নিউইয়র্ক থেকে ফিরে: নিউইয়র্কের ফার রকওয়ের আরভারনিউ আবাসিক এলাকা। পাশেই ছোট্ট একটি নদী, সংযুক্ত আটলান্টিক মহাসাগরের সঙ্গে।
আরভারনিউ আবাসিক এলাকায় কয়েক ডজন বাংলাদেশি পরিবার বসবাস করে। তাদের মধ্যে একজন জাকির হোসেন বাবুল। অবসর পেলে শখ করে মাছ ধরেন ছোট্ট নদীটিতে। কখনো বড়শি, কখনো ঝাঁকি জাল আবার কখনো টানা জাল দিয়ে। কখনো একা আবার কখনো প্রতিবেশী বাংলাদেশিদের নিয়ে।
জাকির হোসেন বলেন, এই নদী আমাদের পুকুর। যখন ইচ্ছে মাছ ধরি। নিজেদের জন্য বাজার থেকে খুব একটা মাছ কিনতে হয় না। নদীতে নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছে ভরপুর। সবচেয়ে বেশি সামুদ্রিক চাপিলা।
একবার জাল ফেললেই পাতিল ভরে যায় মাছে
এছাড়াও নদীটিতে সার্ডিন, পোয়া ও সামুদ্রিক বাটাসহ বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ পাওয়া যায় বলে জানান তিনি।
জাকির হোসেন বলেন, কখনো কখনো শুধু একবার জাল ফেললে পুরো বালতি মাছে ভরে যায়। নদীতে যেন মাছ আর পানি সমান!
জাকির হোসেনের স্ত্রী শিল্পী জাহান বলেন, আমরা মাছে ভাতে বাঙালি। গল্প শুনেছি বাংলাদেশের প্রাকৃতিক জলাশয়গুলোতে একসময় প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। আর এখন এখানে দেখছি প্রচুর মাছ পাওয়া যায়।
শিল্পী জাহান বলেন, বাংলাদেশি পরিবারগুলোর কেউ মাছ ধরতে গেলে ফিরে এসে নিকটতম প্রতিবেশীকে মাছ উপহার দেন। অনেক সময় জোর করে উপহার দেন।
জোর করে কেন—জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে এত মাছ কেটেকুটে সংরক্ষণ করা অনেক কষ্টের ব্যাপার। আবার বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ফ্রিজে জায়গাও তেমন থাকে না।
জাকির হোসেন বলেন, এখানে সমুদ্র থেকে প্রচুর মাছ আসে, দূষণ কম, মাছ ধরার লোকও বাংলাদেশের তুলনায় অনেক কম। এসব কারণে হয়তো এখানে এত বেশি মাছ ধরা পড়ে।
চাঁদপুরের হাজিগঞ্জ উপজেলার সন্তান জাকির বলেন, চাষের মাছ বাদ দিলে বাংলাদেশে প্রাকৃতিক জলাশয়গুলোতে এখন আর খুব বেশি মাছ পাওয়া যায় না। আমাদের গ্রামের এলাকায় আর আগের মতো আর মাছ নেই!
মাছের উৎপাদন বাড়াতে কৃষিজমিতে কীটনাশকের যাচ্ছেতাই ব্যবহার ও কারেন্ট জাল বন্ধ এবং প্রাকৃতিক জলাশয়ের সংখ্যা বাড়ানোসহ অন্যান্য উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে বাংলাদেশে, যোগ করেন নিউইয়র্ক প্রবাসী জাকির হোসেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২১
এমইউএম/এমজেএফ