ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

অসময়ে তরমুজ চাষ, আড়াই মাসে মিলবে ফলন

মুশফিক সৌরভ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২৩
অসময়ে তরমুজ চাষ, আড়াই মাসে মিলবে ফলন

বরিশাল: মৌসুম নয়, তারপরও বরিশালের রহমতপুর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে ভাসমান বেডে বেড়ে ওঠা গাছে ঝুলছে পরিপক্ব তরমুজ। যা বিগত দুই বছর ধরে বারি তরমুজ-১ ও বারি তরমুজ-২ চাষে গবেষণার সাফল্য।

আর স্বল্প পরিসরে পানির ওপর ভাসমান বেডে বিষমুক্ত তরমুজ চাষে সফলতা পাওয়ার পর কৃষকদেরও উদ্বুদ্ধ করছেন কৃষিবিদরা। গবেষকরা মনে করছেন, বাণিজ্যিকভাবে এই জাতের তরমুজ চাষ হলে কৃষকরা লাভবান হবেন।

কৃষি গবেষণা কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, এই তরমুজ চাষের উপযুক্ত সময় জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাস।  মৌসুম ছাড়া সময়ে জলাশয়ে ভাসমান কচুরিপানার বেডে এ তরমুজ চাষ করা যায়। কম পরিশ্রমে আশানুরূপ ফলন পাওয়া যায়। বেশি সার প্রয়োগ করতে হয় না। এ পদ্ধতিতে তরমুজ চাষে রোগ বালাই যেমন কম, তেমনি পোকার উপদ্রবও কম।

দেখা যায়, বরিশালের রহমতপুর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের পুকুর বা জলাশয়ে কচুরিপানা দিয়ে বানানো ভাসমান বেডে এই তরমুজের চাষ করা হয়েছে। যেখানে তরমুজ গাছের লতাগুলোকে বেড়ে ওঠার জন্য বাঁশ দিয়ে মাচাও তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। আর সেই মাচাতেই ঝুলছে সবুজ-ডোরাকাটা রসালো তরমুজ। প্রথম কেউ দেখলে বিশ্বাস করবে না এভাবে তরমুজ চাষ হচ্ছে, আবার দূর থেকে দেখলে মাচায় ঝোলা তরমুজগুলো লাউও মনে হতে পারে।

আঞ্চলিক এই কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, বারি তরমুজ-১ ও বারি তরমুজ-২ এর পরীক্ষামূলক চাষে আমরা সফল হয়েছি। জমিতে চাষ না করে ভাসমান বেডে চাষ হওয়ায় চাষিদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা কৃষকদের মধ্যে এই তরমুজ চাষ ছড়িয়ে দিতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।

আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মাহবুবুর রহমান তালুকদার বলেন, মৌসুম ছাড়া অসময়ের এই তরমুজ চাষের উদ্ভাবনে এটা আমাদের সফলতা। বীজ বপনের আড়াই থেকে ৩ মাসের মধ্যেই এই তরমুজ বিক্রয় উপযোগী হয়ে উঠে। আর এই তরমুজ চাষে কোনো সার প্রয়োগ করতে হয় না। এই তরমুজ বিষমুক্ত হওয়ার পাশাপাশি সুষম পুষ্টিগুণও রয়েছে।

আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের ভাসমান কৃষি প্রকল্পের পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বলেন, দক্ষিণাঞ্চলে আমরাই প্রথম ভাসমান বেডে অসময়ে বারি জাতের তরমুজ চাষ নিয়ে গবেষণা করেছি। ২ বছর গবেষণার পর পরীক্ষামূলক চাষের মাধ্যমে আমরা সফল হয়েছি।

তিনি আরও বলেন, দক্ষিণাঞ্চলে অনেক ডোবা নালা রয়েছে, যেখানে এই প্রযুক্তিতে তরমুজ চাষ করে কৃষকরা লাভবান হতে পারেন। রোপণের আড়াই থেকে তিন মাসের মধ্যেই তরমুজ বিক্রি করা যায়।

কৃষিবিদরা মনে করছেন, অসময়ের এই নতুন জাতের তরমুজ চাষে সফলতা অর্জন করতে পারলে ভালো দামে বিক্রি করে লাভবান হবেন চাষিরা।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০২৩
এমএস/এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।