ব্রাহ্মণবাড়িয়া: রসালো ফল লিচু। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্তবর্তী তিন উপজেলার মাটি লিচু উৎপাদনের উপযোগী হওয়ায় প্রতি বছরই বাড়ছে লিচুর আবাদ।
![](http://bnpub.banglanews24.com/public/userfiles/images/01-01-2022/14-1/18-5/30-1/22-5/26-5/Lichu-pic-1.jpg)
বিভিন্ন বাগান ঘুরে দেখা যায়, গাছে থোকায় থোকায় শোভা পাচ্ছে বোম্বাই, পাটনা ও চায়নাসহ বিভিন্ন জাতের লিচু। কিছু কিছু গাছে ঝুলে থাকা লাল টুকটুকে লিচু বাতাসে দোল খাচ্ছে। আবার কিছু গাছে লাল সবুজ রঙা আধা পাকা লিচু ঝুলে আছে। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন এসব বাগান দেখতে ভিড় করছেন। অনেকে আবার বাগান থেকে লিচু খাচ্ছেন, কিনেও নিয়ে যাচ্ছেন পরিবারের জন্য।
বাগান দেখতে আসা জয় আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, আমার বাবা একজন প্রবাসী। তিনি পাঁচ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন লিচু কেনার জন্য। এ টাকা দিয়ে লিচু কিনে আমাদের আত্মীয় স্বজনদের দেব।
![](http://bnpub.banglanews24.com/public/userfiles/images/01-01-2022/14-1/18-5/30-1/22-5/26-5/Lichu-pic-5.jpg)
আরেক দর্শনার্থী মুক্তা নূর বাংলানিউজকে বলেন, স্বামীর সঙ্গে লিচু বাগানে ঘুরতে এসেছি। বাগানে এসে গাছে দোল খেতে থাকা লিচু দেখে আমি মুগ্ধ। মালিকের অনুমিতি নিয়ে দুই-একটা লিচু খেয়েছি। লিচুগুলো খুবই রসালো, মিষ্টি। পরিবারের জন্য ৫০০ লিচু কিনেছি।
জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমে জেলার ৫৭০ হেক্টর জমিতে বোম্বাই, পাটনা ও চায়না জাতের লিচুর আবাদ করা হয়েছে। জেলার সীমান্তবর্তী বিজয়নগর, কসবা এবং আখাউড়া উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে হাজার খানেক লিচু বাগান রয়েছে। এর মধ্যে বিজয়নগরের সিঙ্গারবিল, বিষ্ণুপুর ও পাহারপুর ইউনিয়নে বাগানের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
বাগানের মালিক রমজান মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ফলন ভালো হয়েছে। এখন চলছে বেচাকেনা। বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকাররা আসছেন বাগানে। দামদর করে বাগান থেকেই লিচু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তীব্র গরমের কারণে কিছু ফেটে নষ্ট হয়ে গেছে।
![](http://bnpub.banglanews24.com/public/userfiles/images/01-01-2022/14-1/18-5/30-1/22-5/26-5/Phot%20(94).jpg)
ধন মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমার বাগানে ৪২টি গাছ রয়েছে। ফল ধরার সঙ্গে সঙ্গে পরিচর্যা শুরু করেছি। তবে এবার অতিরিক্ত গরমের কারণে দিনে কয়েক বার গাছে পানি দিতে হয়েছে। ফলন ভালো হলেও আকারে কিছুটা ছোট হয়েছে লিচু। প্রতিদিনই ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার লিচু বিক্রি করছি।
বাগানের মালিক আনোয়ার মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, বোম্বাই, পাটনা ও চায়না-থ্রিসহ তিন জাতের লিচু আবাদ করেছি। আশা করছি, এবার চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা লাভ হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা বাংলানিউজকে বলেন, নয়টি উপজেলার মধ্যে সীমান্তবর্তী তিনটি উপজেলায় লিচুর আবাদ হয় বেশি। এখানকার মাটি ভালো হওয়াই প্রতি বছর বাড়ছে বাগানের সংখ্যা। মৌসুমের শুরুতেই কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাপমাত্রার কারণে লিচু কিছুটা ছোট হয়েছে। কৃষকদের নিয়মিত সেচের পরামর্শ দিয়েছি। চলতি মৌসুমে জেলায় ২৮০০ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদিত হবে। যার বাজার মূল্য পায় ৩০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২৩
এসআই