ভুক্তভোগীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের জরুন এলাকার বিদ্যুৎ লাইনের একটি ট্রান্সফরমার কয়েক দিন আগে নষ্ট হয়ে যায়। এলাকার গ্রাহকরা তখন বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কোনাবাড়ী জোনাল অফিসে জানায়।
এই অভিযোগের পর রানা ও জয়নাল ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রাহকদের জানান, ট্রান্সফরমারে লোড নেই। এখানে ৫০ কেবি’র ট্রান্সফরমার লাগাতে হবে। এজন্য গ্রাহকদের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন দু’জন। ‘আশ্বাসে’ এলাকার বাসিন্দা ফরিদ মিয়াসহ ৬-৭ জন গ্রাহক রানা ও জয়নাল মিয়াকে গত ১৪ এপ্রিল ৩০ হাজার টাকা দেন। কাজ শেষে বাকি ২০ হাজার টাকা দেওয়ার কথাও বলেন তারা।
ফরিদ মিয়া অভিযোগ করেন, টাকা দেওয়ার পরও ৪-৫ দিন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় গত মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে জয়নাল মিয়াকে মোবাইলে ফোন করেন তিনি। জয়নাল টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করলেও বলেন, ‘কাজ করে দিতে পারবো না বলে টাকা অন্য একজনের কাছে দিয়েছি। আপনারা তার কাছ থেকে নিয়ে নেন। ’ তখন জয়নালকে ফরিদ বলেন, ‘আপনাকে টাকা দিয়েছি, আপনি টাকা ফেরত দেবেন’।
এক পর্যায়ে জয়নাল ফোন কেটে দেন। কিছুক্ষণ পর ফের ফরিদ মিয়াকে কল করে হুমকি দেন, ‘বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোকে জানে মেরে ফেলবো। আমাকে চিনিস? তোর কোন বাপ আছে আমার সামনে নিয়ে আয়। ’
ফরিদ মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে জমা দেওয়ার কথা বলে আমাদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন রানা ও জয়নাল। পরে তাদের ৩০ হাজার টাকা দেই, বাকি ২০ হাজার টাকা পরে দেবো বলি। আমরা মূর্খ মানুষ, না বুঝে তাদের টাকা দিয়েছি। ভেবেছি তারা পল্লী বিদ্যুতের লোক। এখন উল্টো টাকার জন্য আমাকেই মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। আমি আইনের আশ্রয় নেবো। ’
এ ব্যাপারে জানতে লাইনম্যান রানা ও জয়নাল মিয়ার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তারা রিসিভ করেননি।
যোগাযোগ করা হলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কোনাবাড়ী জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) প্রকৌশলী মো. শিহাব হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, ‘লাইনম্যান জয়নাল মিয়া গ্রাহকের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নিয়েছেন। তার স্বীকারোক্তির রেকর্ড শুনেছি। এর দায় দায়িত্ব পল্লী বিদ্যুৎ অফিস নেবে না। তাকে একাই নিতে হবে। ’
এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১৮
আরএস/এইচএ/