কৃত্রিমভাবে তৈরি এ দ্বীপটিতে রয়েছে পাঁচতারকা মানের বেশ কয়েটি ইন্টারন্যাশনাল চেইন হোটেল। বিশাল আকৃতির কয়েকটি শপিং সেন্টার।
শুধু তাই নয়। অত্যাধুনিক অলিম্পিক সিটির জন্য ভরাট করা হচ্ছে সমুদ্রের এক বিশাল অংশও।
অনেক দিন ধরেই ভাবছিলাম, টোকিও’র ওবাইদায় জাপানের সবচেয়ে পুরাতন টেলিভিশন স্টেশন ফুজি টিভি এলাকাটা একটু ঘুরে দেখবো। হুট করেই বেরিয়ে পড়লাম। দৃষ্টিনন্দন এ এলাকাটির সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য সুন্দর বোট পাওয়া যায়। যারা দেখতে আসে সবাই এসব বোটে চড়ে পুরো এলাকা ঘুরে বেড়ায়।
কি সৌন্দর্য! বাস্তবে না দেখলে বুঝানো যাবে না। টোকিও উপকূল ঘেঁষে গড়ে তোলা কৃত্রিম দ্বীপটি ও তার আশপাশে টোকিও সিটির বাণিজ্যিক ভবনগুলো ছবির মতো দাঁড়িয়ে আছে। মূল শহরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তৈরি করা হয়েছে রেইনবো ব্রিজ। এটি বিশ্বের অন্যতম সুন্দর ও প্রযুক্তি নির্ভর ব্রিজ। এক ব্রিজেই উপরে হাইওয়ে, সাধারণ গাড়ি চলাচলের রোড। নিচের অংশে রয়েছে ট্রেন চলাচলের একাধিক রুট। রাতে এ ব্রিজটির সৌন্দর্য আরো বেড়ে যায়। রকমারি আলোকসজ্জায় সজ্জিত এ ব্রিজটির নাম দেয়া হয়েছে রেইনবো ব্রিজ।
ফুজি টেলিভিশন প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৭ সালের ১৮ নভেম্বর। তবে এটি চালু হয় ১৯৫৯ সালের মার্চে। বর্তমানে এ টিভির আওতাধীন অনেকগুলো পৃথক চ্যানেল রয়েছে। নিউজ, খেলাধুলা, কার্টুন, রান্না-বান্না ও বিনোদনসহ আরো বিষয়ে তারা অনুষ্ঠান প্রচার করে। জাপানের সবচেয়ে বড় মিডিয়া গ্রুপ এটি। এ টেলিভিশনের মাধ্যমে নিজেদের সংস্কৃতি যেমন বিশ্বের বুকে তুলে ধরা হচ্ছে, তেমনি আন্তর্জাতিক নিউজ সেকশনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভাষা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে খবর পরিবেশনা করা হচ্ছে। এছাড়াও শক্তিশালী অনুসন্ধানী রিপোর্টিং টিম রয়েছে তাদের। ২০১৫ সালে এ টিভিতেই প্রথম আমাদের দেশের রহস্য পুরুষ প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসেরকে নিয়ে ডকুমেন্টারি তৈরি করা হয়েছিল। যা বিশ্বে আলোচিত হয়েছিল। দীর্ঘদিন বাংলাদেশে অবস্থান করে ফুজি টেলিভিশন প্রতিনিধি দল ড. মুসার গুলশান বাসভবন, বনানী অফিসসহ তার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর সফর করে তথ্য সংগ্রহ করে।
আপনারা যারা জাপানে ভ্রমণে আসবেন তারা একটি বারের জন্য হলেও ঘুরে যাবেন ওদাইবা এলাকাটি। বৃহত্তম কৃত্রিম দ্বীপটি রাজধানী টোকি’র বুকে কিভাবে গড়ে তোলা হয়েছে তা দেখে অবশ্যই ভালো লাগবে। মনকে ফ্রেশ করতে প্রতিবছর লাখো বিদেশি পর্যটক এ এলাকাটি ভ্রমণ করে থাকে। এছাড়া দেশি পর্যটক তো রয়েছেই।
নিরাপত্তা নিয়ে বিন্দুমাত্রও ভাবতে হবে না এখানে। ২৪ ঘণ্টা মন খুলে ঘুরতে পারবেন। কেউ কাউকে বিরক্তও করবে না। নেই বাংলাদেশের মতো ছিনতাইকারী কিংবা চুরি-বাটপারি। প্রতিটি কদমে পাবেন অধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া। মানুষের সততা ও সহযোগিতার মনোভাবেও আপনি মুগ্ধ হবেন। হোটেল বা বাসা থেকে বেরিয়েছেন, কিন্তু ফিরে যাওয়ার রাস্তা ভুলে গেছেন! নো চিন্তা। পুলিশ প্রয়োজনে আপনাকে রুমে পৌঁছে দেবে।
মাহবুব মাসুম: প্রবাসী সাংবাদিক
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৭
জেডএম/