ভিসা পেতে বয়স হতে হবে সর্বোচ্চ ৫০ বছর। আইইএলটিএস পরীক্ষায় সর্বনিম্ন স্কোর ৪ দশমিক ৫, মাস্টার্স/অনার্স ডিগ্রি/ডিগ্রি/ডিপ্লোমা সার্টিফিকেটধারীরা সংশ্লিষ্ট কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে আবেদন করতে পারবেন।
অস্ট্রেলিয়ায় এখন তিন বছর চাকরি ও বসবাস করার পর স্থায়ী নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যাচ্ছে। বয়স একটু বেশি হলেও নির্দিষ্ট কিছু পেশাজীবী এই সাবক্লাস ৪৮২’র আওতায় আবেদন করতে পারছেন।
স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য অস্ট্রেলিয়া অন্যতম পছন্দের দেশ। কাজ, বসবাস ও স্থায়ী হওয়ার প্রচলিত নিয়ম-কানুন সম্পর্কে খোঁজ নিতে আন্তর্জাতিক অভিবাসন আইন বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, অস্ট্রেলিয়ার ডিমান্ড লিস্টে প্রায় ৪৩২টি পেশার নাম রয়েছে। যাদের যোগ্যতা রয়েছে তারা মাইগ্রেশনের বিভিন্ন সাব-ক্লাসে আবেদন করে পরিবারসহ বসবাস করতে পারেন।
চাকরি নিয়ে প্রবেশ করেও অনেকে স্থায়ী নাগরিক হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। সঠিক চাকরি ও সঠিক টেরিটোরি বেছে নেওয়ার দক্ষতা এ ক্ষেত্রে নাগরিক হওয়ার বিষয়টি ত্বরান্বিত করে।
তিনি আরও বলেন, গতবছর প্রায় ৪ লাখ স্থায়ী চাকরির পদ সৃষ্টি হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় কয়েক ডজন ভিসা প্রোগ্রাম রয়েছে। তবে আমাদের জন্য মূলত ০৪ ভাগে প্রচলিত ক্যাটাগরি রয়েছে:-
স্কিল্ড মাইগ্রেশন: সাবক্লাস ১৮৯ স্কিল্ড ইন্ডিপেন্ডেন্ট ভিসা
বিষয়টি সম্পূর্ণ পয়েন্টের উপর নির্ভর করে। মোট ৬০ পয়েন্ট প্রয়োজন হয়। পয়েন্ট পাওয়া যায় বয়স, কাজের অভিজ্ঞতা, পড়াশোনা, ভাষার উপর চূড়ান্ত দখলের উপর ।
স্কিল্ড নমিনেটেড ১৯০ ভিসা:
এই প্রোগ্রামটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। শর্টলিস্টেড পেশাজীবী হতে হবে। স্টেট অথবা টেরিটোরি থেকে স্পন্সরশিপ থাকতে হবে। যা পাওয়া খুব কঠিন কাজ নয়।
টেম্পোরারি গ্রাজ্যুয়েট (সাবক্লাস ৪৮৫)
কারও যদি বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ান স্টুডেন্ট ভিসা থাকে বা কমপক্ষে ২ বছরের মধ্যে পড়াশোনা শেষ করে, তারা এই কোটায় আবেদন করতে পারবেন।
মোট দুই ধরনের হয়। গ্রাজুয়েট ওয়ার্ক স্টিম ও পোস্ট গ্রাজুয়েট ওয়ার্ক স্টিম। ভিসার মেয়াদ ১৮ মাস থেকে ৪ বছর পর্যন্ত হতে পারে। পিআর এর জন্য আবেদন করা যায়।
স্কিল্ড রিকগনাইজড গ্রাজুয়েট ভিসা (৪৭৬)
শুধু সদ্য ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করা ছেলে-মেয়েরা এই কোটায় আবেদন করতে পারবেন।
বয়স ৩১ বছরের মধ্যে হতে হবে। বিগত ২৪ মাসের মধ্যে পড়াশোনা শেষ করা থাকতে হবে এবং অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি অর্জিত হতে হবে।
এম্প্লয়ার স্পন্সরশিপ:
অষ্ট্রেলিয়ান কোনো চাকরিদাতা যদি আপনাকে স্পন্সর করতে ইচ্ছুক হন তবে আপনার ভাগ্য খুলে গেলো। তবে জোগাড় করা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। এখানে অনেক ধরনের ভিসা হয়। সঠিক ভিসা খুঁজে পাওয়ার উপর সবকিছু নির্ভর করে।
কোন ধরনের ভিসার জন্য আপনি উপযুক্ত তা সঠিক ও বিস্তারিতভাবে জানাটা সবচেয়ে জরুরি। এ বিষয়ে অভিজ্ঞ ইমিগ্রেশন আইনজীবীর পরামর্শ গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই।
ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ ভিসা (৪০৭)- ওকুপেশনাল ট্রেইনি স্কিম:
এ ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় এসে দুই বছর পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে বসবাস ও পূর্ণকালীন কাজের সুযোগ রয়েছে। মেয়াদ শেষ হলে আবারও নবায়ন করা যায়।
সাবক্লাস ৪০৭ প্রশিক্ষণ বা ট্রেনিং ভিসা:
এই ভিসায় প্রশিক্ষণটি দু’ভাবে হতে পারে। সরাসরি একই পেশায় অস্ট্রেলিয়ায় কাজ করার মাধ্যমে অথবা কোনো প্রশিক্ষণকেন্দ্রের মাধ্যমে। কার্যকরী ইংরেজি ভাষা দক্ষতা (আইইএলটিএস এ ৪.৫) থাকতে হবে। ১৮ বছর বয়সী বা তার ঊর্ধ্বে হতে হবে।
এম্প্লয়ার নমিনেশন স্কিম (১৮৬):
স্থায়ীভাবে পরিবারসহ এই স্কিমে আবেদন করে বসবাস ও কাজ করা যায়। নাগরিকত্ব লাভ করা সম্ভব। অস্ট্রেলিয়ায় ২ বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হয়।
রিজিওনাল স্পন্সরড মাইগ্রেশন স্কিম (১৮৭):
স্কিল অ্যাসেসমেন্টের প্রয়োজন হয় না। বয়স ৫০ বছরের নিচে হতে হবে। চাকরিদাতার দায়-দায়িত্ব এক্ষেত্রে কিছুটা কম। স্থায়ী নাগরিকত্ব পাওয়া সম্ভব। রিজিওনাল এরিয়া থেকে জব অফারের প্রয়োজন হয়। পড়াশোনা করার সুযোগ পাওয়া যায়।
স্কিল্ড রিজিওনাল ভিসা (সাবক্লাস ৪৮৯):
রিজিওনাল এলাকায় ২ বছরের পড়াশোনার অভিজ্ঞতা
আইইএলটিএস এ কমপক্ষে ৬ স্কোর থাকতে হবে। পড়াশোনার পর রিজিওনাল এলাকায় এক বছরের কাজের অভিজ্ঞতা।
চাকরিদাতার বর্তমান কাজের ঠিকানা, কাজের ধরন ও অভিজ্ঞতার বছর, পড়াশোনার যোগ্যতা, চাকরির ধরন ও বেতনের উপর পুরো বিষয়টি নির্ভর করে।
সততা ও দক্ষতার কোনো বিকল্প নেই। সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে ভিসাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রেও কোনো জটিলতা তৈরি হয় না। অস্ট্রেলিয়ান ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে দক্ষতা, সততা ও সুনামের সঙ্গে যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে তার মধ্যে ওয়ার্ল্ডওয়াইড মাইগ্রেশন কনসালট্যান্টস লিমিটেড অন্যতম।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, চলতি বছর প্রচুর দক্ষ লোকের প্রয়োজন পড়বে। আমরা যদি সঠিকভাবে ও যোগ্য লোক বাছাই করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আবেদন করতে পারি তবে সবাইকে পিছনে ফেলে আমরাই অস্ট্রেলিয়ার শ্রম বাজার দখল করতে পারবো। বাংলাদেশিদের সেই দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা রয়েছে।
এক্ষেত্রে সবাইকে প্রতারকদের হাত থেকে সাবধানে চলার পরামর্শ দেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়ায় মাইগ্রেশনের একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় ভিসা নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনার সন্তানরা কিন্তু প্রতি মাসে সোশ্যাল বেনিফিট পাওয়া শুরু করবে। আর সবচেয়ে, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো অস্ট্রেলিয়ান ফ্রি হেলথ বেনিফিট ফর অল অফ ইওর ফ্যামিলি মেম্বারস। যা যুক্তরাষ্ট্রেও নেই।
হালনাগাদ তথ্যর জন্য ভিজিট করতে পারেন www.wwbmc.com ওয়েবসাইটে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১৮
এএ