এদের জীবনেও এসেছে আধুনিকতা। এখন আর কূপি-হারিকেন কিংবা ফানুসের আলোতে পিছিয়ে নেই তারা।
ভোলা সদরের রাজাপুর ইউনিয়নের জোড়খালে গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র।
ঘাটে বাঁধা শত শত মানতাদের নৌকার বহর। অধিকাংশ নৌকাতে আলো। দিনে নদীতে মাছ ধরে আর রাতে তীরে এসে জ্বালিয়ে দেয় বাতি। পরিবারের সদস্যরাও বেশ আনন্দিত এই আলোতে।
কথা হয় মানতা সম্প্রদায়ের গৃহবধূ শাহিনুরের সঙ্গে। তিনি জানান, আগে বাপের নৌকায় ছিলাম এখন স্বামীর নৌকাতে আছি, নৌকা বদল হয়েছে কিন্তু জীবন বদল হয়নি। যারা উপরে (ভুখণ্ডে বসবাস) থাকেন তারা বিদ্যুতের সুবিধা পাচ্ছেন কিন্তু আমাদের কাছে তা স্বপ্ন। তাই আমরাও সৌর বিদ্যুৎ নিয়ে কিছুটা হলেও অন্ধকার দূর এগিয়ে যেতে চাই, আর পিছিয়ে থাকতে চাই না।
মানতা সম্প্রদায়ের আব্দুর রহমান বলেন, আমরা নৌকাতে থাকি সভ্যতার সব সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাই নিজেদের মত করে বাঁচার তাগিদে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করছি।
মানতা সামুজান বিবি বলেন, দিনের বেলা উত্তাল নদীর সঙ্গে যুদ্ধ করে মাছ শিকার করি, কিন্তু রাতের বেলায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগি তাই নৌকাতে আলো জ্বেলে দিয়েছি।
মানতা পারভেজ বলেন, পরিবার নিয়ে নৌকায় থাকলেও রাতের বেলা ছোট ছোট শিশুদের জন্য দুশ্চিন্তা করতে হয়, সৌর বিদ্যুতের আলো আমাদের স্বস্তি দিয়েছে। এতে কিছুটা হলেও আমরা আনন্দিত।
মসুর সর্দার বলেন, সবার নৌকাতে এখনো সৌর বিদ্যুতের আলো জ্বলেনি, তবে তারাও আলো জ্বালানোর চেষ্টা করছেন।
মানতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কেউ কেউ সরকারের পক্ষ থেকে সৌর বিদ্যুৎ পেয়েছেন, কারো কারো নাম লিখে নিয়ে গেছে তারাও সৌর বিদ্যুৎ পাবেন। তবে যারা পাননি তাদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন এনজিও বা কোম্পানি থেকে সৌর বিদ্যুৎ নৌকাতে স্থাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৪১৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৮
আরএ