ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

গ্যাস না পেলে বন্ধের আশঙ্কা ঘোড়াশাল নতুন ইউনিট

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৬
গ্যাস না পেলে বন্ধের আশঙ্কা ঘোড়াশাল নতুন ইউনিট

ঘোড়াশাল ৩৬৫ মেগাওয়াট নতুন কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র (সিসিপিপি) পরিচালনায় যে পরিমাণে গ্যাসের প্রয়োজন হবে, তা পেট্রোবাংলা থেকে পাওয়ার বিষয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

ঢাকা: ঘোড়াশাল ৩৬৫ মেগাওয়াট নতুন কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র (সিসিপিপি) পরিচালনায় যে পরিমাণে গ্যাসের প্রয়োজন হবে, তা পেট্রোবাংলা থেকে পাওয়ার বিষয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

দ্বৈত জ্বালানির (গ্যাস-তেল) সংস্থান না থাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি অকার্যকর হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)।

নতুন ইউনিটটিতে প্রতিদিন ৩৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যু‍ৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন হবে ৬৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।  

গ্যাস সংকটের কারণে বাধ্য হয়ে সরকার গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশাপাশি তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। কিন্তু এ কেন্দ্রটি শুধুমাত্র গ্যাসভিত্তিক। দেশে গ্যাসের চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে, কমছে উৎপাদন।   গ্যাস সংকটে বিদ্যমান বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোও চলছে না ঠিকমতো। তবুও গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ চলছে।

আইএমইডি’র এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে তার সামর্থ্য অনুসারে পরিচালনার জন্য সঠিক চাপের প্রয়োজনীয় গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে সুপারিশ করেছে আইএমইডি। গ্যাসের ক্রম হ্রাসমান মজুদের বিষয়টি বিবেচনা করে পরবর্তী পর্যায়ে দ্বৈত জ্বালানি ব্যবহারেরও নির্দেশ দিয়েছে।

 আইএমইডি সূত্র জানায়, সরেজমিনে ঘুরে সিসিপিপি নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছেন আইএমইডি’র পরিচালক (শক্তি) নাসিমা মহসিন। প্রতিবেদনে নানা সমস্যার কথা উল্লেখ করেছে আইএমইডি।

বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নিয়ে আইএমইডি’র প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে, প্রথম থেকেই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে নানা সমস্যা দেখা গেছে।   উৎপাদিত বিদ্যুৎ ইভাকুয়েশনের জন্য দু’টি বে’র প্রয়োজন হবে। একটি বে প্রস্তুত থাকলেও অন্যটি এখনও নির্মিত হয়নি।

চলমান প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদিত হয় ২০১৪ সালের ৮ এপ্রিল। প্রকল্পটি অনুমোদনকালে বাস্তবায়ন ৩ মাস আগে থেকেই শুরুর জন্য নির্ধারণ করায় সার্বিক অগ্রগতি কমেছে।
 
প্রকল্পের সার্বিক বাস্তবায়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। ২০১৫-১৬ অর্থবছর পর্যন্ত প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ২ হাজার ৫১২ কোটি টাকা। কিন্তু অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৮৪০ কোটি টাকা, যা ৩৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

আইএমইডি’র প্রতিবেদনে প্রকিউরমেন্ট সংক্রান্ত তথ্যে দেখা গেছে, প্যাকেজের ক্রয়ের চুক্তির মেয়াদ ২০১৮ সাল পর্যন্ত। অথচ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মেয়াদ ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। আরও দেখা গেছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের জন্য ট্রান্সফরমার, ২৩০ কেভি সাব-স্টেশন এবং ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট কেনা হবে না।

 বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নতুন ইউনিটের নির্মাণ সম্পন্ন হলে কাঁচামাল হিসেবে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহৃত হবে। অথচ নতুন ইউনিটে গ্যাস দিতে পারবে না বলে জানিয়েছে এখন পেট্রোবাংলা। তবে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ঘোড়াশালে এক ও দুই নম্বর ইউনিট ২০১৭ সালে বন্ধ হয়ে যাবে। তখন দুই ইউনিটের গ্যাস দিয়ে চলবে নতুন ইউনিট।

 প্রকল্পের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘ঘোড়াশাল নতুন ইউনিটে প্রতিদিন ৬৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন।

তা পেট্রোবাংলা থেকে পাওয়ার বিষয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তবে এ গ্যাস না পেলেও বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হবে না। কারণ, যদি পেট্রোবাংলার গ্যাস না পাই, তাহলে আমরা পুরনো ইউনিটের গ্যাস দিয়ে নতুন ইউনিট চালাবো। তবে আইএমইডি’র প্রতিবেদনের সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করছি’।

 বাংলাদেশ সময়: ০৯১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৬
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।