বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে এ লাইসেন্স দেওয়া হয়। রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ের বলরুমে অনুষ্ঠানে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বায়েরা) লাইসেন্স দেয়।
এ লাইসেন্স পাওয়ার মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের মূল নির্মাণ কাজ শুরুর অনুমতি দেওয়া হলো।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। বায়েরার চেয়ারম্যান ড. নইম চৌধুরী বাপশক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হকের কাছে এ লাইসেন্স তুলে দেন।
রাশিয়ার অর্থায়ন ও সার্বিক সহযোগিতায় এ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে। আগামী ১৪ জুলাই দ্বিতীয় ইউনিটের মূল নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হবে।
অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ অন্য উচ্চতায় চলে যাবে।
এদিকে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) গাইডলাইন অনুযায়ী মূল নির্মাণ কাজ শুরুর আগে এ লাইসেন্স নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বায়েরা এ অনুমতি দিতে আইএইএ’র সব সেফটি মানদণ্ড ও গাইডলাইন এবং বাংলাদেশের বিদ্যমান আইন ও বিধিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ করেছে। রাশান ফেডারেশন, ভারত, আইএইএসহ আন্তর্জাতিক, স্থানীয় ও নিজস্ব জনবলের মাধ্যমে সব রেগুলেটরি ডকুমেন্টের কারিগরি মূল্যায়ন ও পর্যালোচনা করে বিশেষজ্ঞ মতামত নেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও গত বছর ২ নভেম্বর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট-১ এর ডিজাইন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লাইসেন্স দেওয়ার পর বিগত ৮ মাস ধরে সব বিশেষজ্ঞদের প্রাপ্ত মতামত পর্যালোচনা করে আইএইএ নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট-২ এর জন্য এই লাইসেন্স দিয়েছে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, এ লাইসেন্সের মাধ্যমেই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২য় ইউনিটের মূল কাজ শুরু হবে। এর ফলে বাংলাদেশ পারমাণবিক বিশ্বের কাতারে আরও একধাপ এগিয়ে গেলো।
তিনি বলেন, এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ হচ্ছে। এটি আমাদের জাতীয় আত্মবিশ্বাসও বৃদ্ধি করবে, যে বাঙালিও পারে পরমাণু থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে। আর এটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগ্রহ, উদ্যোগ, সাহস এবং দূরদর্শী সিদ্ধান্তের ফলে। এটা পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনই নয়, এর মাধ্যমে বিদেশে বাংলাদেশের মানুষের অবস্থান ও সম্মান বৃদ্ধি পাবে।
রাশিয়ার এটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট সোর্গেই লাসটস কিন বলেন, এটি একটি মানসম্পন্ন কোম্পানি। সমস্ত নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনেই বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ কাজ চলছে। জেনারেল কন্ট্রাক্টর হিসেবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ সম্পর্কিত সব দায়িত্ব পালন করছে এএসই ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। প্রথম এনার্জি ইউনিটের নির্মাণ কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। চলতি মাসেই দ্বিতীয় ইউনিটের রিয়্যাক্টর ভবনের ভিত্তিতে প্রথম কনক্রিট ঢালাইয়ের প্রস্তুতি চলছে।
বায়েরা চেয়ারম্যান ড. নঈম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডা. আ ফ ম রুহুল হক, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি বিষয়ক) মো. আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক, রাশিয়ার রেগুলেটরি সংস্থা রোস্টেকনজরের ডেপুটি চেয়ারম্যান আ্যলেক্সি ফেরাপনটভ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব আনোয়ার হোসেন এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যৎকেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর।
এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বায়েরার পরিচালক ড. সত্যজিৎ ঘোষ।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০১৮ আপডেট সময়: ০০০০ ঘণ্টা, জুলাই ০৯
এসকে/এসকেবি/এএ/জিপি