ঢাকা: নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ইস্যুকে অগ্রাধিকার দিয়ে যুগপৎ আন্দোলন করতে একই ঐকমত্যে পৌঁছেছে বিএনপি জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) একাংশ ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএলএ)।
সোমবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাগপা’র একাংশ ও মুসলিম লীগের সঙ্গে বৈঠক শেষে একথা জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ফখরুল বলেন, অবৈধ অনির্বাচিত গণতন্ত্র হরণকারী সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে আমরা আজকে দুটি দলের সঙ্গে সংলাপে একমত হয়েছি। নতুন একটা নির্বাচন কমিশন গঠনের মধ্যে দিয়ে দেশে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচনের দাবি নিয়ে এসেছি। এ দাবিতেই তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা দুই দলই একমত হয়েছে। আগামী দিনে অন্যান্য দলের সঙ্গে আলোচনা করে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য দাবি নিয়ে জনগণের সামনে উপস্থিত হবো।
খালেদা জিয়া-তারেক রহমানসহ রাজনৈতিক কারণে প্রায় ৩৫ লাখ মানুষের মামলা আছে তা প্রত্যাহার করতে হবে এ বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। আরও অনেকগুলো দাবি নিয়ে আমরা একমত হয়েছি। আগামী দিনে এই দাবিগুলো সামনে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তুলবো।
এ সময় জাগপার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর বলেন, বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার সারাদেশে হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন করছে। আমাদের ৪০-৪৫লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। শত শত মানুষকে হত্যা করেছে। সারাদেশে ধর্ষণের খেলায় মত্ত হয়েছে। এই ফ্যাসিস্ট জালিম সরকারের আওতায় মানুষ দুর্বিসহ জীবন যাপন করছে। আজকে তেলের মূল্যবৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধিসহ সবকিছু নিয়ে আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করছি।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন গত কয়েকদিনে আমাদের ৫জন সাথী শহীদ হয়ে গেছে। সেজন্য এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটাতে হবে। নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়া আমাদের কোনো পথ নেই। তাই যুগপৎভাবে যে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে; সবাই মিলে এই স্বৈরাচারী সরকারের পতন নিশ্চিত করে আমরা গণতন্ত্র নিশ্চিত করবো।
মুসলিম লীগের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অ্যাডভোকেট জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী বলেন, আওয়ামী স্বৈরাচারী সরকারের জুলুম অত্যাচার নির্যাতন থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে হবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে বিএনপির সাথে যুগপৎ এবং ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে আমরা একাত্মতা ঘোষণা করেছি।
তিনি বলেন, আমাদের আলাদা একটা প্রস্তাবনা আছে। যেহেতু বিএনপি বৃহৎ জনগণের দল, তাদের নেতৃত্বে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত সকল রাজনৈতিক দলকে এক প্লাটফর্মে এসে আওয়ামী স্বৈরাচারীর পতনের জন্য সরকারের বিরুদ্ধে একক প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন করে তাদের পতন ঘটাতে হবে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে পদত্যাগ করে নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করতে হবে। আমরা সব ব্যাপারে বিএনপির নীতিমালার সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করেছি। আমরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন এবং যুগপৎ আন্দোলনে অঙ্গীকারবদ্ধ।
সংলাপে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির পক্ষ থেকে অংশ নেন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমান, এস এম শাহাদাত, রকিব উদ্দিন চৌধুরী মুন্না, ডা. আওলাদ হোসেন শিল্পী, আমিনুল ইসলাম বকুল, মুন্সী ফজলুর রহমান, মোহাম্মদ হোসেন মোবারক, মীর আমির হোসেন আমু। মুসলিম লীগের পক্ষে অংশ নেন জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, আকতার জাহান রুকু, আজিজুর রহমান লিটন, সরওয়ার ই আলম, ব্যারিস্টার নাসিম খান, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মিনহাজ উদ্দিন, মোশারেফ হোসেন তারা ও মনোয়ার হোসেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২২
এমএইচ/এমজে