ঢাকা: দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন গ্যাসভিত্তিক কম্বাইন্ড সাইকেল স্থাপন করবে আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড (এপিএসসিএল)।
মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
এপিএসসিএল সূত্র জানায়, ‘আশুগঞ্জ ৪০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট (পূর্ব) প্রকল্পের আওতায় এই উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৯৩১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এরমধ্যে প্রকল্প সাহায্য ২ হাজার ৩৫৮ কোটি ২৮ লাখ, সরকারি নিজস্ব অর্থায়ন ৪২০ কোটি ৬৮ লাখ এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে ১৫২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। প্রকল্পটি জুলাই ২০১৫ থেকে জুন থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে।
আশুগঞ্জের পূর্ব প্রান্তে নতুন করে আরও একটি ৪০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের কথা নিশ্চিত করে এপিএসসিএলের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সাজ্জাদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, দেশে বিদ্যুতের ঘাটতি দূরীকরণ এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পের মাধ্যমে নির্ভরযোগ্য এবং স্থায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন নিশ্চিত করতেও প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এপিএসসিএল সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় ২৮৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন গ্যাস টারবাইন স্থাপন করা হবে। ১৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন স্টিম টারবাইনসহ ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইনের উন্নয়ন করা হবে। প্রকল্পের আওতায় কিছু নির্মাণ কাজ হবে। এরমধ্যে পাইলিং, ফাউন্ডেশন স্থাপন এবং ভবন নির্মাণ কাজ রয়েছে। গ্যাস টারবাইন স্টেপ আপ ট্রান্সফরমার ও গ্যাস ইন্সুলেটেড সুইচগিয়ার (জিআইএস) সিস্টেম স্থাপন করা হবে।
প্রকল্পের আওতায় কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ হবে। এরমধ্যে অন্যতম ১০ হাজার ৬৩২ বর্গফুট আবাসিক ভবন নির্মাণ, ৮ হাজার ঘনমিটার ভূমি উন্নয়ন ও দুটি ভবন নির্মাণ। প্রকল্পের আওতায় ৬টি যানবাহন বরাদ্দ ও ১৮ জন জনবল নিয়োগ দেয়া হবে।
আশুগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি রাজধানী ঢাকা শহর থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে মেঘনা নদীর তীরে অবস্থিত। আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি পাঁচটি তাপ-বিদ্যুৎ ইউনিট, একটি কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট এবং একটি গ্যাস ইঞ্জিন প্ল্যান্টের সমন্বয়ে গঠিত। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে ঢাকা শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে আশুগঞ্জের পূর্ব পাশে নতুন প্রকল্পটি হাতে নিতে যাচ্ছে এপিএসসিএল।
এপিসিএল সূত্র জানায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০৩০ সাল নাগাদ বিদ্যুতের চাহিদা হবে প্রায় ৩৪ হাজার মেগাওয়াট। ২০৩০ সালে বিদ্যুতের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের লক্ষ্যেই প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে বিদ্যুৎ খাতের মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী ২০২১ সাল নাগাদ ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্যে সরকার বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন অব্যাহত রেখেছে। বর্তমান প্রকল্পটি প্রেক্ষিত পরিকল্পনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। প্রকল্পের মাধ্যমে ২০২০ সালে ৪০০ মেগাওয়াট জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে বলেও জানায় এপিসিএল সূত্র।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৫
এমআইএস/এমজেএফ