ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

পরিকল্পনা নেই গোয়ালপাড়া সাবস্টেশন স্থাপনে!

মফিজুল সাদিক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০১৪
পরিকল্পনা নেই গোয়ালপাড়া সাবস্টেশন স্থাপনে!

ঢাকা: পরিকল্পনার অভাবে ঠিক সময়ে বাস্তবায়ন হয়নি ‘ট্রান্সমিশন ইফিসিয়েন্স ইম্প্রুভমেন্ট থ্রু রি-অ্যাকটিভ পাওয়ার কমপেনশন অ্যান্ড রি-ইনফোর্সমেন্ট অব গোয়ালপাড়া সাবস্টেশন’ প্রকল্পটির।

ফলে, একে একে চারবার সময় বৃদ্ধি করতে হয়েছে।

তারপরেও অর্থের অভাবে প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশের কাজ অম্পূর্ণ রেখেই ২৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ প্রকল্প ব্যয় কমানো হয়েছে।
 
ভোল্টেজ ইম্প্রুভ ও সিস্টেম লস কমানোর লক্ষ্যে ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে একনেক সভায় প্রকল্পটি পাস হয়; যার বাস্তবায়ন কাল ধরা হয় ২০১০ সালের জুন মাস। ওই সময় প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল, ২১৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। পরবর্তীতে প্রকল্প ব্যয় ২৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ কমিয়ে ১৬১ কোটি ৯০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ব্যয় অপরিবর্তিত রেখে প্রকল্পটির মেয়াদ প্রথম মেয়াদে ২০১১ সালের জুন, দ্বিতীয় মেয়াদে ২০১২ সালের ডিসেম্বর, তৃতীয় মেয়াদে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

এ ছাড়া চতুর্থ মেয়াদে ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড।
 
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্ম-প্রধান মো. নজরুল ইসলাম জানান, প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্য আবারও সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। কারণ, বিভিন্ন ক্যাপাসিটর ব্যাংক স্থাপনের স্থান ও ক্ষমতা পরিবর্তন, অনুমোদিত ডিপিপিতে সংস্থানকৃত ০ দশমিক ২৫ একর ভূমি বাদ, সিডি-ভ্যাট ব্যয় ৩৫ কোটি ৪৯ লাখ টাকা থেকে ১৫ কোটি টাকা কমানো হয়েছে।
 
এছাড়া নতুন আইটেমে আড়াই কোটি টাকা ব্যয় হ্রাস, নির্মাণকালীন সুদ (আইডিসি) ব্যয় ১১ কোট ২ লাখ থেকে ১৩ কোটি ৭৩ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। প্রাইস কন্টিজেন্সি খাতে ব্যয় বৃদ্ধি, স্থাপন ব্যয় বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে প্রকল্পটি সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে বলেও জানান নজরুল ইসলাম।
 
নজরুল ইসলাম জানান, প্রস্তাবিত সংশোধিত প্রকল্পের ব্যয় ২১৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকার স্থলে ১৬১ কোটি ৯০ লাখ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে করে প্রকল্পটির ব্যয় ২৫ দশমিক ৮৮ ভাগ হ্রাস পেয়েছে।
 
পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য মতে, প্রকল্পের ব্যয় হ্রাস পেলেও কিছু ক্ষেত্রে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। যেমন- নির্মাণ সুদ (আইডিসি) বৃদ্ধি এবং ডেভেলপমেন্ট ক্যাপিটাল ফান্ড (এআইটি) গঠন করায় ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে।
 
অপরদিকে, কিছু আইটেম যেমন- টুলস ও প্ল্যান্টস, ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি, অনাবাসিক ভবন নির্মাণ ব্যয় হ্রাস পেয়েছে এবং প্রকল্পের ব্যয় প্রাক্কলন যথাযথ হয়নি মর্মে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়।
 
ভোল্টের বৃদ্ধি ও সিস্টেম লস কমানোর লক্ষ্যে প্রকল্পটি ৬ বিভাগের জেলা সদরে বাস্তবায়িত হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বার বার সময় ও ব্যয় হ্রাস/বৃদ্ধির জন্য প্রকল্পটি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারছে না। পরিকল্পনার অভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নের স্থান নির্ধারণ নিয়ে নানা সংকট তৈরি হয়েছে।
 
পরিকল্পনা কমিশনের এক প্রতিনিধি জানান, প্রকল্পের অনুমোদিত ডিপিপিতে ঢাকার কল্যাণপুরে ক্যাপসিটর ব্যাংক স্থাপনের জন্য ০ দশমিক ২৫ একর জমি অধিগ্রহণের সংস্থান থাকলেও প্রস্তাবিত ডিপিপিতে এ ভূমি অধিগ্রহণ সম্ভব না হওয়ায় কল্যাণপুরের পরিবর্তে সাভারে বিদ্যমান উপকেন্দ্র ক্যাপসিটার ব্যাংক স্থাপন করা হবে।

এ ক্ষেত্রে ঢাকা শহরের ভোল্টেজ লেভেল সহনীয় পর্যায়ে রাখার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
 
এছাড়া প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন স্থানে ২৬টি ক্যাপসিটর ব্যাংক স্থাপন করা ছাড়াও বাংলাদেশের অন্যান্য জায়গায় ক্যাপসিটর ব্যাংক স্থাপনেরও পরিকল্পনা আছে বলে জানান তিনি।
 
প্রকল্প পরিচালক মো. মাসুম আলম বকশী জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ভোল্টেজ ইম্প্রুভ হবে। সিস্টেম লস কমবে। এখনও অনেক কাজ অসম্পূর্ণ আছে। তাই, আরো সময় বৃদ্ধির প্রস্তাবের পাশাপাশি ব্যয় কমানোরও সুপারিশ করা হয়েছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০০৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।