয় নেতাদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করছে: বিএনপি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০২২
পুলিশ বেআইনিভাবে দলীয় নেতাদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করছে: বিএনপি

ঢাকা: পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের হেডকোয়ার্টার থেকে বিশেষ বার্তায় জেলা পুলিশ সুপার ও থানার ওসিদের জেলা-উপজেলা-পৌরসভা ও ইউনিয়নের শীর্ষ পর্যায়ের বিএনপি নেতা, সংগঠক ও অর্থায়নকারীদের নামের তালিকা সংগ্রহ করে তাদের কাছে পাঠাতে বলা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার (৭ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

 

লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি বেতার বার্তা ভাইরাল হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের ঢাকাস্থ স্পেশাল ব্রাঞ্চ হেডকোয়াটার্সের বরাত দিয়ে রাঙামাটি জেলার পুলিশ সুপার গত ২৫ সেপ্টেম্বর বেতার বার্তা নম্বর ৩৯০৯ (রাজনৈতিক) মূলে জেলার সব থানার ওসিদের নির্দেশ দিয়েছেন। বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দল ও  সংগঠনের রাঙামাটি জেলার কমপক্ষে ৮ জন শীর্ষ ব্যক্তি, প্রতি উপজেলার শীর্ষ ৫ ব্যক্তি এবং রাঙামাটি জেলার সব পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের অধীন কমপক্ষে ৫ ব্যক্তি যারা বর্তমান সরকারবিরোধী চলমান গণআন্দোলনে ‘জনবল সংগঠক’ বা অর্থায়ন করেন। কিংবা অন্য কোনোভাবে সহযোগিতা করেন এমন ব্যক্তিদের বিস্তারিত তথ্য যেমন ঠিকানা, মোবাইল নম্বর ও এনআইডি নম্বর ইত্যাদি সংগ্রহ করে তার কাছে প্রথমে ই-মেইল যোগে এবং পরে হার্ডকপি পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছে।

তিনি বলেন, এ বার্তায় ঢাকা স্পেশাল ব্রাঞ্চের মেমো নম্বর ৬১৪(৩৫) তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ এর রেফারেন্স উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ পুলিশের বিশেষ শাখার হেডকোয়ার্টারের নির্দেশনা অনুযায়ীই এ বেতার বার্তা পাঠানো হয়েছে। বিএনপি বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছে যে ঢাকাস্থ স্পেশাল ব্রাঞ্চের নির্দেশনা অনুযায়ী সারা দেশের সব জেলার পুলিশ সুপার নিজ নিজ এলাকার সব থানার ওসিকে উপরোক্ত বেতার বার্তা অনুযায়ী তথ্য সংগ্রহের জন্য অনুরূপ নির্দেশনা জারি করেছেন, যা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর, অপ্রত্যাশিত, অসাংবিধানিক, এখতিয়ার বহির্ভূত, গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী আচরণবিধি পরিপন্থী এবং রাজনৈতিক দল তথা গণমানুষের মতো প্রকাশের স্বাধীনতা ও আন্দোলন সমাবেশ করার মৌলিক অধিকার বিরোধী।

উল্লিখিত বেতার বার্তার বিষয়বস্তু থেকে এটি প্রমাণিত হয় যে বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহ বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের নির্দেশে একটি নীল নকসার অধীনে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে গুড়িয়ে দমন করার জন্য একযোগে কাজ করছে। অথচ বর্তমান গণআন্দোলন চলছে মানুষের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করা, মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে এবং এরমধ্যে গত জুলাই থেকে আমাদের দলের ৫ জন নেতা নিহত হয়েছে (ভোলায় ২ জন, নারায়ণগঞ্জে ১ জন, মুন্সিগঞ্জে ১ জন ও খুলনায় ১ জন) এবং অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হয়েছে। দিনে দিনে আন্দোলনের গতি বাড়ছে।  

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি পুলিশের বিশেষ শাখার এবং রাঙামাটিসহ সব জেলার পুলিশ সুপার প্রদত্ত এ ধরনের বেতার বার্তাকে অবৈধ, স্বেচ্ছাচারী এখতিয়ার বহির্ভূত সিদ্ধান্ত বলে মনে করে। একইসঙ্গে এ ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানায় এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহকে এ ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধ করা এবং ভবিষ্যতে নিজেদের এ ধরনের আইন ও এখতিয়ার বহির্ভূত স্বেচ্ছাচারী কাজ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানায়।   

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলী, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০২২
এমএইচ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।