পর্তুগাল থেকে: পেশাগত দায়িত্বে গিয়ে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা-মামলা-কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় দেশের মতো প্রবাসেও বেশ তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
ইউরোপে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিকরা এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
ইতালি থেকে মনিরুজ্জামান মনির বলেন, রোজিনা এখন শুধুমাত্র সাংবাদিক বা নাম নয়, রোজিনা এখন একটি প্রতিবাদ। রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় আনীত অভিযোগ নিঃশর্তভাবে প্রত্যাহার করতে হবে। তার ওপর নির্যাতনকারী সব সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা ও গ্রেফতার উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ, যা আমাদের জন্য দুঃখ এবং লজ্জাজনক।
পর্তুগাল অবস্থানরত সিনিয়র সাংবাদিক বেলাল আহমদ বলেন, আজ গণমাধ্যম বন্দিশালায়। এটা আমাদের জন্য এক লজ্জাজনক অধ্যায়। আমরা আমাদের বাক স্বাধীনতার পাশাপাশি গণমাধ্যমের স্বাধীনতাও হারিয়েছি। যা আমাদের দেশের জন্য মোটেও শুভকর নয়। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে নয়, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিলে দেশ, জাতি ও সমাজ উপকৃত হবে।
স্পেন থেকে বকুল খান বলেন, দুর্নীতি এবং অনিয়মের বিরুদ্ধে সরকার সব সময় জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করছে। সে অনুযায়ী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে আটক, নির্যাতনের শিকার হন রোজিনা ইসলাম। এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। শুধু স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর আঘাত হানা হয়েছে, তাই নয়, পক্ষান্তরে আশ্রয়, প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে দুর্নীতি, লুটপাটের বরপুত্রদের। অনতিবিলম্বে রোজিনা ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
পর্তুগাল থেকে লেখক এবং সাংবাদিক মনির হোসেন বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিক্রম করার পর আমরা কিছু সফলতার সঙ্গে ব্যর্থতাও পেয়েছি। কিছুদিন আগে প্রকাশ পাওয়া বিশ্ব গণমাধ্যম সূচকে আমরা তলানিতে অবস্থান করছি। এটা আমাদের গণমাধ্যমগুলোর জন্য মোটেও শুভকর নয়।
ফিনল্যান্ড থেকে লেখক মজিবুর দফতরি বলেন, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে গৃহীত সহিংস ও দমনমূলক ব্যবস্থা বাংলাদেশের স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর সরাসরি আক্রমণ। একজন সাংবাদিকের ভূমিকা হলো জনসাধারণের কাছে স্বচ্ছতা আনার জন্য জনগণের কাছে গোপন রহস্য উদঘাটন করে সত্য প্রকাশ করা। এটি যারা দুর্নীতি এবং জনসম্পদের অব্যবস্থাপনায় লিপ্ত, সে শক্তিশালী মহলগুলোকে ক্ষুব্ধ করতে পারে। সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম কেবল তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছেন। সাংবাদিকতা কোনো অপরাধ নয়। সরকারের উচিত তাকে মুক্ত করা এবং তার বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ প্রত্যাহার করা।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৩ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০২১
এসআই