ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

প্রবাসে বাংলাদেশ

সিডনিতে বিজয় দিবসের আলোচনা সভা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০১৯
সিডনিতে বিজয় দিবসের আলোচনা সভা সিডনিতে বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় বক্তারা। ছবি: বাংলানিউজ

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সিডনি প্রেস ও মিডিয়া কাউন্সিল রোববার (০১ ডিসেম্বর) দুপুর ১টায় স্থানীয় গ্রামীণ রেস্টুরেন্টে ‘মহান বিজয় দিবস উদযাপন ও সাংবাদিকদের ভূমিকা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করে।

বিজয় দিবসের এই আলোচনা সভায় অতিথি বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জান আলী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান তরুণ। সংগঠনের সভাপতি ড. এনামুল হকের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল মতিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলওয়াত করেন মো. আলতাফ হোসাইন।

ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জান আলী তার বক্তৃতায় মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মহান ত্যাগ ও আত্মদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে প্রবাসে সাংবাদিকদের কী ধরনের ভূমিকা থাকা উচিত এ নিয়েও আলোচনা করেন। তিনি প্রবাসী সাংবাদিকদের নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের এই বীরগাঁথা ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান।

বীর মুক্তিযোদ্ধা সিডনি প্রবাসী মিজানুর রহমান তরুণ বলেন, আমাদের সবার উচিত দেশের ইতিহাস জানা। বর্তমান তরুণ ও নতুন প্রজন্মের অনেকেই আমাদের গৌরবময় সোনালি ইতিহাস ভালো করে জানে না। সবারই উচিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশকে ভালোবাসা, দেশের জন্য কাজ করা। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ফসল এ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।  

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত দিনগুলোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা পাঁচ ভাইসহ পুরো পরিবার মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছি এবং দুই ভাই শহীদ হয়েছেন। এসময় আলোচনা অনুষ্ঠানে এক হৃদয় বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও প্রকৃত চেতনা আজ আমরা হারাতে ও ভুলতে বসেছি। প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা চির সমুন্নত রাখা ও নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তি ও স্বাধীনতা সংগ্রামের সঠিক চিত্র তুলে ধরার জন্য তিনি প্রবাসী সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান।

সিডনি প্রেস ও মিডিয়া কাউন্সিলের সদস্যরা আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, আমরা অনেকেই মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। কিন্তু অনেকেই মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি। মুক্তিযুদ্ধকে জেনেছি ইতিহাস পড়ে, সিনেমা দেখে, দাদা-বাবার মুখ থেকে গল্প শুনে। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের প্রেরণার অনন্য একটি উৎস। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জাতীয় জীবনে বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অর্জন। মুক্তিযুদ্ধ চরম ত্যাগের অমরগাঁথা এবং জাতির গৌরবের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

তারা আরও বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে অভিহিত। বাংলাদেশের স্বাধীনতা হাজার বছরের সংগ্রামের পরিণতি। মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের কাহিনী বাঙালি হৃদয়ে চিরজাগরূক হয়ে থাকবে। তাদের আত্মত্যাগের ফসল নষ্ট হয়নি। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধসহ স্বাধিকার ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সব বীর শহীদের বীরত্বগাথা ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বিজয়ের আনন্দ এই প্রবাসে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ও অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।  

দুপুরের খাবারের পর সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে কাউন্সিলের সিনিয়র সহ সভাপতি আবদুল্লাহ ইউসুফ শামীম ও মো. আসলাম মোল্লা অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৯
এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।