ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সিন্ডিকেটের প্রভাবেই কী বাড়ছে ডিম-মুরগির দাম!

নিশাত বিজয়, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২২
সিন্ডিকেটের প্রভাবেই কী বাড়ছে ডিম-মুরগির দাম!

ঢাকা: ঢাকার বাজার তদারকির ফলে কমে গিয়েছিল ডিম ও মুরগির দাম। কিন্তু হঠাৎ করে আবারও এগুলোর দাম বেড়ে গেছে।

 

ক্রেতাদের অভিযোগ, সিন্ডিকেটের প্রভাবেই বাড়ছে ডিম-মুরগির দাম। আর দাম নিয়ন্ত্রণে বাজার তদারকির অভাবের কথাও বলছেন ক্রেতারা।

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর কারওয়ানবাজার, নিউমার্কেট, আজিমপুর ঘুরে এসব চিত্র উঠে এসেছে।

এসব বাজারে আগের দামে বিক্রি হচ্ছে ফার্মের মুরগির ডিম। ফার্মের লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা।  

অন্যদিকে হাঁসের ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ থেকে ২০০ টাকা। দেশি মুরগির ডিমের ডজন ২২০ থেকে ২২৫ টাকা।

বাজারে দাম বেড়েছে বিভিন্ন জাতের মুরগিরও। ব্রয়লার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা। লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৯০ থেকে ৩০০ টাকায়।

কারওয়ান বাজারের মুরগি বিক্রেতা আরিফ বলেন, বাজারে মুরগির সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে।

বাজারে ডিমের দাম নির্ধারণ করে কারা?
দেশে প্রতিদিন ৫ কোটি লেয়ার মুরগির ডিম উৎপাদন হয়। এরমধ্যে প্রান্তিক খামারিরা দেশের মোট উৎপাদিত ডিমের ৫০ শতাংশ উৎপাদন করলেও দাম নির্ধারণে কোনো ভূমিকা নেই তাদের। বাকি ৫০ শতাংশ ডিম উৎপাদন করে ১৩-১৫ বৃহৎ কোম্পানি।

বাজারে ডিমের দাম নির্ধারণ করে এই ১৩-১৫ বৃহৎ ডিম উৎপাদনকারী কোম্পানি, আড়ৎদার ও খুচরা বিক্রেতারা।

বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের মতে, প্রতিটি ডিম উৎপাদনে খরচ হয় সাড়ে আট টাকা কিন্তু ডিমের দাম নির্ধারণে সমন্বিত কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় বৃহৎ কোম্পানিগুলো ইচ্ছেমতো ডিমের দাম নির্ধারণ করে।

তাদের অভিযোগ, কোম্পানি নির্ধারিত দরে আড়ৎদারেরা ডিম কিনলেও খামারিদেরকে কম দাম দেওয়া হয়। এসব ক্ষেত্রে দেওয়া হয় না কোনও ক্রয়-বিক্রয়ের রশিদও।

অতিরিক্ত দাম আড়ৎদারদের সঙ্গে জড়িত ছিল বৃহৎ কোম্পানিগুলোও। কিন্তু দাম নির্ধারণ করার দায়ে আড়তে অভিযান চালানো হলেও বৃহৎ কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

ডিমের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে যা বলছেন খামারিরা
চাহিদার তুলনায় ডিমের সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হয়েছে। প্রশাসনের চাপাচাপির কারণে দাম একসময় কমে গেলেও  মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাবে আবারও দাম বেড়েছে। চাহিদা বাড়লেও উৎপাদন একই আছে এটাও দাম বাড়ার কারণ বলে মনে করেন খামারিরা।

বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের মতে, গত ৬-৭ মাসে পোলট্রি খাদ্যের দাম ৪০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। বেড়েছে ওধুষের দাম। বড় শিল্পপতিরা ‘সিন্ডিকেট’ করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন।

খাদ্যের দাম ১ টাকা কমালে, ডিমের দাম ৫০ পয়সা কমিয়ে দেওয়া সম্ভব বলে মত বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের।  

অন্যদিকে ঢাকায় আড়তদার ও খুচরা বিক্রেতারা  প্রতি ডিমে ৩ থেকে ৪ টাকা লাভ করেন বলে অভিযোগ প্রান্তিক খামারিদের।

যশোর জেলার খামারী কেরামত আলী বলেন, আমরা ডিমপ্রতি ৯ টাকা ১০ পয়সা পাই। বাকিটা বিভিন্ন সিন্ডিকেট দাম বাড়াচ্ছে।  

ডিমের দর বৃদ্ধির বিষয়ে যা বলছেন আড়ৎদারেরা
সমিতি সূত্র বলছে, গত ১০ মাসে মুরগির খাবারের দাম বস্তাপ্রতি (৫০ কেজির) প্রায় ১ হাজার টাকা বেড়েছে। এজন্য ডিমের দাম বেড়েছে।  

সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীনের ব্যবস্থাপক নাসির উদ্দিন বলেন, ডিমের সরবরাহ যখন কমে যায় ঢাকা, সাতক্ষীরা, কিশোরগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন আসতে থাকে, ডিম লাগবে। চাহিদা বাড়ার কারণে দাম বেড়ে যায়।  

বাংলাদেশ সময়:  ১৭২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২২ 
এনবি/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
Veet