ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

সরকারিভাবে ধান কেনা

কৃষকের তালিকা তৈরিই শেষ হয়নি বগুড়ায়!

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪২ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৬
 কৃষকের তালিকা তৈরিই শেষ হয়নি বগুড়ায়! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বগুড়া: সরকারিভাবে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা শুরু হয়েছে বগুড়ায়। সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে একমাস।

তবে প্রয়োজনে পরবর্তীতে চালের পাশাপাশি ধান কেনা অব্যাহত রাখা হতে পারে -এমনটাও বলা হচ্ছে।

তবে এ কার্যক্রম উদ্বোধন হয়ে গেলেও বেশিরভাগ উপজেলায় এখনও কৃষকদের তালিকা প্রণয়নের কাজই শেষ হয়নি। কাজের গতি অত্যন্ত স্লথ। অথচ বেঁধে দেওয়া সময়ের সিংহভাগ ইতোমধ্যেই পার হয়ে গেছে।
 
আর তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত না হওয়ার কারণে প্রস্তুতি থাকার পরও কৃষকরা সরকারি গুদামে ধান দিতে পারছেন না। ফলে নির্ধারিত সময়ে কৃষকের দেওয়া ধানে এ জেলার টার্গেট পূরণ হবে কি-না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ-সংশয় দেখা দিয়েছে।
 
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলায় কৃষকদের কাছ থেকে ২৩টি লোকাল সাপ্লাই ডিপো (এলএসডি) বা স্থানীয় খাদ্য সরবরাহ কেন্দ্র ও ১টি সেন্ট্রাল স্টোরেজ ডিপো (সিএসডি) বা কেন্দ্রীয় খাদ্য সংরক্ষণাগারে সর্বমোট ৪০ হাজার ৬১৪ মেট্রিক টন ধান কেনা হবে। গত ৫ মে থেকে শুরু হয়ে আগামী ৬ জুন পর্যন্ত এসব গুদামে স্ব স্ব উপজেলা প্রশাসনের প্রণয়ন করা তালিকাভুক্ত কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার কথা।
 
সূত্রটি জানায়, চলতি বোরো মৌসুমে ২৩ টাকা কেজি দরে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা হবে। সে মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলার সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
 
নির্দেশনা অনুসারে সংশ্লিষ্ট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) সভাপতি ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে সদস্য সচিব করে কৃষকদের নামের তালিকা প্রণয়নের জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিতে উপজেলা কৃষি অধিদফতরের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ রয়েছেন।
 
এ কমিটি কৃষক তালিকা ও কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে কৃষকদের শনাক্ত করে নামের তালিকা প্রণয়ন করে স্ব স্ব গুদামের খাদ্য কর্মকর্তার বরাবর পাঠাবেন। আর সে তালিকাভুক্ত কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত জেলার অধিকাংশ কমিটি কৃষকদের তালিকা প্রণয়ন করে খাদ্য গুদামগুলোতে পৌঁছাতে পারেনি বলে জানা গেছে।
 
আবুল হোসেন, মোহাম্মদ আলী, মতিউর রহমানসহ একাধিক কৃষক বাংলানিউজকে বলেন, এখনও আমাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। আগামী দিনেও হবে না।
 
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক আব্দুর রহিম কৃষকের নামের তালিকা প্রণয়নে গঠিত কয়েকটি উপজেলা কমিটি সঠিক সময়ে কাজ শুরু করতে পারেনি বলে স্বীকার করেন। যে কারণে তালিকা প্রণয়নে দেরি হচ্ছে। তবে এতে সরকারিভাবে ধান কেনা কার্যক্রমে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না বলে কৃষি বিভাগের এই কর্মকর্তা দাবি করেন।
 
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জামাল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, কৃষকদের নামের তালিকা প্রণয়নের কাজ বেশ জোরেশোরেই চলছে। বেশ কিছু জায়গায় তালিকা পাওয়া গেছে। আবার অনেক জায়গা থেকে তালিকা আসা শুরু হয়েছে। স্বল্প সংখ্যক হলেও প্রাপ্ত তালিকা অনুসারে কৃষকদের কাছ থেকে জেলার বেশ কয়েকটি খাদ্যগুদামে ধান কেনা শুরু করা হয়েছে। তবে বরাদ্দকৃত ধানের বিপরীতে কৃষকদের নামের তালিকা পেতে কতোদিন সময় লাগবে এ ব্যাপারে তিনি কোনো সঠিক উত্তর দিতে পারেননি।
 
অপর এক প্রশ্নের জবাবে খাদ্য বিভাগের এই কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, নির্ধারিত সময় পার হলেও চালের পাশাপাশি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা হবে। তবে বর্তমানে আবহাওয়া অনূকুলে না থাকায় গুণগত মান বজায় রেখে ধান কেনা যাচ্ছে না। এটাও একটা সমস্যা বলে এই কর্মকর্তা দাবি করেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০৪২ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০১৬
এমবিএইচ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।