আশুগঞ্জ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) থেকে ফিরে: একক অঞ্চল হিসেবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিক থেকে এক নম্বরে রয়েছে আশুগঞ্জ। যে কারণে বিদ্যুতের সবচেয়ে বড় হাব বলা হয় আশুগঞ্জকে।
এতোদিন প্রায় সাড়ে সাতশ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেই সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে। এই হাবে আরও তিনটি নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র যুক্ত হচ্ছে বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর)।
এই তিনটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে ৩৯০ মেগাওয়াট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কেন্দ্র তিনটি উদ্বোধন করবেন।
নতুন তিনটি যুক্ত হলে আশুগঞ্জের উৎপাদন ক্ষমতা দাঁড়াবে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। আরও বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে মহাপরিকল্পনার অংশ হিসাবে আশুগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্র পুরাতন ও অধিক গ্যাসে কম বিদ্যুৎ উৎপাদনকারি ইউনিটের স্থলে নতুন বৃহৎ ইউনিট স্থাপনের উদ্যোগ নেয়।
এরই অংশ হিসেবে ২০১৩ সালের ২০ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশি-বিদেশি, সরকারি-বেসরকারি অর্থায়নে নতুন ৫টি ইউনিটের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন।
ইউনিটগুলি হল- ২২৫ মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট, ৪৫০ মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট (সাউথ), ৪৫০ মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট (নর্থ, ২০০ মেগাওয়াটের মডিউলার পাওয়ার প্লান্ট ও বেসরকারি ৫১ মেগাওয়াটের মিডল্যান্ড পাওয়ার প্লান্ট।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কেন্দ্র তিনটির মধ্যে ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রে সিম্পল সাইকেল অর্থাৎ ১৪৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।
পুরোপুরি উৎপাদনে আসবে চলতি বছরের নভেম্বরে।
আশুগঞ্জ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (এপিএসসিএল) নির্মিত এ কেন্দ্রটি স্থাপনে ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ১১৬ কোটি টাকা।
এপিএসসিএল ও ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ পিপিপির আওতায় ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেছে। বর্তমানে এ কেন্দ্র থেকে ১৯৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। কেন্দ্রটি মে মাস থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে।
গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্র তিনটির মধ্যে তৃতীয় কেন্দ্রটি স্থাপন করেছে মিডল্যান্ড পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড। ৫১ মেগাওয়াট ক্ষমতার কেন্দ্রটিতে অর্থায়ন করেছে বিশ্বব্যাংক।
এপিএসসিএল’র ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এএমএম সাজ্জাদুর রহমান জানান, আশুগঞ্জের কাছেই রয়েছে গ্যাস ফিল্ড, আর এখানে রয়েছে সহজ নৌ পথ। এ ছাড়া বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে যুক্ত থাকায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে।
যে কারণে আশুগঞ্জে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সবচেয়ে বড় হাব তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। সে লক্ষেই দ্রুত এগিয়ে চলছে কাজ।
এএমএম সাজ্জাদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আশুগঞ্জে নতুন যে বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে তার দক্ষতা অনেক বেশি। এজন্য অল্প গ্যাসে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। নতুন করে গ্যাস বরাদ্দ করার প্রয়োজন হচ্ছে না। আগের বরাদ্দ দেয়া গ্যাস দিয়েই চলবে এসব নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০১৫
এসআই/জেডএম