অভিযোগ উঠেছে, চলতি বছরের গত ২০ জুন নগরের পাটগুদাম আবাসিক এলাকার বাসিন্দা সাইফুল ইসলামসহ সচেতন এলাকাবাসী ময়মনসিংহের কেওয়াটখালীতে গিয়ে বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে সংশ্লিষ্ট বিভাগ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে সচেতন মহলে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নগরের পাটগুদাম ব্রিজ মোড় ও আবাসন প্রকল্প এলাকায় এক শ্রেণীর অসাধু চক্র পিডিবি থেকে আবাসিক সংযোগ নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে সাব-লাইন দিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহারে করছে। অনেকেই সরাসরি টানা লাইন থেকে অবৈধভাবে সংযোগ লাগিয়ে বিদ্যুৎ চুরির মাধ্যমে অটোরিকশার ব্যাটারিতে চার্জের ব্যবসা করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
পাটগুদাম এলাকায় হাজী কাশেম আলী কলেজ মাঠ সংলগ্ন জনৈক মাসুম তার বাসার আবাসিক মিটার থেকে ভাতের হোটেল ও মুদি দোকান, স্বপন বাবু তার মিটার থেকে বাইপাস করে ঝুঁকিপূর্ণভাবে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০টি অটোরিকশার ব্যাটারি চার্জের ব্যবসা করছেন।
এছাড়া সেখানকার আলমাস মিয়া অন্যজনের মিটার থেকে ভাড়ায় নিয়ে ৪০ থেকে ৫০টি অটোরিকশা চার্জ করছেন। একই এলাকার মিজান মিয়াসহ বিভিন্নজন অবৈধভাবে অটোবাইক ও অটোরিকশার ব্যাটারি চার্জ করে বাণিজ্য করছেন।
নগরীর ব্রিজ মোড়ে আবাসন প্রকল্পের মরিয়ম, মোতালেব, মিলন, বিল্লালসহ অনেকেই আবাসিক মিটার থেকে এবং খুঁটি থেকে বিদ্যুৎ চুরি করে বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে সংযোগ দিয়ে এবং অটোবাইকের ব্যাটারি চার্জ করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, পিডিবির মিটার রিডার মোফাজ্জল হোসেন এসব অবৈধ সংযোগ থেকে প্রতি মাসে মাসোয়ারা পান। ফলে অভিযোগ করেও কোনো ফল হয় না।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে মিটার রিডার মোফাজ্জল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমি এ ধরনের কোনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। তাছাড়া আমি কাঠাঁল এলাকার রিডার, পাটগুদাম বা আবাসন এলাকায় আমি কাজ করি না।
ওই এলাকার একটি লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে বিদ্যুৎ বিভাগের টিম যায়, কিন্তু তারা অবৈধ কোনো সংযোগ পায়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
স্থানীয় গ্রাহক সাইফুল ইসলাম এ ব্যাপারে বলেন, একটি চক্র অবৈধভাবে প্রতিমাসে লাখ লাখ টাকার বিদ্যুৎ নিয়ে বাণিজ্য করে যাচ্ছে। এতে সরকার ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং সাধারণ মানুষ এসব কারণে লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজের শিকার হচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করেন, এসব বিষয়ে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ বিভাগকে জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় লিখিতভাবে অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইন্দ্রজিৎ দেবনাথ বাংলানিউজকে বলেন, যে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই আমরা অ্যাকশন টিম ঘটনাস্থলে পাঠাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৮
এমএএএম/এইচএ/