ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

তেল আমদানির অনুমতি পেল সামিট গ্রুপ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৩
তেল আমদানির অনুমতি পেল সামিট গ্রুপ

ঢাকা: সামিট গ্রুপকে ১ লাখ টন ফার্নেস অয়েল আমদানির অনুমতি দিয়েছে জ্বালানি মন্ত্রণালয়। কোম্পানিটির নারায়নগঞ্জ(মদনগঞ্জ-১০২ কুইক রেন্টাল)বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য এই অনুমতি দেওয়া হয়েছে।



বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন(বিপিসি)সূত্র জানায়, সামিটকে ১ বছরের তেল ১ লাখ টন তেল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর জন্য তাদের কোনো ট্যাক্স দিতে হবে না। উল্টো সরকারই ৯ শতাংশ সার্ভিস চার্জ দেবে সামিট পাওয়ারকে। বিপিসি তাদের এই আমদানি প্রক্রিয়া তদারকি করবে।

রোববার সামিটকে চূড়ান্ত অনুমতিপত্র দেওয়া হয় বলে জ্বালানি বিভাগ সূত্র বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছে।

সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর পরিবারের মালিকানাধীন এই কোম্পানিতে নানারকম অনৈতিক সুবিধা দিয়ে আসছে সরকার। কোম্পানিটির হাতে গ্যাস ভিত্তিক বৃহৎ ২টি বিদ্যুৎকেন্দ্র তুলে দিলে তারা নির্মাণ করতে না পারলেও দফায় দফায় সময় বাড়ানো হচ্ছে।

সামিটের সঙ্গে বিবিয়ানা-২ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে চুক্তি সই করা হয় ২০১১ সালে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদনে আসার কথা চলতি বছরের আগস্ট মাসে। কিন্তু আজও বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ কাজই শুরু করতে পারেনি সামিট পাওয়ার। এ কাজে প্রায় তিন বছর সময় লাগবে।

আইন অনুযায়ী সামিট পাওয়ারের চুক্তি বাতিল ও তাদের ৩০ লাখ (তিন  মিলিয়ন) ডলার জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার কথা। কিন্তু মন্ত্রীর পরিবারের কোম্পানি হওয়ায় বিদ্যুৎ বিভাগ সামিটের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে সাহস পাচ্ছে না। তারা নজিরবিহীনভাবে দফায় দফায় সময় বাড়িয়ে যাচ্ছে।

সর্বশেষ সময় ছিল রোববার পর্যন্ত (৩১ মার্চ)। সেদিন আবারও জুন মাস পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। অথচ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড অনেক আগেই কাজটি বাতিল করে দিয়েছিল।

“বিবিয়ানা-১ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি একটি আইপিপি(ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্ল্যান্ট),এখানে সরকারের অর্থায়নের কোনো দায় থাকে না। অর্থায়নসহ কোন কোম্পানি থেকে মালামাল আনবে এবং তাদের অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করেই টেন্ডারে অংশ নেবে এটাই বিধান। ”
 
জানা গেছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেলের প্রয়োজন। কিন্তু বিপিসি  এককভাবে আমদানি করে বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এজন্য জ্বালানি বিভাগ থেকে বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে নিজ নিজ ব্যবস্থাপনায় প্ল্যান্টের চাহিদা অনুযায়ী জ্বালানি তেল আমদানির ব্যবস্থা করার লক্ষে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে অনুরোধ করে।

বিদ্যুৎ বিভাগে অনুষ্ঠিত এক সভায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন জানায়, বিপিসি কর্তৃক সব পাওয়ার প্ল্যান্টে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা সম্ভব নয়। বেসরকারিভাবে জ্বালানি তেল আমদানির লক্ষে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মতামত দেওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটি বেসরকারি খাতে তেল আমদানির পক্ষে মতামত দেয়। বেসরকারি খাতে ফার্নেস অয়েল আমদানির ক্ষেত্রে টোটাল সার্ভিস চার্জ ৯ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। প্রতি বছর জুলাই মাসে এ সার্ভিস চার্জ রিভিউ করার পক্ষে মত দেয়।

১৯৯৮ সালে স্থাপন করা খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডকে তাদের জ্বালানি তেল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে ও ১০ শতাংশ সার্ভিস চার্জ দেওয়া হচ্ছে।

বিদ্যুৎকেন্দ্রের বেসরকারি মালিকরা তাদের প্ল্যান্টের প্রয়োজনে ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণ জ্বালানি তেল আমদানি করতে পারবে। এর ফলে সরকারের দুই দিক দিকেই ক্ষতি হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ সময়: ০২৪০ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৩
ইএস/সম্পাদনা: প্রভাষ চৌধুরী, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।