ঢাকা: নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বিএনপি এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলোর কেউ নির্বাচনে যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
শুক্রবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর লালবাগ কেল্লার মোড়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির জোন-৪ এর লালবাগ, চকবাজার ও কামরাঙ্গীরচর থানা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিদ্যুতের নজিরবিহীন লোডশেডিং, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, নিত্যপণ্য মূল্য বৃদ্ধি, গণপরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে নিহত নুরে আলম, আব্দুর রহিম, শাওনের মৃত্যুর প্রতিবাদ ও খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে ঢাকা মহানগরে ১৬টি ধারাবাহিক সমাবেশের অংশ হিসেবে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। একই দাবিতে এর আগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তরে ১৩টি সমাবেশ হয়। এটি ছিল ১৪তম সমাবেশ।
নজরুল ইসলাম বলেন, এই অবৈধ, ফ্যাসিবাদী, অত্যাচারী, হত্যাকারী সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বিএনপি এবং অন্যান্য বিরোধী দল কেউ নির্বাচনে যাবে না। সেই দাবি আদায়ের জন্য বিএনপি আন্দোলন করছে এবং বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা করছে। সবাই একমত হয়েছি। আমরা এই সরকারের বিদায় চাই। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। সেই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে জনগণের সরকার কায়েম করতে চাই। সেই আন্দোলনে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকবেন।
তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধ করে দেশটাকে স্বাধীন করেছিলাম গণতন্ত্রের জন্য। সেই গণতন্ত্র কি আছে? ভোট দেওয়ার কোনো সুযোগ আছে? আমরা যুদ্ধ করেছিলাম যাতে দেশের মানুষ সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারে, কিন্তু যে দেশে প্রতিদিন খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ে, প্রতিনিয়ত পরিবহনের ভাড়া বাড়ে, চিকিৎসার খরচ বাড়ে, মানুষ অতিষ্ঠ, এরকম একটা দেশের জন্য আমরা যুদ্ধ করিনি।
নজরুল ইসলাম বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি, তেলের মূল্য বৃদ্ধি, পানির মূল্য বৃদ্ধি, ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি, যানবাহনের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ করার কারণে আমার ভাই নূরে আলম, শাওন, আব্দুর রহিম, শাওন প্রধান ও যশোরের আব্দুল আলীমকে খুন করা হলো।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আজকে মানুষ কষ্টে আছে, সে তার কষ্টের কথা বলছে। আর তার সমাধান না করে যে সরকার তার বুকে গুলি চালায় ওই সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই। ওই সরকারকে আমরা মানি না, ওই সরকার জনগণের সরকার নয়। এই সরকারের পরিবর্তে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করাই হচ্ছে আমাদের কাজ। আর যদি সেটা করতে পারি তাহলেই শুধু মানুষের কষ্ট দূর হবে। গুম খুন বন্ধ হবে। সারা দুনিয়ায় বাংলাদেশের যে অসম্মান সেটা দূর হবে।
আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা বলিনি আপনারা পদত্যাগ করেন আমরা ক্ষমতায় বসবো। আমরা বলেছি আপনারা পদত্যাগ করেন, অবৈধ সংসদ বাতিল করেন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করুন। জনগণকে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দেন জনগণ যাকে ভোট দেবে তারা ক্ষমতায় যাবে।
মহানগর দক্ষিণ বিএনপির নেতা মোশারফ হোসেন খোকনের সভাপতিত্বে ও হাজী শহীদুল ইসলাম বাবুলের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, বিএনপি নেতা মীর সরাফত আলী সপু, রফিকুল আলম মজনু, ইশরাক হোসেন, মীর নেওয়াজ আলী, আরিফা সুলতানা রুমা, হাজী মনির হোসেন, আনোয়ার পারভেজ বাদল, মীর আশরাফ আলী আজম, নাদিয়া পাঠান পাপন, যুবদল নেতা গোলাম মাওলা শাহীন, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০২
এমএইচ/এসএ