ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

প্রবাসে বাংলাদেশ

জাপান থেকে তপন চক্রবর্তী

জাপানে জীবনযাত্রার ব্যয় বেশি

তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৬ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৬
জাপানে জীবনযাত্রার ব্যয় বেশি

জাপান (টোকিও) থেকে: আধুনিক জাপানে লিভিং কস্ট বা জীবনযাত্রার ব্যয় অত্যন্ত বেশি। বাংলাদেশি ৭২ টাকা দিলে জাপানি ১০০ ইয়েন পাবেন আপনি।

আন্তর্জাতিকভাবে বললে ১০০ ইউএস ডলারে বাংলাদেশি টাকা পাবেন ৮ হাজার অন্যদিকে জাপানি ইয়েন হলে পাবেন ১০ হাজারের সামান্য বেশি। কিন্তু আমাদের দেশে ৫০০ মিলিলিটারের যে মিনারেল ওয়াটারের দাম ১৫ টাকা, জাপানে তা কিনতে হবে ১২০ ইয়েনে।

শুধু কি পানির দাম। না সব কিছুই এখানে বেশি বেশি। ঘরভাড়া, খাওয়া-দাওয়া, বিদ্যুৎ বিল, সার্ভিস চার্জ, গাড়িভাড়া সবই। তারপরও সবকিছু ঠিকঠাকভাবে চলছে কীভাবে? হ্যাঁ, বেতন বা আয়ও বেশি জাপানে।

প্রথম দিন ভূমিকম্প, দ্বিতীয় দিন মেঘলা আকাশে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির পর বুধবার (১৮ মে) রৌদ্রোজ্জ্বল সকাল দেখেছি আমরা। মন ভালো করে দেওয়া সকালেই টোকিও শহরে কথা হয় জাপানি নাগরিক ন্যাটো’র সঙ্গে।
তিনি বললেন, আমাদের জীবনমান বেশি বলে জীবনযাত্রার ব্যয়ও বেশি। তবে এখানকার নাগরিকরা, কাজ বা পড়াশোনা সূত্রে থাকা বিদেশিরা এসব বিষয়ে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন। কারণ আয়ও বেশি। গড় আয় ৩৫ হাজার মার্কিন ডলার। এখানে টাইম ইজ মানি। এখানে যেকোনো হোটেলে আপনি খেতে পারেন, তাজা-বিশুদ্ধ-স্বাস্থ্যসম্মত খাবারই পাবেন। এখানে বাসা বা অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া বেশি অসুবিধা নেই, আপনার জন্যে আছে ছোট ছোট ৮০-১০০ বর্গফুটের বাসা। সস্তা বাহন হিসেবে পর্যাপ্ত গণপরিবহন, ট্রেন আছে। বিনাখরচায় চালাতে পারেন পরিবেশবান্ধব সাইকেল।
ন্যাটোর কথার সত্যতা দেখা গেল জাপানি ট্রেন আর রাস্তায়। নারিতা বিমানবন্দর থেকে টোকিওর প্রিন্স হোটেলে আসার পথে দেড় ঘণ্টায় আমরা প্রাইভেট কারের চাপ দেখিনি। রাস্তায় জনজটও দেখিনি তেমন। একই ভাবে টোকিও থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে কাসিমা ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোনে বিশ্বসেরা আসাহি গ্লাস কোম্পানির (এজিসি) একটি কারখানা পরিদর্শনে যাওয়ার সময়ও বিষয়টি নিয়ে ভেবেছিলাম। এখানে তিন হাজার ইয়েনেরে টেক্সিভাড়ার দূরত্বে রেলে যেতে আপনার লাগবে মাত্র ৩০০ ইয়েন। তেমনি বাসেও। তাই গণপরিবহনে উৎসাহটা বেশি।
আসাহি গ্লাস কোম্পানির (এজিসি) মার্কেটিং ম্যানেজার কুরি হারা বাংলানিউজকে জানালেন, বিশ্বের তিন ডজন মেগাসিটির মধ্যে টোকিও বিশেষ স্থান দখল করে আছে। জাপানে একজনের মাথাপিছু খরচ প্রায় এক লাখ ইয়েন। তারপরও জাপানের প্রতি মানুষের অনেক আগ্রহ। কারণ এটি টয়োটা গাড়ির দেশ, এটি ইলেকট্রনিকস সামগ্রীর জগতে অদ্বিতীয়। এখানকার পরিবেশটাই অন্যরকম। এত ভদ্রতা, এত বিনয়, এত ভালোবাসা আপনি কোথায় পাবেন!
টোকিওর ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্ট ‘মহারাজা’র মহাব্যবস্থাপক রমেশ কুমার জাপানের জীবনযাত্রার ব্যয় প্রসঙ্গে বলেন, জাপান হচ্ছে ছিমছাম, গোছানো, পরিচ্ছন্ন একটি দেশ। এখানকার মানুষ অত্যন্ত সভ্য। এখানকার শিশুরা যেন একেকজন দেবদূত। কিন্তু জীবনযাত্রার ব্যয় অস্বাভাবিক বেশি। বিশেষ করে ব্যক্তিক পর্যায়ে। রাষ্ট্র আপনার জন্য, আপনার সন্তানের জন্য যা যা করার করবে। কিন্তু বাসাভাড়া, গাড়িভাড়া, আহারের জন্যে আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। স্বস্তির কথা যে, এখানে জিনিসপত্র ও সেবার দাম যেমন বেশি, মানও তেমনি ভালো।

** জাপানিদের উন্নতির মূলমন্ত্র ‘সময় জ্ঞান’
** ভূমিকম্পেও বিকার নেই জাপানিদের

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৬
টিসি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।