বাসা বাড়িতে সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করে কোনো রকমে দিনাতিপাত করলেও বিপাকে রয়েছে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকেরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গ্যাস পাম্পে অপেক্ষা করেও গ্যাসের দেখা মিলছে না।
তবে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাসের সরবারহ কম ও গ্যাস লাইনের শেষের দিক হওয়ার কারণে মানিকগঞ্জে গ্যাস সংকট বলে মন্তব্য করেন তিতাস গ্যাস অফিস কর্মকর্তারা।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড মানিকগঞ্জ জোনাল অফিসের তথ্যমতে, মানিকগঞ্জে ১৯টি সিএনজি স্টেশন, ৪২টি কল-কারখানা, ১২ হাজার ১০২টি আবাসিক সংযোগ, ক্যাপটিভ পাওয়ার (গ্যাস দিয়ে জেনারেটর চালানোর ব্যবস্থা) রয়েছে ৪১টি। এছাড়া গ্যাসে রুপান্তরিত ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়ীক ছোট গাড়ি এবং পাবালিক যানবাহন রয়েছে কয়েক হাজার।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচলরত যাত্রীসেবা পরিবহনের বাস চালক নিজাম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, সারাদিন গাড়ি চালিয়ে রাতে বিশ্রাম নেওয়ার সময়ে গ্যাস পাম্পে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। তারপরেও গ্যাসের দেখা পাওয়া যায় না। পরে বাধ্য হয়ে ধামরাই বা সাভার থেকে গ্যাস নিতে হয়। এতে করে যাত্রীদের গালিগালাজ শুনতে হয়। গ্যাস না পাওয়ার জন্যে গাড়ির ট্রিপ ও কম হয়। এতে করে বেশ বিপাকে দিন কাটছে বলে জানা তিনি।
মানিকগঞ্জ শহরের বাসিন্দা সাব্বিরুল ইসলাম সাবু বাংরানিউজকে বলেন, বাড়িতে গ্যাসের সংযোগ রয়েছে। কিন্তু গ্যাস থাকে না। বাধ্য হয়েই বিকল্প হিসেবে সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করতে হচ্ছে। তবে গ্যাস না থাকলেও প্রতিমাসে কোম্পানির নির্ধারিত সাড়ে ৬শ টাকা বিল দিতে হচ্ছে। এতে করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তিনিসহ শহরের হাজার হাজার পরিবার। অতি শিগগিরই গ্যাসের সমস্যা সমাধানসহ সিলিন্ডার ব্যবহারের ওই টাকাগুলো প্রতি মাসের বিল থেকে কেটে নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
মানিকগঞ্জ সদরের নারাঙ্গাই এলাকার মেসার্স সৈয়দ গাজী সিএনজি ফিলিং স্টেশনের ব্যবস্থাপক সুপ্রভাত সাহা বাংলানিউজকে বলেন, তিনিসহ ওই সিএনজি স্টেশনে মোট ১৫জন কর্মকর্তা কর্মচারী রয়েছেন। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২ থেকে ৩ ঘণ্টাও গ্যাস পাওয়া যায় না। এতে করে বেশ লোকসানে রয়েছে তাদের এই সিএনজি স্টেশন।
একাদিকবার তিতাস কর্তৃপক্ষের কাছে সমস্যা সমাধানে আবেদন করেও কোনো লাভ হয়নি। এতে করে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধের উপক্রম বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে যোগাযোগের জন্যে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড মানিকগঞ্জ জোনাল অফিসে সরেজমিনে ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের দেখা পাওয়া যায়নি।
পরে অফিসের দায়িত্বরত ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. রকিবুজ্জামান মোবাইল ফোনে বাংলানিউজকে বলেন, মানিকগঞ্জে গ্যাস সরবারহ কম। চাহিদা বেশি। যে কারণে গ্যাসের সংকট। তবে মানিকগঞ্জে গ্যাসের সরবারহ এবং চাহিদার নির্দিষ্ট কোনো পরিমাণ জানাতে পারেননি তিনি।
তিনি জানান, গাজিপুর এবং ধামরাই হয়ে গ্যাসের লাইন মানিকগঞ্জে আসে। যে কারণে ওইসব এলাকায় গ্যাস সরবারহ দিয়ে লাইনে আর তেমন গ্যাস থাকে না। যে কারণে মানিকগঞ্জে গ্যাসের সংকট বেশি। তবে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে মানিকগঞ্জ পর্যন্ত মোট ৬০ কিলোমিটার এলাকার একটি গ্যাস লাইন কাজের ফাইল মন্ত্রণালয়ে রয়েছে।
ওই লাইনের কাজ সম্পন্ন হয়ে গেলে মানিকগঞ্জে গ্যাসের সমস্যা থাকবে না বলেও জানান ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. রকিবুজ্জামান।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১৮
জিপি