ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

নানা সমস্যা নিয়েই শতভাগ বিদ্যুৎ!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০১৭
নানা সমস্যা নিয়েই শতভাগ বিদ্যুৎ! নানা সমস্যা নিয়েই শতভাগ বিদ্যুৎ!

কুষ্টিয়া: গ্রাহক সেবার চরম দৈন্যদশা, অব্যবস্থাপনা ও অসম্পূর্ণ কারিগরি সক্ষমতার নিরসন না করেই কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়িত ঘোষণা করেছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।

১০ সেপ্টেম্বর, সকাল ১১টায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ উপজেলাকে আনুষ্ঠানিকভাবে শতভাগ বিদ্যুতায়িত হিসেবে ঘোষণা করেন।

ভেড়ামারা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দেয়া তথ্য মতে, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের ৭৭টি গ্রামে ৫৮০ কিলোমিটার লাইন নির্মাণ করে সর্বমোট ৪৪ হাজার ৮৭৩ জন গ্রাহকের অনুকুলে প্রতি একটি সংযোগে ১ কিলো ওয়াট বরাদ্দ দেয়ার মধ্য দিয়ে শতভাগ বিদ্যুৎ সেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে।

এসব গ্রাহকদের মধ্যে বিদ্যুৎ বিতরণ ও সরবরাহের জন্য ১০ এমভিএ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি সাব-স্টেশন রয়েছে।

তবে সংশ্লিষ্ট এক্সপার্টগণ বলছেন, এই উপজেলার ৪৪ হাজার, ৮৭৩ জন গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিতরণে মাত্র ১০ এমভি এ ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন উপকেন্দ্র দিয়ে লাইন ও মিটার সংযোগ থাকলেও তাতে বিদ্যুৎ থাকবে শতকরা ৩০-৪০ ভাগ।

পল্লী বিদ্যুতের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন শতভাগ বিদ্যুৎ ও সংযুক্ত গ্রাহকদের মানসম্মত ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা বাস্তবায়নে পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলেই গ্রাহকদের ত্রুটিমুক্ত বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিত করা যাবে।

শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় এ উপজেলা হলেও নানান কারিগরি ত্রুটির জন্য সাধারণ মানুষ পাচ্ছে না তাদের চাহিদা মাফিক বিদ্যুৎ।
 
নানা সমস্যা নিয়েই শতভাগ বিদ্যুৎ!ভেড়ামারা পৌর এলাকায় ওজোপাডিকো’র বিদ্যুৎ গ্রাহকদের নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকলেও গ্রামের পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকদের দুর্ভোগের শেষ নেই। এখানকার পল্লী বিদ্যুতের বাস্তবতা হলো মাঝে মধ্যে বিদ্যুৎ আসে। বিদ্যুৎ না থাকাটাই এখানে স্বাভাবিক ঘটনা এমনটাই অভিযোগ তাদের। বিদ্যুতের আশায় অপেক্ষা করতে গিয়ে ছাত্র/ছাত্রীদের পড়ালেখা লাটে উঠার দশা হয়েছে।

আলিমুল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী বলে, বিদ্যুতের লোডশেডিং এর কারণে আমরা ঠিকমতো লেখাপড়া করতে পারিনা। আমি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ চাই।

ভেড়ামারা উপজেলার নানা শ্রেণীপেশার মানুষের প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত শতভাগ বিদ্যুতায়িত অঞ্চলের গ্রাহকরা যেন প্রকৃত অর্থেই শতভাগ মানসম্মত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা পায়। তারা মনে করে বিদ্যমান অবস্থার উন্নতি ছাড়া কোনোভাবেই গ্রাহক ভোগান্তি মুক্ত বিদ্যুৎ সুবিধা পাওয়া সম্ভব নয়।

একই উপজেলায় পৌর এলাকাধীন ওজোপাডিকো’র সব শ্রেণীর গ্রাহকসহ ১০ হাজার গ্রাহকের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রায় ৫.৫ মেঘা ওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে রয়েছে ২০ মেঘা ওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন উপকেন্দ্র। পক্ষান্তরে এ উপজেলার প্রায় ৪৫ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুৎ সেবা দিতে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের রয়েছে মাত্র ১০ মেঘা ওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন একটি উপকেন্দ্র।

এদিকে শতভাগ বিদ্যুতায়িত ভেড়ামারা উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকদের বিদ্যুৎ না পাওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপ-মহাব্যবস্থাপক (কারিগরি) প্রকৌশলী নূর মোহম্মদ জানান, গ্রাহকদের অভিযোগ অতিরঞ্জিত। তারা ২০ ভাগ ঘাটতি থাকলে ৫০ ভাগ ঘাটতির কথা বলেন। লোডশেডিং যেটা হচ্ছে সেটা জাতীয় সমস্যা, আমাদের কারিগরি অক্ষমতা নয়।

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) হাবিবুর রহমান বলেন, শতভাগ বিদ্যুতায়ন এলাকায় কতটুকু বিদ্যুৎ সরবারহ করতে পারছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি তা মনিটরিং করে দেখা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪১ ঘণ্টা, ০২ অক্টোবর, ২০১৭
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।