ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশ উদাহরণ

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৭
পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশ উদাহরণ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে

ঢাকা: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বাস্তবায়ন কাজ সফলভাবে এগিয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ এই ধরনের প্রকল্পে নতুন প্রবেশ করা দেশগুলোর জন্য উদাহরণ। এমনটাই মনে করছে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি অ্যাসোসিয়েশন(আইএইএ)।

নিউক্লিয়ার পাওয়ার সেক্টরে প্রবেশ করা নতুন দেশ হিসেবে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশের অগ্রগতি আইএইএ’র কাছে প্রশংসিত হচ্ছে বলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান জানিয়েছেন।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা জানান।

এসময় তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজের অগ্রগতির বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেন। সেই সঙ্গে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় সদ্য অনুষ্ঠিত আইএইএ’র সম্মেলন নিয়েও কথা বলেন।

এ প্রসঙ্গে ইয়াফেস ওসমান বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে আমরা যেভাবে এগোচ্ছি সেটা আইএইএ-এর কাছে প্রশংসিত হয়েছে। যেসব দেশ নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্রকল্পে নতুন প্রবেশ করেছে বাংলাদেশকে সেসব দেশের জন্য উদাহরণ মনে করে আইএইএ।

 বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান-ফাইল ফটোআইএইএ’র সম্মেলনে অংগ্রহণ প্রসঙ্গে মন্ত্রী জানান, সম্মেলনে প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমাদের মতবিনিময় হয়েছে। আমরা আমাদের কাজের অগ্রগতি, অভিজ্ঞতা বিনিময় করেছি। পরমাণুশক্তির ব্যবহারে আমরা নতুন দেশ এবং আমাদের নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট বাস্তবায়নে আমরা কিভাবে এগোচ্ছি সেটা আমরা আইএইএ’কে অবহিত করেছি। সম্মেলনে আমরা একটা স্টল দিয়েছিলাম। সেখানে ভিডিও ক্লিপিং এর মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প বাস্তবায়নে আমরা কিভাবে কাজ করছি, কাজের অগ্রগতিগুলো সেখানে তুলে ধরা হয়েছে।

এই প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী আরও বলেন, কাজ এগিয়ে যাচ্ছে ভালোভাবেই। আগামী মাসের তৃতীয় সপ্তাহে প্রকল্পের মূল কাজের কংক্রিট ঢালাইয়ের উদ্বোধনের চিন্তা-ভাবনা করছি। সেটা সম্ভব না হলে পরের মাসে অর্থাৎ নভেম্বরে উদ্বোধনের সম্ভাবনা রয়েছে। সকল প্রস্তুতির কাজই চলছে, তবে এই উদ্বোধনের দিনক্ষণের বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি। আসলে আমরা চাচ্ছি, এই প্রকল্পের মূল কাজের উদ্বোধন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে দিয়ে করাতে। তাকে আনার ব্যাপারে আগে থেকেই আমাদের একটা চেষ্টা আছে। আসলে তিনি সময় দিতে পারবেন কিনা সেটাই বড় বিষয়। প্রেসিডেন্টকে আনা সম্ভব না হলে রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে আনা যায় কিনা সে চেষ্টাও রয়েছে। এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় রাশিয়ার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছে।
মন্ত্রী বলেন, আসলে এই কাজের বড় বিষয় যেটা সেটা হলো অর্থ। রাশিয়া আমাদের সেই সহযোগিতা দিচ্ছে বলেই এটা করা সম্ভব হচ্ছে। এই নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট বাস্তবায়নে প্রযুক্তিগত সহযোগিতার পাশাপাশি রাশিয়া এ কাজে ৯০ ভাগ আর্থিক সহযোগিতাও দিচ্ছে।

কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে মন্ত্রী আরও জানান, প্রকল্পের অবকাঠামো তৈরির কাজ এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যেই সেখানে রাশিয়ার ইঞ্জিনিয়ার, এক্সপার্ট যারা কাজ করবেন তাদের আবাসনের জন্য ২০ তলা ভবনগুলো নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে। দ্রুতই একটি ভবন হস্তান্তর করা হবে। আরও দুইটি ভবনের কাজ চলছে সেগুলোও দ্রুত শেষ করা হবে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত এই প্রকল্পের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। তিনি নিয়মিত কাজের অগ্রগতির খোঁজ খবর নিচ্ছেন এবং পরামর্শ দিয়ে আসছেন।
 
এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ভারতও সহযোগিতা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ভারতও আমাদের একাজে সহযোগিতা করতে যথেষ্ট আগ্রহ দেখিয়েছে। আইএইএর সম্মেলনে ভারতের সঙ্গেও আমাদের কথা হয়েছে। রাশিয়ার প্রযুক্তি ও সহযোগিতা নিয়ে ভারত নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট করেছে। তারা দীর্ঘ দিন আগে থেকে এই নিউক্লিয়ার পাওয়ারের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। আমরা ভারতের এক্সপার্টদেরও সহযোগিতা নেবো। রূপপুর প্রকল্পের মাটি প্রস্তুতের কাজ করার সময় আমরা ভারতের এক্সপার্টদের সহযোগিতা নিয়েছি।

একাজে রাশিয়ার পাশাপাশি ভারত থেকেও আমরা অভিজ্ঞতা গ্রহণ করছি। এক্সপার্ট তৈরির জন্য রাশিয়ায় আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনা করছে। ভারতেও আমরা ছাত্র-ছাত্রী পাঠাচ্ছি। সেখানে তারা সংক্ষিপ্ত কোর্স করছে। এবছর আরও ১০০ ছাত্র-ছাত্রী ভারতে পাঠানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০১৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৭
এসকে /জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।