ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

গ্যাস সংকট সহনীয়, স্বাভাবিক সোমবার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫১ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৩
গ্যাস সংকট সহনীয়, স্বাভাবিক সোমবার

ঢাকা: সারাদিন ধরে চলা গ্যাস সংকট রোববার সন্ধ্যা নাগাদ সহনীয় হয়ে এসেছে। পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে সোমবার ভোর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।

এমন তথ্য দিয়েছেন তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্টিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রকৌশলী নওশাদ ইসলাম।
 
নওশাদ ইসলাম জানান, বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ডে ১২ ঘণ্টা গ্যাস উৎপাদন বন্ধ থাকায় পাইপলাইনে যেটুকু গ্যাস রিজার্ভ থাকে তা নিংড়ে চলে গেছে। যে কারণে শূন্য পাইপ পূরণ হতে কিছুটা সময় লাগছে।
 
তিনি জানান, “রোববার সকালে বা দিনের যে পরিমাণ সংকট ছিল তা আর এখন নেই। বাসা-বাড়ি থেকে আর কোনো অভিযোগ আসছে না। রাত ৯টার দিকে সিএনজি পাম্প চালু হবে। আশা করছি, তারাও গ্যাসের মোটামুটি চাপ পাবে। ”
 
তিতাসের কোন সমস্যা নেই। শেভরনের কম্প্রেসারে সমস্যা রয়ে গেছে। মেরামত না করা পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ মাত্রায় গ্যাস সরবরাহ সম্ভব নয় বলেও জানান তিতাস এমডি।
 
কবে নাগাদ কম্প্রেসার মেরামত করা সম্ভব হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিতাস এমডি বলেন, কম্প্রেসারটি শেভরনের। তারা জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে নির্দিষ্ট সময় বলা সম্ভব নয়।

তিতাসের একটি সুত্র জানিয়েছে, বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ড থেকে দৈনিক ৭ কোটি ঘনফুন গ্যাস সরবরাহ করতো শেভরন। কম্প্রেসার বসানোর পর থেকে ৮ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করছে। সে হিসেবে ধরলে কম্প্রেসার মেরামত না হওয়া পর্যন্ত দৈনিক ১ কোটি ঘনফুট গ্যাস কম সরবরাহ থাকবে।
 
উল্লেখ্য, বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ডের সঞ্চালন লাইনে শনিবার সন্ধ্যায় লিকেজ ধরা পড়ে। দ্রুত ওই গ্যাসফিল্ড থেকে গ্যাস উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে গ্যাসের মোট উৎপাদন নেমে আসে ১৪ কোটি ঘনফুটে। এ কারণে রাজধানীসহ সারা দেশে তীব্র গ্যাস সংকট শুরু হয়।
 
১২ ঘণ্টা চেষ্টার পর রোববার সকাল সোয়া ৬টায় লাইন মেরামত করার পর সরবরাহ শুরু হয়েছে। তবে পাইপলাইন নিংড়ে যাওয়ায় অনেক এলাকায় এখন পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি গ্যাস সরবরাহ।
 
বাসা-বাড়ি, হোটেল-রেস্তোরাঁয় রান্না বন্ধ থাকায় মানুষজন দুর্ভোগে পড়েন। কোনো কোনো এলাকায় চুলো জ্বলেছে টিপ টিপ করে। বাসা থেকে সকালের নাস্তা সারতে হয়েছে হোটেল গিয়ে। সিদ্ধেশ্বরী এলাকার বাসিন্দা মাসুম মিয়া জানিয়েছেন, সকালে হোটেলে গিয়েও খাবার পাননি। পরে রুটি-কলা খেয়ে অফিসে যেতে হয়েছে তাকে।

প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী দুপুরে জানান, শনিবার বিবিয়ানা গ্যাসফিল্ডে ছিদ্র ধরা পড়ায় সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেটা এরই মধ্যে দ্রুততার সঙ্গে মেরামত সম্ভব হয়েছে। তবে কম্প্রেসারে সমস্যা দেখা দিয়েছে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) জানিয়েছে, গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় কমপক্ষে ১ হাজার ৫’শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ থাকে দিনের বেলায়। ফলে দিনের বেলায় ও সন্ধ্যায় লোডশোডিং দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়েছে।
 
পিডিবির জনসংযোগ পরিদফতরের পরিচালক সাইফুল হাসান চৌধুরী জানান, সন্ধ্যার দিকে গ্যাস সংকট অনেকটা সহনীয় হয়ে এসেছে। তবে সন্ধ্যায় প্রায় ৭শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হয়েছে গ্যাস সংকটের কারণে।
 
শেভরন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে উৎপাদিত গ্যাসের এক তৃতীয়াংশ সরবরাহ করছে বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র থেকে। এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে দৈনিক গ্যাস উৎপাদন করা হচ্ছে সাড়ে আট কোটি ঘনফুটের মতো। অন্যদিকে দেশে বর্তমানে সব গ্যাসক্ষেত্র থেকে উৎপাদিত হচ্ছে সাড়ে বাইশ কোটি ঘনফুটের মতো।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৩
ইএস/ সম্পাদনা: অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর- eic@banglanews24.com

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।