ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

আউশের ক্ষতি আমনে পুষিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় চাষিদের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৭
আউশের ক্ষতি আমনে পুষিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় চাষিদের আউশের ক্ষতি আমনে পুষিয়ে নেবেন কৃষকেরা: ছবি বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: অতিবৃষ্টি ও বন্যায় বোরো ধান নষ্ট হওয়ার পর আউশে মনোযোগী হয়েছিলেন কৃষকরা। তবে আউশেরও ফলন ভালো হয়নি। এখন চলতি আমন মৌসুমে বাম্পার ফসল ফলিয়ে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কোমর বেধে মাঠে নেমেছেন সংগ্রামী চাষিরা।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, মৌলভীবাজার জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় দুই হাজার হেক্টর কম জমিতে আউশ ধানের উৎপাদন হয়েছে। তবে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা আউশের দ্বিগুণের চেয়েও বেশি ধরা হয়েছে।

আবার সরকার আগামী বোরো মৌসুমেও কৃষকদের মাঝে সার-বীজ ও নগদ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে কৃষকদের তালিকা করা হয়েছে।

বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, আউশ ধান কাটা কম-বেশি শেষ হয়ে গেছে। যেসব জমিতে পরে চারা লাগানো হয়েছিল, সেখানে এখনো কাটা চলছে।   কৃষকরা বলছেন, কোথাও কোথাও অতিবৃষ্টিতে ধানে শাস কম হয়েছে, অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি জমে পচে গেছে। তাই এবার ভালো ফলন পাওয়া যাবে না।

আউশ ধান চাষে এবার কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৬ হাজার ৩৩৭ হেক্টর জমিতে। কিন্তু বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে ১ হাজার ৭০৭ হেক্টর জমিতে চাষ করা সম্ভব হয়নি। আমনে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত রয়েছে ১ লাখ ৩০৬ হেক্টর জমি। এপর্যন্ত রোপন করা হয়েছে ৫৮ হাজার ৫৪৭ হেক্টর জমিতে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশা কৃষি বিভাগ ও চাষিদের।

সরেজমিনেও দেখা গেছে, জমি তৈরি শেষে চলছে আমনের চারা রোপন। সবুজে ভরে যাচ্ছে অবারিত মাঠ। কোথাও কোথাও কচি ধানের পোকা নির্মূলে কীটনাশক ছিটাচ্ছেন কৃষকরা।

কৃষক আব্দুল মতলিব বাংলানিউজকে বলেন, অতিবৃষ্টিতে সঠিক সময়ে আউশ ধানের বীজ রোপন করতে না পারায় ফলন কম হয়েছে। ঠিকমতো ধান গাছে শাস আসেনি।

আউশের ক্ষতি আমনে পুষিয়ে নেওয়াকৃষক টিক্কা রেলী বলেন, ‘সামান্য জমিতে চাষ করে পরিবার-পরিজন নিয়ে কোনোমতে পেট চালাই। অথচ অতিবৃষ্টিতে অনেক ধান গাছ হেলে পড়ে পচে গেছে। যেখানে ১৬-১৭ মণ ধান পাওয়ার কথা, সেখানে ৮ মণও পাবো কি-না- সন্দেহ রয়েছে’।

কৃষক চান মিয়া বলেন, ‘আউশের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আমনের চাষ করছি। এখন সেগুলোই আমার স্বপ্ন’।

কৃষক কুদরত উল্যা বলেন, হাওরাঞ্চলের মানুষ ছাড়া কেউ ব্যাপক হারে বোরো ফসল ফলান না। আউশেও ধান ভালো হয়নি। সরকার যদি আমনে বীজ-সার দিতো, তবে কিছুটা হলেও উপকারে আসতো।

জেলা কৃষি প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফর উদ্দিন জানান, প্রতিদিন বাড়ি বাড়ি গিয়ে উঠোন বৈঠকের মাধ্যমে ভালো প্রযুক্তি ব্যবহার করে আরও বেশি হারে ধান চাষে কৃষকদেরকে উদ্বুদ্ধ করছেন তারা।

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. শাহজাহান জানান, বন্যা ও অতিবৃষ্টির ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা দ্বিগুণ রাখা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে তিনি আশাবাদী।

সরকার আগামী বোরো মৌসুমে কৃষকদেরকে সার-বীজ ও নগদ টাকা দেবে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৭
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।